India-Maldives Row

মলদ্বীপের প্রেসিডেন্ট পদ থেকে মুইজ্জুকে সরানোর তৎপরতা শুরু? বিরোধী নেতৃত্ব ভারতেরই পাশে

গত সেপ্টেম্বরে মলদ্বীপের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ‘চিনপন্থী’ নেতা মহম্মদ মুইজ্জু জেতার পর থেকেই ভারতের বিরুদ্ধে একের পর সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন। যা নিয়ে নয়াদিল্লি-মালে টানাপড়েন তৈরি হয়েছে।

Advertisement
আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
কলকাতা শেষ আপডেট: ১০ জানুয়ারি ২০২৪ ১৬:০২
মহম্মদ মুইজ্জু এবং ইব্রাহিম সোলি।

মহম্মদ মুইজ্জু এবং ইব্রাহিম সোলি। — ফাইল চিত্র।

ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী সম্পর্কে অবমাননাকর মন্তব্যের জেরে তিন মন্ত্রীকে সাসপেন্ড করেছেন মলদ্বীপের প্রেসিডেন্ট মহম্মদ মুইজ্জু। কিন্তু তাতে বিতর্ক ধামাচাপা পড়েনি। বরং সে দেশের বিরোধী নেতাদের সম্মিলিত নিশানার মুখে পড়েছেন চিনপন্থী মুইজ্জু। এমনকি, তাঁকে বরখাস্ত করার জন্য পার্লামেন্টে বিরোধী নেতৃত্ব আনুষ্ঠানিক প্রস্তাব আনতে পারেন বলেও শোনা গিয়েছে।

Advertisement

গত সপ্তাহে মুইজ্জু সরকারের তিন মন্ত্রীর বিতর্কিত মন্তব্যের পরেই মলদ্বীপের প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট তথা ডেমোক্র্যাটিক পার্টির নেতা ইব্রাহিম সোলি (যাঁকে ভোটে পরাজিত করে মুইজ্জু ২০২৩ ক্ষমতায় এসেছেন) তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছিলেন। আর এক প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট মহম্মদ নাসিদও প্রতিবাদ করেছিলেন মোদী অবমাননার। মঙ্গলবার ডেমোক্র্যাটিক পার্টির চেয়ারম্যান ফয়াজ় ইসমাইল প্রকাশ্যে ‘পিপল্‌স ন্যাশনাল কংগ্রেস’-এর নেতা মুইজ্জুকে দুষে ভারতের সঙ্গে ‘সম্পর্কের ক্ষত’ মেরামতের ডাক দিয়েছেন।

ঘটনাচক্রে, প্রেসিডেন্ট মুইজ্জু সোমবার থেকে পাঁচ দিনের চিন সফরে গিয়েছেন। তারই মধ্যে রাজনৈতিক উত্তেজনার পারদ চড়তে শুরু করেছে। মলদ্বীপের প্রাক্তন প্রতিরক্ষামন্ত্রী মারিয়া আহমেদ দিদি সরাসরি মালে-নয়াদিল্লি সম্পর্ক নষ্ট করার অভিযোগ তুলেছেন মুইজ্জুর বিরুদ্ধে। তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে মুইজ্জুর দল ‘পিপল্‌স ন্যাশনাল কংগ্রেস’-এর নেতাদেরও তাঁর সমর্থনে মুখ খুলতে দেখা যাচ্ছে না তেমন।

তিন মন্ত্রীর মোদী-বিরোধী মন্তব্যের পরেই সোমবার মলদ্বীপের পার্লামেন্টের বিরোধী নেতা আলি আজ়িম নিজের এক্স হ্যান্ডলে লেখেন, “আমরা চাই দেশের বিদেশনীতিতে স্থিতাবস্থা বজায় থাকুক এবং কোনও প্রতিবেশী দেশকে কোণঠাসা করার চেষ্টা বন্ধ হোক।” তার পরই তিনি প্রশ্ন তোলেন যে, প্রেসিডেন্ট পদে থাকার মতো যোগ্যতা মুইজ্জুর রয়েছে কি না। এর পাশাপাশি তিনি প্রেসিডেন্টকে পদচ্যুত করার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি তোলেন। ডেমোক্র্যাটিক দলের আর এক নেতা মিকাইল নাসিম আবার বিদেশমন্ত্রীকে তলব করে কৈফিয়ত চাওয়ার জন্য পার্লামেন্টকে অনুরোধ করেছিলেন।

কূটনৈতিক বিশেষজ্ঞদের একাংশের মতে, গত সেপ্টেম্বরে মলদ্বীপের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ‘চিনপন্থী’ নেতা মুইজ্জু দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকেই ভারতের বিরুদ্ধে একের পর সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন। যা নিয়ে নয়াদিল্লি-মালে টানাপড়েন তৈরি হয়েছে। এই আবহে সম্প্রতি ভারতের কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল লক্ষদ্বীপে গিয়েছিলেন মোদী। সেই সফরের বেশ কিছু ছবি এবং ভিডিয়ো সমাজমাধ্যমে ভাইরাল হয়। অভিযোগ, মলদ্বীপের তিন মন্ত্রী, মরিয়ম শিউনা, মালশা শরিফ এবং মাহজ়ুম মাজিদ কিছু ছবিতে মোদীকে ‘পুতুল’ এবং ‘জোকার’ বলে মন্তব্য করেন। ভারত-ইজ়রায়েল সম্পর্ক নিয়েও আপত্তিকর মন্তব্য করা হয়। পরে অবশ্য বিতর্কের মুখে পোস্টগুলি মুছে দেওয়া হয়। চাপের মুখে রবিবার সাসপেন্ড করা হয় ওই তিন মন্ত্রীকে।

Advertisement
আরও পড়ুন