(বাঁ দিক থেকে) ইমরান খান, নওয়াজ শরিফ এবং বিলাবল ভুট্টো জারদারি। —ফাইল চিত্র।
স্থানীয় সময় বিকেল ৫টায় ভোটগ্রহণ পর্ব আনুষ্ঠানিক ভাবে শেষ হয়েছিল পাকিস্তানে। কিন্তু শুক্রবার ভোরের আগে গণনাই শুরু করা যায়নি সেখানে। শেষমেশ নির্বাচন কমিশনের তরফে ভোর ৩টের সময় সাংবাদিক বৈঠক করে প্রাথমিক ফলাফল জানানো হয়। অধিকাংশ আসনেই এখনও গণনা চলছে। গণনায় বিলম্বের জন্য মোবাইল এবং ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ রাখার সিদ্ধান্তকেই দায়ী করা হচ্ছে। তবে প্রাথমিক গণনার গতিপ্রকৃতি ব্যাখ্যা করে স্থানীয় সংবাদমাধ্যমগুলি জানিয়েছে, জেলবন্দি ইমরান খানের দল পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই) যে নির্দল প্রার্থীদের সমর্থন করেছিল, তাঁদের অনেকেই এগিয়ে রয়েছেন। সে দেশের রাজনৈতিক শিবিরের একাংশের দাবি ছিল, পাক সেনার সমর্থন নিয়ে এই নির্বাচনে বিপুল জয় পাবে নওয়াজ শরিফের পাকিস্তান মুসলিম লিগ-নওয়াজ (পিএমএল-এন)। তবে সেই দাবির সত্যতা এখনও পর্যন্ত মেলেনি বলেই পাকিস্তানের স্থানীয় সংবাদমাধ্যমগুলির সূত্রে জানা গিয়েছে।
সকাল ৬টা পর্যন্ত পাকিস্তানে ন্যাশনাল অ্যাসেম্বলির মাত্র ৮টি আসনের ফলাফল ঘোষিত হয়েছে। অধিকাংশ আসনেই টক্কর চলছে পিটিআই সমর্থিত নির্দল এবং নওয়াজের পিএমএল-এন প্রার্থীদের মধ্যে। প্রসঙ্গত, একাধিক মামলায় দোষী সাব্যস্ত হয়ে প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী ইমরান এখন জেলে বন্দি। তাঁর ভোটে দাঁড়ানোর ব্যাপারেও নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে ইমরানের দল পিটিআই-এর নির্বাচনী প্রতীক ক্রিকেট ব্যাট কেড়ে নিয়েছে নির্বাচন কমিশন। ফলে অনেক পিটিআই কর্মীসমর্থক নির্দল প্রার্থী হিসাবে অন্য প্রতীক নিয়ে নির্বাচনী লড়াইতে নামেন।
এখনও পর্যন্ত ন্যাশনাল অ্যাসেম্বলির মাত্র দু’টি আসনে জয়ী হয়েছে নওয়াজের দল। লাহোরের একটি আসনে জয় পেয়েছেন প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী তথা নওয়াজের ভাই শাহবাজ় শরিফ। তবে দলগুলি নিজেদের গড় মোটের উপর ধরে রাখতে পেরেছে বলে প্রাথমিক গণনায় ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে। নিজেদের শক্ত ঘাঁটি খাইবার পাখতুনখোয়া প্রদেশের অন্তত তিনটি আসনে জয় পেয়েছেন ইমরানের দল সমর্থিত নির্দল প্রার্থীরা। আবার সিন্ধ প্রদেশে ‘লড়াই’ দিচ্ছে বেনজির ভুট্টোর পুত্র তথা প্রাক্তন বিদেশমন্ত্রী বিলাবল ভুট্টো জারদারির দল পাকিস্তান পিপলস পার্টি (পিপিপি)। স্থানীয় সংবাদমাধ্যমগুলির প্রতিবেদন অনুসারে, নওয়াজ যে সমস্ত আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলেন, তার মধ্যে বেশ কয়েকটির প্রাথমিক গণনায় পিছিয়ে রয়েছেন তিনি।
এই আবহে গণনায় বিলম্বের কারণে কারচুপির আশঙ্কা করছে ইমরানের দল। ইতিমধ্যেই পিটিআই-এর তরফে জানানো হয়েছে, তাদের সমর্থিত নির্দল প্রার্থীরাই দেশের পরবর্তী সরকার গঠন করবে। জেলে বসেই জয়ের ব্যাপারে নিজের আশার কথা জানিয়েছেন ইমরান। তিনি বলেন, “বৃহৎ সংখ্যক মানুষ স্থির করে নিয়েছিলেন যে, বিপুল ভোটে আমাদের দলকে জেতাবেন।”