আত্মহত্যায় প্ররোচনার মামলার ক্ষেত্রে তদন্তকারীদের আরও সতর্ক থাকতে বলল সুপ্রিম কোর্ট। — প্রতীকী চিত্র।
কারও বিরুদ্ধে আত্মহত্যায় প্ররোচনার মামলা দায়ের করার ক্ষেত্রে বিষয়টি সংবেদনশীলতার সঙ্গে দেখা প্রয়োজন। শুক্রবার এ কথা জানিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। শীর্ষ আদালত জানিয়েছে, কেবলমাত্র মৃতের শোকার্ত পরিবারের যন্ত্রণাকে প্রশমিত করার জন্য আত্মহত্যায় প্ররোচনার মামলা দায়ের করা উচিত নয়। এই ধরনের মামলায় সম্পূর্ণ অযৌক্তিক কারণে যাতে কেউ আইনের অপব্যবহারের শিকার না হন, সে দিকেও তদন্তকারী সংস্থাগুলিকে নজর দিতে বলেছে সুপ্রিম কোর্ট। আদালতের মতে, তদন্তকারী সংস্থারগুলির এ বিষয়ে আরও সতর্কতা অবলম্বন করা উচিত। এ সব ক্ষেত্রে তদন্তকারীদের ‘গা বাঁচিয়ে চলা’ কাম্য নয় বলেও জানিয়েছে শীর্ষ আদালত।
মধ্যপ্রদেশের এই ঘটনায় অভিযুক্তের বিরুদ্ধে আত্মহত্যায় প্ররোচনার মামলা দায়ের করেছিল পুলিশ। মৃতের আত্মহত্যার পর একটি ‘সুইসাইড নোট’ উদ্ধার হয়। সেখানে ধার পরিশোধের জন্য অভিযুক্তের বিরুদ্ধে চাপ দেওয়া এবং হেনস্থার ইঙ্গিত রয়েছে। পুলিশি তদন্তে বেশ কয়েক জন সাক্ষীর বয়ানেও সেই অভিযোগ উঠে আসে। তার ভিত্তিতে আত্মহত্যায় প্ররোচনার মামলা রুজু করে পুলিশ। ওই মামলা থেকে অব্যাহতি চেয়ে প্রথমে মধ্যপ্রদেশ হাই কোর্টের দ্বারস্থ হন অভিযুক্ত। তা খারিজ হয়ে যাওয়ায় শীর্ষ আদালতে যান তিনি। শুক্রবার সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি অভয় এস ওকা এবং বিচারপতি কেভি বিশ্বনাথনের বেঞ্চে মামলাটির শুনানি ছিল।
দুই বিচারপতির বেঞ্চ জানিয়েছে, দেখে মনে হচ্ছে পুলিশ ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩০৬ ধারা (আত্মহত্যায় প্ররোচনা) ভাবনাচিন্তা না করেই ব্যবহার করেছে। প্রকৃত মামলার ক্ষেত্রে অভিযুক্তদের কখনওই এই মামলা থেকে অব্যাহতি দেওয়া উচিত নয়। তবে কেবলমাত্র শোকস্তব্ধ পরিবারকে শান্ত করার জন্যও আইনের এই ধারায় কারও বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা অনুচিত। আদালত আরও জানিয়েছে, এই ধরনের মামলার ক্ষেত্রে অভিযুক্ত এবং মৃতের পরিবারের আচরণ, মৃত্যুর আগে তাঁদের মধ্যে কেমন সম্পর্ক ছিল, কী ধরনের কথাবার্তা হত— সেই সব বিষয় বাস্তবিক দৃষ্টিকোণ থেকে বিবেচনা করা উচিত।
সুপ্রিম কোর্ট জানিয়েছে, কারও বিরুদ্ধে আত্মহত্যায় প্ররোচনার অভিযোগ দায়ের করতে গেলে অবশ্যই ওই অভিযুক্তের কোনও প্ররোচনার প্রাথমিক প্রমাণ থাকতে হবে। আত্মহত্যার দিকে ঠেলে দেওয়ার জন্য অভিযুক্তের কোনও সক্রিয় ভূমিকা থাকতে হবে। তবে মধ্যপ্রদেশের এই মামলায় অভিযুক্তের বিরুদ্ধে আত্মহত্যায় প্ররোচনার মামলা দায়ের হওয়ার কোনও কারণ খুঁজে পাওয়া যায়নি বলে জানিয়েছে আদালত।