ঢাকার অন্তর্বর্তী সরকারকে কড়া বার্তা দিল সাউথ ব্লক। —প্রতীকী চিত্র।
ছ'দিনের মধ্যে দু'বার সীমান্ত নিরাপত্তা নিয়ে ঢাকার অন্তর্বর্তী সরকারকে কড়া বার্তা দিল সাউথ ব্লক। পশ্চিমবঙ্গের সঙ্গে বাংলাদেশের সীমান্তে নিরাপত্তা সংক্রান্ত উদ্বেগ নিয়ে প্রশ্ন করা হলে বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল আজ বলেন, “আমরা এ ব্যাপারে আমাদের অবস্থান ইতিমধ্যেই স্পষ্ট করেছি। বিশদে জানাতে আমরা নয়াদিল্লিতে বাংলাদেশের কার্যনির্বাহী হাই কমিশনারকে তলব করেছিলাম। আজ সেই অবস্থানেরই পুনরাবৃত্তি করছি। বাংলাদেশের সঙ্গে অপরাধমুক্ত সীমান্ত তৈরি করার প্রশ্নে আমরা দায়বদ্ধ। সে ক্ষেত্রে আন্তঃসীমান্ত অপরাধমূলক কার্যকলাপ, চোরাচালান, মানুষ পাচারের মতো বিষয় যাতে বন্ধ করা যায় তার চেষ্টা করতে হবে। সীমান্তে কাঁটাতার দেওয়া, পর্যাপ্ত আলোর ব্যবস্থা করা, প্রযুক্তির সাহায্য নেওয়ার প্রয়োজন রয়েছে। ভারত আশা করে, প্রতিটি বিষয়কে বাংলাদেশ বাস্তবায়িত করবে।”
এর আগে ভারতের রাষ্ট্রদূত প্রণয় বর্মাকে ডেকে ঢাকা সীমান্ত পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছিল। বাংলাদেশের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের উপদেষ্টা জানিয়েছিলেন, তিনবিঘা করিডর, লালমনির হাট, চাঁপাইনাবাবগঞ্জ-সহ ৫টি জায়গায় কাঁটাতারের বেড়া দেওয়া নিয়ে দ্বন্দ্ব রয়েছে। প্রণয় বর্মা বলেছিলেন, নয়াদিল্লি ও ঢাকা ‘নিরাপত্তা বজায় রাখতে সীমান্তে বেড়ার বিষয়ে একটি বোঝাপড়ার মধ্যে রয়েছে’। তিনি জানান, বিজিবি ও বিএসএফ এই নিয়ে কথা বলছে।
বাংলাদেশে ভোট নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলির সক্রিয়তা প্রসঙ্গে জানতে চাওয়া হলে সামান্য ঘুরিয়ে বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র বলেছেন, ভারত চায় বাংলাদেশের মানুষের সঙ্গে ইতিবাচক ভাবে সার্বভৌম সম্পর্ক বজায় রাখতে। তাঁর কথায়, “বিদেশসচিব বিক্রম মিস্রীর ঢাকা সফরের পরে আমরা বলেছিলাম, বাংলাদেশের সঙ্গে ইতিবাচক সম্পর্ক চাই। জনগণের সঙ্গে সার্বভৌম সম্পর্ক চাই। আমরা চাই আমাদের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক দু'দেশের মানুষের জন্য উপকারী হয়ে উঠুক।” কূটনৈতিক শিবিরের মতে, বাংলাদেশে অন্তর্বর্তী অস্থায়ী সরকার আসার পরে গত কয়েক মাস বিদেশ মন্ত্রক বাংলাদেশের মানুষকে অগ্রাধিকার দিয়ে তাদের কূটনৈতিক বার্তা ও কথা চালাচ্ছে। বিশেষজ্ঞদের মতে তার প্রথম কারণ, বাংলাদেশের মাটিতে তৈরি হওয়া ভারত-বিদ্বেষকে প্রশমনের চেষ্টা করা। এটা বোঝানো যে, সে দেশের মানুষের পাশে রয়েছে নয়াদিল্লি, বিরুদ্ধে নয়। দ্বিতীয়ত, এই সরকার যে স্থায়ী সরকার নয়, নিতান্তই অন্তর্বর্তী ব্যবস্থা— সেই ইঙ্গিতও দেওয়া।