হাফিজ সঈদ। —ফাইল চিত্র।
ভারতের আবেদন সত্ত্বেও ২৬/১১ মুম্বই হামলার মূলচক্রী তথা জঙ্গিগোষ্ঠী লস্কর-ই-তইবার প্রতিষ্ঠাতা হাফিজ মহম্মদ সঈদকে নয়াদিল্লির হাতে তুলে দিতে চায় না পাকিস্তান। তবে এই বিষয়ে তাদের ‘সদিচ্ছা’ থাকলেও কোথায় প্রতিবন্ধকতা রয়েছে, তা-ও ব্যাখ্যা করেছে ইসলামাবাদ। পাক বিদেশ মন্ত্রকের তরফে জানানো হয়েছে, ভারত এবং পাকিস্তানের মধ্যে কোনও বন্দি প্রত্যর্পণ সংক্রান্ত চুক্তি নেই। তাই পাকিস্তানের জেলে বন্দি হাফিজকে ভারতের হাতে তুলে দিতে পারে না তারা।
শুক্রবার পাক বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র মুমতাজ় জ়াহরা বালোচ বলেন, “পাকিস্তান ভারত সরকারের তরফে একটি অনুরোধ বার্তা পেয়েছে। একটি তথাকথিত অর্থ তছরুপের মামলায় বিচারের জন্য হাফিজ সইদকে সে দেশে পাঠানোর আবেদন করা হয়েছে।” তার পরেই ওই মুখপাত্র বলেন, “কিন্তু মনে রাখা জরুরি যে, ভারত আর পাকিস্তানের মধ্যে কোনও বন্দি প্রত্যর্পণ চুক্তি নেই। আন্তর্জাতিক রাজনীতির বিশেষজ্ঞদের একাংশ মনে করছেন, এই যুক্তি খাড়া করে আদতে হাফিজকে ‘রক্ষা’ করতে চাইছে পাকিস্তান।
তবে আবেদনের প্রেক্ষিতে পাকিস্তান যে এমন একটি যুক্তি খাড়া করতে পারে, এমন সম্ভাবনা নিয়ে আগেই চর্চা শুরু হয়েছিল। শুক্রবারই ভারতের বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র অরিন্দম বাগচী তাঁর সাপ্তাহিক সাংবাদিক বৈঠকে জানিয়েছিলেন, একাধিক মামলায় হাফিজকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে চায় ভারত। হাফিজের নাম যে রাষ্ট্রপুঞ্জের ‘সন্ত্রাসবাদী’দের তালিকায় রয়েছে, সে কথাও স্মরণ করিয়ে দেন তিনি। বিদেশ মন্ত্রকের তরফে জানানো হয়, প্রয়োজনীয় তথ্যপ্রমাণ দিয়ে সুনির্দিষ্ট কিছু মামলায় তদন্তকারীদের মুখোমুখি হওয়ার জন্য হাফিজকে ভারতে চেয়ে পাঠানো হয়েছে।
সন্ত্রাসে আর্থিক মদতের অভিযোগে পাক আদালত ১১ বছরের জেলের সাজা দিলেও হাফিজ এখন কোথায়, তা স্পষ্ট নয়। তিনি এখন পাক গুপ্তচর সংস্থা আইএসআই-এর গোপন ডেরায় রয়েছেন বলে বিভিন্ন সূত্রের দাবি। তাই ২০০৮ সালের মুম্বই হামলার ‘মাস্টারমাইন্ড’কে হাতে পাওয়া ভারতের পক্ষে কার্যত অসম্ভব বলেই মনে করা হচ্ছে। অন্য দিকে, সঈদের ‘সমর্থিত’ দল ‘পাকিস্তান মারকাজি মুসলিম লিগ’ (পিএমএমএল) লড়তে নেমেছে সে দেশের আসন্ন পার্লামেন্ট এবং প্রভিন্সিয়াল অ্যাসেম্বলি (প্রাদেশিক আইনসভা)-র নির্বাচনে। আগামী ৮ ফেব্রুয়ারি পাক পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষ ন্যাশনাল অ্যাসেম্বলির পাশাপাশি প্রাদেশিক আইনসভাগুলিরও ভোট।