আফগান সীমান্তে পাক সেনার তৎপরতা। —ফাইল ছবি।
সোমবার রাত থেকে পাক-আফগান সীমান্তে তালিবানের সঙ্গে পাকিস্তানি সেনার দফায় দফায় গুলির লড়াই চলছে। পাক সেনার জনসংযোগ বিভাগ (আইএসপিআর) জানিয়েছে, এখনও পর্যন্ত খাইবার পাখতুনখোয়া প্রদেশে ওই সংঘর্ষে চার জওয়ান নিহত হয়েছেন। মৃত্যু হয়েছে অন্তত ১৩ জন তালিবানের।
উত্তর ওয়াজিরিস্তান জেলার সীমান্তবর্তী এলাকা মিরামশাহে তেহরিক-ই-তালিবান পাকিস্তান (টিটিপি)-এর হামলার জেরেই সংঘর্ষ ঘটেছে বলে পাক সংবাদমাধ্যম দ্য ডনের দাবি। আফগান তালিবানের একাংশের মদতপুষ্ট টিটিপি বাহিনী সোমবার রাতে একযোগে স্পালগা, গোশ, টাপি, বারওয়ানা, পিপানা লোয়ার এবং পিপানা টপের ছ’টি সীমান্তবর্তী নিরাপত্তা চৌকিতে হামলা চালায় বলে প্রকাশিত খবরে দাবি।
ঘটনার জেরে মঙ্গলবার সকাল থেকেই পাক-আফগান সীমান্ত জুড়ে জোরদার অভিযান শুরু করেছে পাক ফৌজ এবং আধাসেনা ফ্রন্টিয়ার কোর। এর ফলে সীমান্তে উত্তেজনা তৈরি হয়েছে। আফগানিস্তানের শাসক তালিবানের যোদ্ধারাও সম্ভাব্য পাক হামলা রুখতে সীমান্ত এলাকার সামরিক দৃষ্টিতে গুরুত্বপূর্ণ এলাকাগুলিতে জড়ো হয়েছেন। ফলে সীমান্তে তৈরি হয়েছে উত্তেজনা।
গত গত ২৫ ডিসেম্বর খাইবার-পাখতুনখোয়া প্রদেশ লাগোয়া আফগানিস্তানের পাকতিকা প্রদেশে হামলা চালিয়েছিল পাক বায়ুসেনার যুদ্ধবিমান। ইসলামাবাদের দাবি, টিটিপি বিদ্রোহীদের ঘাঁটি লক্ষ্য করে ওই হামলা চালানো হয়েছে। যদিও আফগানিস্তানের শাসক তালিবানের অভিযোগ, বারমাল জেলায় লামান-সহ সাতটি গ্রাম লক্ষ্য করে একের পর এক বিমান হামলা চালানো হয়েছিল। তাতে মৃত্যু হয়েছিল মহিলা, শিশু-সহ ৪৬ জন সাধারণ মানুষের। সে সময়ই পাক সেনাকে হুঁশিয়ারি দিয়েছিল তালিবান।
প্রসঙ্গত, ২০২২ সালের নভেম্বরে পাকিস্তান সরকারের সঙ্গে শান্তি আলোচনা ভেস্তে যাওয়ার পরে ‘যুদ্ধ’ ঘোষণা করেছিল টিটিপি। বিদ্রোহী ওই পাশতুন গোষ্ঠীর অভিযোগ ছিল, সংঘর্ষবিরতি ভেঙে পাক সেনা এবং ‘কাউন্টার টেররিজ়ম ডিপার্টমেন্ট’ (সিটিডি)-এর যৌথবাহিনী অভিযান শুরু করার ফলেই অশান্তি ছড়িয়েছে খাইবার-পাখতুনখোয়ায়। আমেরিকায় ড্রোন হামলায় নিহত জঙ্গিনেতা বায়তুল্লা মেহসুদ প্রতিষ্ঠিত এই গোষ্ঠী বরাবরই পাক সরকারের বিরোধী। ২০১৪ সালে পেশোয়ারের একটি স্কুলে আত্মঘাতী হামলা চালিয়ে শতাধিক পড়ুয়াকে খুন করেছিল টিটিপি যোদ্ধারা। তার পর একাধিক অভিযান চালিয়েও তাদের বাগে আনতে পারেনি পাক সেনা। গত দেড় দশকে একাধিক অভিযান চালিয়েও তাদের বাগে আনতে পারেনি পাক সেনা। ২০০৯ সালে টিটিপি-র বিরুদ্ধে ‘অপারেশন রাহ-ই-নিজত’ চালিয়েছিল পাক সেনা। কিন্তু টিটিপি-কে বাগে আনতে পারেনি।