মুহাম্মদ ইউনূস। —ফাইল চিত্র।
আওয়ামী লীগকে জাতীয় সংসদের আগামী নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতার সুযোগ দেওয়া হবে কি না, সে প্রশ্নের জবাবে ধোঁয়াশা রাখলেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান মুহাম্মদ ইউনূস। ভারতীয় সংবাদপত্র ‘দ্য হিন্দু’কে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, ‘‘কোনও একটি দল বা আর একটি দলকে বেছে নেওয়ার জন্য আমি কোনও রাজনৈতিক ব্যক্তি নই। আমি রাজনীতিকদের আকাঙ্ক্ষাকে বাস্তবে রূপ দিতে সহায়তা করছি।’’
ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকার বাংলাদেশের রাজনীতি থেকে প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দলকে নির্বাসনে পাঠানোর প্রক্রিয়া শুরু করে দিয়েছে ইতিমধ্যেই। এই উদ্দেশ্যে সে দেশের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুনাল আইন সংশোধনের খসড়া প্রকাশিত হয়েছে সোমবার। সংশোধিত আইন অনুযায়ী কোনও রাজনৈতিক দল বা সংগঠন খুন, গুম, নির্যাতনের মতো মানবতাবিরোধী অপরাধে দোষী সাব্যস্ত হলে তাদের স্বীকৃতি স্থগিত বা বাতিল করা যাবে।
সে ক্ষেত্রে তো পরবর্তী নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতার সুযোগ পাবে না। এ প্রসঙ্গে ইউনূস প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী খালেদার দলের ঘোষিত অবস্থানের কথা জানিয়ে বলেন, ‘‘বিএনপি বলেছে সব রাজনৈতিক দল অবশ্যই নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবে। সুতরাং তারা ইতিমধ্যে রায় দিয়ে দিয়েছে। আমরা দেশের একটি প্রধান দলের মতামতকে উপেক্ষা করব না।’ যদিও সোমবারই বাংলাদেশের সংবাদমাধ্যম ‘প্রথম আলো’য় সোমবার প্রকাশিত প্রতিবেদন জানানো হয়েছে, লীগকে নিষিদ্ধ করার বিষয়ে অন্তর্বর্তী সরকার এখন সংশোধনী প্রস্তাবগুলো পর্যালোচনা করছে।
আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করার বিষয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের একাংশের যুক্তি, গত ১৫ জুলাই থেকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালীন আওয়ামী লীগের নেতা–কর্মীরা আন্দোলনরত ছাত্রছাত্রী ও সাধারণ মানুষের উপর ‘উন্মত্ত ও বেপরোয়া সশস্ত্র আক্রমণ’ চালিয়ে শত শত নিরপরাধ শিক্ষার্থী ও ব্যক্তিকে হত্যা করেছে। বেশ কয়েক জনের বিরুদ্ধে আদালত ইতিমধ্যেই চার্জ গঠনের অনুমতি দিয়েছে। দলের সভানেত্রী হাসিনাও সরাসরি খুনের মামলায় অভিযুক্ত। তাই তাদের নিষিদ্ধ করা প্রয়োজন। প্রসঙ্গত, এর আগে গত ২২ অক্টোবর হাসিনার দলের ছাত্র শাখা ছাত্রলীগকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করে ইউনূস সরকারে জানিয়েছিল, ‘সন্ত্রাস বিরোধী আইন, ২০০৯’ অনুযায়ী এই পদক্ষেপ। ওই আইনের তফসিল-২–এ ‘বাংলাদেশ ছাত্রলীগ’ নামের ছাত্র সংগঠনকে নিষিদ্ধ তালিকাভুক্ত করার কথাও বলা হয়েছিল ওই বিজ্ঞপ্তিতে।