ঢাকা বিমানবন্দরে ভারতের বিদেশ সচিবকে (বাঁ দিকে, কালো কোট পরিহিত) স্বাগত জানাচ্ছেন বাংলাদেশের বিদেশ দফতরের মহাপরিচালক (দক্ষিণ এশিয়া) ইশরাত জাহান। ছবি: সংগৃহীত।
ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্কে টানাপড়েনের আবহেই ঢাকায় ভারতের বিদেশসচিব বিক্রম মিস্রী। সোমবার সকাল সাড়ে ৮টা নাগাদ ঢাকা বিমানবন্দরে অবতরণ করে মিস্রীর বিমান। তাঁকে স্বাগত জানান বাংলাদেশের বিদেশ দফতরের মহাপরিচালক (দক্ষিণ এশিয়া) ইশরাত জাহান।
পূর্ব নির্ধারিত কর্মসূচি অনুযায়ী, সোমবার বেলার দিকে অতিথি নিবাস পদ্মা ভবনে সে দেশের বিদেশসচিব মহম্মদ জসীম উদ্দিনের সঙ্গে একান্ত বৈঠকে বসেন মিস্রী। প্রতিনিধি পর্যায়ের বৈঠকের আগে দুই দেশের বিদেশসচিব একান্তে বৈঠক সারেন। প্রায় ঘণ্টাদুয়েক ধরে চলে বৈঠক। তবে ওই বৈঠকে কোন কোন বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে, তাৎক্ষণিক ভাবে তা জানা যায়নি। ‘প্রথম আলো’ জানিয়েছে, বিকেলে বাংলাদেশের বিদেশসচিব সংবাদমাধ্যমকে বৈঠকের বিষয়ে জানাবেন।
সূচি মোতাবেক, সচিব পর্যায়ের বৈঠক হওয়ার পর মধ্যাহ্নভোজে যোগ দেবেন মিস্রী। তার পর বিকেলে বাংলাদেশের বিদেশ উপদেষ্টা মহম্মদ তৌহিদ হোসেন এবং অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করার কথা রয়েছে তাঁর। সোমবারই দিল্লি ফেরার কথা মিস্রীর।
গত ৫ অগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতন হয়। তার পর এই প্রথম দিল্লি এবং ঢাকার মধ্যে কূটনৈতিক স্তরে বৈঠক হল। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে দুই দেশের মধ্যে কোন কোন বিষয় নিয়ে আলোচনা হল, তা নিয়ে কৌতুহল রয়েছে দু’দেশেই। আগামী দিনে ভারতের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক কেমন চাইছে বাংলাদেশ? রবিবারই তার একটা আভাস দিয়েছেন সে দেশের তদারকি সরকারের বিদেশ উপদেষ্টা তৌহিদ। তাঁর মতে, ৫ অগস্ট (হাসিনার পতন)-এর পর থেকে দু’দেশের সম্পর্কে গুণগত পরিবর্তন হয়েছে। তা মেনে নিয়েই দু’দেশের সম্পর্ককে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে বলে মনে করছেন তিনি। সামগ্রিক এই পরিস্থিতিতে নয়াদিল্লি এবং ঢাকার মধ্যে কূটনৈতিক দূরত্ব কমে কি না, তা-ই এখন দেখার।
হাসিনার পতনের পর সে দেশে অঘোষিত প্রধান রাজনৈতিক দল হিসাবে উঠে এসেছে খালেদা জিয়ার দল বিএনপি। হাসিনার ভারতে সাময়িক আশ্রয় নেওয়া নিয়ে অসন্তোষ রয়েছে তাদের মনে। রবিবার ভারতীয় দূতাবাসে জমা দেওয়া স্মারকলিপিতেও সে কথা জানিয়েছে তারা। তদারকি সরকারের বিভিন্ন উপদেষ্টারাও এ নিয়ে বিভিন্ন সময়ে মন্তব্য করেছেন। তার উপরে, হাসিনার সরকারের পতনের পর থেকে সে দেশে সংখ্যালঘুদের উপর একের পর এক হামলার অভিযোগ উঠে এসেছে। বাংলাদেশে ইসকনকে নিষিদ্ধ করতে আদালতে মামলা করেছে ইউনূসের তদারকি সরকার। যদিও তা খারিজ হয়ে গিয়েছে। সম্প্রতি সন্ন্যাসী চিন্ময়কৃষ্ণ দাসকে রাষ্ট্রদ্রোহের মামলায় গ্রেফতার করে চট্টগ্রাম পুলিশ। সাম্প্রতিক এই ঘটনাগুলিতে ভারত-বাংলাদেশ উভয় প্রান্তেই সাধারণ মানুষের মধ্যে ক্ষোভের সঞ্চার হয়েছে।