Pakistan

দেশভাগের সময় ভারতে রেখে গিয়েছিলেন বাবা-মা, ৭৫ বছর পর পাকিস্তানি বোনের সঙ্গে দেখা হল দাদার

দেশভাগের সময় অমরজিৎ আর তাঁর বোনকে ভারতে রেখেই পাকিস্তানে চলে গিয়েছিলেন মুসলিম বাবা-মা। ৭৫ বছর পর পাকিস্তানের ভিসা নিয়ে কর্তারপুরে আর এক বোনের সঙ্গে দেখা করতে গিয়েছেন তিনি।

Advertisement
সংবাদ সংস্থা
ইসলামাবাদ শেষ আপডেট: ১০ সেপ্টেম্বর ২০২২ ১৮:২২
মুসলিম বোনের সঙ্গে দেখা হল জালন্ধর নিবাসী শিখ দাদার।

মুসলিম বোনের সঙ্গে দেখা হল জালন্ধর নিবাসী শিখ দাদার।

৭৫ বছর আগে দেশভাগের সময় তাঁকে ভারতে রেখেই চলে গিয়েছিলেন বাবা-মা। মাঝে কোনও দেখাসাক্ষাৎ হয়নি। সীমান্তের দু’পারে থাকা আপনজনেরা আদৌ বেঁচে আছেন কি না, তারও খবর পাননি নিজেরা।

অবশেষে বুধবার পাকিস্তানের কর্তারপুরের গুরুদ্বার দরবার সাহিবে পাকিস্তান নিবাসী মুসলিম বোনের সঙ্গে দেখা হল জালন্ধর নিবাসী শিখ দাদার। হুইল চেয়ারে বসা দাদা অমরজিৎ সিংহের চোখে তখন জল। দাদাকে আগলে সান্ত্বনা দিচ্ছেন বোন কুলসুম আখতার। সেই দৃশ্য দেখে চোখে জল উপস্থিত সকলেরই।

Advertisement

দেশভাগের সময় অমরজিৎ আর তাঁর বোনকে ভারতে রেখেই পাকিস্তানে চলে গিয়েছিলেন মুসলিম বাবা-মা। ৭৫ বছর পর পাকিস্তানের ভিসা নিয়ে কর্তারপুরে বোনের সঙ্গে দেখা করতে গিয়েছেন তিনি। আট্টারি-ওয়াগা সীমান্ত দিয়ে ঢুকেছেন সে দেশে। পাকিস্তানের ফিরোজাবাদ থেকে কর্তারপুরে এসেছিলেন ৬৫ বছরের কুলসুম। সঙ্গে ছিলেন তাঁর ছেলে শাহজাদ আহমাদ।

অমরজিতের বাবা-মা ১৯৪৭ সালে পাকিস্তানে চলে আসার পর জন্ম হয় কুলসুমের। জ্ঞান হওয়ার পর থেকেই মায়ের মুখে শুনতেন, ভারতে তাঁর এক দাদা এবং দিদি রয়েছেন। কোনও দিনও ভাবেননি, তাঁদের সঙ্গে দেখা হবে। বছর কয়েক আগে ভারত থেকে কুলসুমের বাবার বন্ধু সর্দার দারা সিংহ পাকিস্তানে এসেছিলেন। তাঁর কাছেই কুলসুমের মা হারানো ছেলে-মেয়ের গল্প করেছিলেন। বলেছিলেন পাড়াওয়ান গ্রামে ফেলে এসেছিলেন দুই শিশুকে।

ভারতে ফিরে সেই গ্রামে গিয়ে অমরজিতের কথা জানতে পারেন দারা সিংহ। ১৯৪৭ সালে তাঁকে দত্তক নিয়ে ওই নাম দেয় এক শিখ পরিবার। দারা এ সব কথা কুলসুমকে হোয়াটসঅ্যাপ করে জানান। তার পরেই অমরজিতের সঙ্গে দেখার করার সিদ্ধান্ত নেন। অমরজিতের সঙ্গে যেই মেয়েকে তাঁদের বাবা-মা ভারতে রেখে গিয়েছিলেন, তিনি আর বেঁচে নেই।

অমরজিৎ যখন প্রথম জানতে পেরেছিলেন, তাঁর জন্মদাতা বাবা-মা আসলে মুসলিম এবং পাকিস্তানে থাকেন, তখন বেশ ভেঙে পড়েছিলেন। পরে যখন জানতে পারেন তাঁর নিজের ভাই-বোনেরা পাকিস্তানে রয়েছেন, তখনই ঠিক করে ফেলেন, জীবনে অন্তত এক বার তাঁদের সঙ্গে দেখা করবেন। সেই সাধই পূরণ হয়েছে প্রবীণ অমরজিতের। এখন ইচ্ছা, এক বার পাকিস্তানে গিয়ে নিজের তিন ভাই এবং বোনের সঙ্গে ক’টা দিন কাটিয়ে আসবেন। কুলসুমকেও আমন্ত্রণ জানিয়ে এসেছেন, অন্তত এক বার ভারতে এসে যেন তাঁর শিখ পরিবারের সঙ্গে সময় কাটিয়ে যান।

আরও পড়ুন
Advertisement