গোলের পর বিষ্ণুর উল্লাস। ছবি: সমাজমাধ্যম।
চেন্নাইয়িন এফসি ০
ইস্টবেঙ্গল ২ (বিষ্ণু, জিকসন)
আইএসএলে আবার জিতল ইস্টবেঙ্গল। ঘরের মাঠে আগের ম্যাচে নর্থইস্ট ইউনাইটেডকে হারানোর পর এ বার অ্যাওয়ে ম্যাচে চেন্নাইয়িন এফসি-কে হারাল তারা। পিভি বিষ্ণু এবং জিকসন সিংহের গোলে ২-০ জিতেছে লাল-হলুদ। এ বারের আইএসএলে প্রথম বার পয়েন্ট তালিকায় উঠল ইস্টবেঙ্গল। ৯ ম্যাচে ৭ পয়েন্ট নিয়ে ১৩ নম্বর থেকে তারা উঠে এল ১১ নম্বরে। ইস্টবেঙ্গলের নীচে রয়েছে হায়দরাবাদ এবং মহমেডান। তবে মাঠ থেকে উঠে গিয়েও সাউল ক্রেসপোর হলুদ কার্ড দেখা চিন্তায় রাখবে কোচ অস্কার ব্রুজ়োকে।
বিষ্ণুর গোল এবং প্রভাব
কার্ড সমস্যা নন্দকুমার না থাকায় আগের ম্যাচে বিষ্ণুকে বাঁ দিকের উইংয়ে খেলিয়েছিলেন ব্রুজ়ো। এ দিন নন্দকুমার থাকা সত্ত্বেও তাঁকে রাখেননি প্রথম একাদশে। ভরসা রেখেছিলেন বিষ্ণুর উপরেই। সেই ভরসা রেখেছেন কেরলের ফুটবলার। সাউল ক্রেসপোর উদ্দেশে নাওরেম মহেশের পাস অনুসরণ করে তিনি চেন্নাইয়িনের গোলের সামনে চলে এসেছিলেন। ক্রেসপোর বাড়ানো পাস থেকে মহম্মদ নওয়াজের ভুল কাজে লাগিয়ে গোল করতে সমস্যা হয়নি। শুধু তাই নয়, বাঁ দিকে উইংয়ে যে ভাবে খেললেন তা প্রশংসনীয়। বার বার আক্রমণে ওঠা, পাস বাড়ানো, বিপক্ষের রক্ষণকে ব্যস্ত রাখা— যে কারণে তাঁকে প্রথম একাদশে রাখা হয়েছিল প্রতিটিই দায়িত্ব নিয়ে পালন করেছেন।
ক্রেসপোর চোট এবং হলুদ কার্ড
বিষ্ণুকে গোলের পাস বাড়ানোর পরেই উঠে যেতে হয় ক্রেসপোকে। পাস বাড়ানোর সময় কোনও ভাবে পা মুচড়ে পড়ে গিয়েছিলেন। তাঁকে স্ট্রেচারে করে মাঠ থেকে বার করা হয়। তবে এর পরে যেটা করলেন স্পেনীয় ফুটবলার তা হতাশাজনক। তিনটি হলুদ কার্ড আগে থেকেই ছিল তাঁর। রিজ়ার্ভ বেঞ্চে বসে থাকার সময় অসন্তোষ দেখিয়ে আরও একটি হলুদ কার্ড দেখলেন। ফলে পরের ওড়িশা ম্যাচে পাওয়া যাবে না তাঁকে। মাঠ থেকে বেরিয়ে যাওয়ার পরেও এ ভাবে হলুদ কার্ড দেখা কোনও ভাবেই মানা যায় না। নিশ্চিত ভাবেই ম্যাচের পর ব্রুজ়োর কড়া কথার মুখোমুখি হতে হবে তাঁকে।
শেষ ১৫ মিনিটে ইস্টবেঙ্গলের ঝড়
গোল পাওয়ার পরেও ইস্টবেঙ্গলের খেলা দেখে মনে হচ্ছিল না গোল ধরে রাখতে পারবে তারা। তবে দিমিত্রিয়স দিয়ামানতাকোস উঠে ক্লেটন সিলভা নামতেই ইস্টবেঙ্গলের খেলা বদলে গেল। সঙ্গ দিলেন নন্দকুমার। তখন চেন্নাইয়িনের অর্ধে একের পর এক আক্রমণ করতে শুরু করে ইস্টবেঙ্গল। ক্লেটন নিজেই দু’টি সহজ সুযোগ নষ্ট করেছেন। তবে কিছুটা সতেজ ফুটবল খেলে ক্লেটন বুঝিয়ে দিয়েছেন পুরনো চাল ভাতে বাড়ে। জানুয়ারি ট্রান্সফার উইন্ডোয় তাঁর বদলে ব্রাজিলের রবসনকে আনার চেষ্টা চলছে। তবে এ দিনের পারফরম্যান্স ক্লেটনকে কিছুটা হলেও ভরসা দেবে।
বল নিয়ন্ত্রণে রাখতে না পারা
প্রথমার্ধে ইস্টবেঙ্গল গোলের সুযোগ তৈরি করেছে খুবই কম। তার কারণও রয়েছে। ফাইনাল থার্ডে বলই নিয়ে যেতে পারছিল না তারা। দিয়ামানতাকোসের কাছে সে ভাবে বল পৌঁছতে পারেনি। তার একটা কারণ মাঝমাঠে মাদিহ তালালকে ঘিরে রাখা। ফরাসি মিডফিল্ডারকে ঘিরে রেখেছিলেন চেন্নাইয়ের ফুটবলারেরা। সেই বাধা পেরিয়ে খুব বেশি সামনে এগোতে পারেননি তিনি। ফলে খেলা মূলত আটকে থাকে মাঝমাঠেই। তা ছাড়া, ইস্টবেঙ্গলের ফুটবলারেরা বেশি ক্ষণ বল পায়ে রাখতেও পারছিলেন না। প্রচুর মিস্ পাস হয়েছে।
শিল্ডসকে আটকে রাখল ইস্টবেঙ্গল
লাল-হলুদের যেমন তালাল, তেমনই চেন্নাইয়িনের আক্রমণ তৈরি করার ক্ষেত্রে ভূমিকা নেন কোনর শিল্ডস। এ দিন তাঁকে আটকে রেখেছিলেন শৌভিক চক্রবর্তী। সামনে থাকা ড্যানিয়েল চিমাচুকুকে খুব বেশি বল বাড়াতে পারেননি শিল্ডস। আগের ম্যাচে মোহনবাগানকে বেশ বিপদে ফেলেছিলেন এই শিল্ডস। এ দিন বার দুয়েক ভাল বল বাড়িয়েছিলেন চিমাকে। তবে তিনি সেটা কাজে লাগাতে পারেননি। বাকি সময়টা ইস্টবেঙ্গলের ফুটবলারকে কড়া মার্কিংয়ে রাখলেন শিল্ডসকে।
(ভ্রম সংশোধন: এই প্রতিবেদন প্রথম প্রকাশের সময় লেখা হয়েছিল ইস্টবেঙ্গল পয়েন্ট তালিকায় ১২ নম্বরে উঠে এসেছে। আসলে ইস্টবেঙ্গল উঠে এসেছে ১১ নম্বরে। অনিচ্ছাকৃত ভুলের জন্য আমরা দুঃখিত এবং ক্ষমাপ্রার্থী)