আফগানিস্তান সীমান্ত লাগোয়া চিত্রাল জেলার দখল নিয়ে তেহরিক-ই-তালিবান যোদ্ধারা। ছবি: টুইটার।
রক্তক্ষয়ী লড়াই শুরু হয়েছিল এক সপ্তাহ আগেই। শেষ পর্যন্ত পাক সেনার প্রতিরোধ গুঁড়িয়ে মঙ্গলবার আফগানিস্তান সীমান্ত লাগোয়া চিত্রাল জেলার দখল নিয়ে তেহরিক-ই-তালিবান যোদ্ধারা। খাইবার-পাখতুনখোয়া প্রদেশের ওই গুরুত্বপূর্ণ জেলার সদরও এখন তাদের নিয়ন্ত্রণে। এর পাশাপাশি মঙ্গলবার আফগান সীমান্তে পাক আধাসেনা ‘ফ্রন্টিয়ার কোর’ বাহিনীর কনভয়েও হামলা চালিয়েছে টিটিপি বিদ্রোহীরা।
গত শুক্রবার টিটিপি মুখপাত্র মহম্মদ খুরাসানি পাক সেনার বিরুদ্ধে অভিযান শুরুর কথা জানিয়ে সীমান্ত এলাকার বাসিন্দাদের কাছে আতঙ্কিত না হওয়ার আবেদন করেছিলেন। তিনি দাবি করেন, এই লড়াই পাক সেনার বিরুদ্ধে, সরকারের বিরুদ্ধে। সাধারণ মানুষের কোনও ক্ষতি করা হবে না। প্রসঙ্গত, পাক সরকারের সঙ্গে শান্তি আলোচনা ভেস্তে যাওয়ার পরে নভেম্বরে ইসলামাবাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেছিল টিটিপি। বিদ্রোহী ওই পাশতুন গোষ্ঠীর অভিযোগ ছিল, সংঘর্ষবিরতি ভেঙে পাক সেনা গোপন অভিযান শুরু করার ফলেই অশান্তি ছড়িয়েছে খাইবার পাখতুনখোয়া প্রদেশে।
ডিসেম্বরে অভিযান চালিয়ে টিটিপির ঘাঁটি বান্নু জেলা দখল করে পাক সেনা। তার পর থেকে ধারাবাহিক ভাবে দু’তরফের লড়াই চলছে। এমনকি, আফগানিস্তানের তালিবান বাহিনীর সঙ্গেও সীমান্ত সংঘর্ষে জড়িয়েছে পাক সেনা। আফগানিস্তানের তালিবান সরকারের প্রতিরক্ষামন্ত্রী মোল্লা ইয়াকুবের অনুগত বাহিনী টিটিপি বিদ্রোহীদের মদত দিচ্ছে বলে অভিযোগ। এরই মধ্যে মঙ্গলবার পাক বিদেশমন্ত্রক আফগানিস্তানের তালিবান সেনার বিরুদ্ধে তোরখাম সীমান্তে দ্বিপাক্ষিক সমঝোতা ভেঙে বেআইনি নির্মাণের অভিযোগ তুলেছে।
আমেরিকায় ড্রোন হামলায় নিহত জঙ্গিনেতা বায়তুল্লা মেহসুদ প্রতিষ্ঠিত টিটিপি গোষ্ঠী বরাবরই পাক সরকারের বিরোধী। ২০১৪ সালে পেশোয়ারের একটি স্কুলে হামলা চালিয়ে শতাধিক পড়ুয়াকে খুন করেছিল টিটিপি জঙ্গিরা। গত দেড় দশকে একাধিক অভিযান চালিয়েও তাদের বাগে আনতে পারেনি পাক সেনা। ২০০৯ সালে টিটিপি-র বিরুদ্ধে ‘অপারেশন রাহ-ই-নিজত’ চালিয়েছিল পাক সেনা। পাকিস্তানের ইতিহাসে এখনও পর্যন্ত সেটিই সবচেয়ে বড় সন্ত্রাসবিরোধী অভিযান।