হেমন্ত সোরেনের বাড়ি থেকে বাজেয়াপ্ত সেই গাড়ি। ছবি: সংগৃহীত।
ঝাড়খণ্ডের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী হেমন্ত সোরেনের দিল্লির বাসভবনে বাজেয়াপ্ত হওয়া বিএমডব্লিউ গাড়িটি তাঁর নয়। গাড়িটির আসল মালিক কংগ্রেস সাংসদ ধীরজ শাহু। কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা এনফোর্সমেন্ট ডায়রেক্টরেট (ইডি) সূত্রে তেমনই দাবি করা হয়েছে। ঘটনাচক্রে যে ধীরজ শাহুর বাড়ি, অফিস-সহ একাধিক জায়গা থেকে মাস দুয়েক আগেই সাড়ে তিনশো কোটি টাকা উদ্ধার হয়েছে।
ইডি সূত্রের দাবি, গাড়িটি কংগ্রেস সাংসদ শাহুর নামে নথিভুক্ত। কিন্তু হেমন্তের দিল্লির বাসভবনে সেই গাড়ি ছিল কেন, তা খতিয়ে দেখছেন তদন্তকারীরা। জমি জালিয়াতি মামলায় গত ৩১ জানুয়ারি ইডির হাতে গ্রেফতার হন হেমন্ত। ৬০০ কোটি টাকার দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে তাঁর বিরুদ্ধে। সেই মামলায় তাঁকে বেশ কয়েক বার তলব করেছিল কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। কিন্তু হাজিরা দেননি হেমন্ত। শুধু তাই-ই নয়, নিজের রক্ষাকবচের জন্য সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থও হয়েছিলেন তিনি। কিন্তু শীর্ষ আদালতে গিয়েও বিশেষ সুবিধা করতে পারেননি ঝাড়খণ্ডের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী।
বার বার তলব করার পরেও যখন হেমন্ত ইডির দফতরে হাজিরা দেননি, তখন তারা প্রথমে হেমন্তের রাঁচীর সরকারি বাসভবনে যায়। কিন্তু হেমন্তের বয়ান রেকর্ড করতে না পেরে ফিরতে হয়। পরে হেমন্ত ইডিকে জানিয়ে দেন, ৩১ জানুয়ারি দিল্লির বাসভবনে তিনি বয়ান রেকর্ড করাবেন। নির্ধারিত সময়ে হেমন্তের বাসভবনে পৌঁছয় ইডির একটি দল। কিন্তু তাঁকে বাসভবনে খুঁজে পাওয়া যায়নি। তল্লাশি অভিযান চালানোর সময় হেমন্তের বাসভবন থেকে নগদ ৩৬ লক্ষ টাকা, একটি বিএমডব্লিউ গাড়ি এবং কিছু নথিপত্র বাজেয়াপ্ত করে ইডি।
৩১ জানুয়ারিই ইডির হাতে গ্রেফতার হন হেমন্ত। তার আগে রাজভবনে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর পদ থেকে ইস্তফাও দিয়েছিলেন। দিল্লির বাসভবন থেকে বাজেয়াপ্ত গাড়িটি হেমন্তের বলেই জানিয়েছিল ইডি সূত্র। কিন্তু এখন সেই ইডির একটি সূত্রই দাবি করছে, গাড়িটি হেমন্তের নয়, রাজ্যসভায় কংগ্রেস সাংসদ ধীরজ শাহুর।
গত ৬ ডিসেম্বর ওড়িশার একটি মদ প্রস্তুতকারক কারখানা বৌধ ডিস্টিলারিজ়ে আয়কর দফতরের আধিকারিকরা হানা দেয়। ওই সংস্থার সঙ্গে জড়িত ওড়িশা, ঝাড়খণ্ডের বেশ কিছু সংস্থাতেও তল্লাশি অভিযানে যায় আয়কর দফতর। সেই সময় কয়েকশো কোটি টাকা উদ্ধার হয়। তার পর আরও তল্লাশিতে কংগ্রেস সাংসদ ধীরজ সাহুর নাম উঠে আসে। তার পর সাহুর বাড়ি এবং অফিসে তল্লাশি চালানো হয়। ছ’দিন ধরে তল্লাশি চালিয়ে ৩৫৩ কোটি টাকা উদ্ধার হয় সাহুর বাড়ি থেকে।