কেরল হাই কোর্টে বিবাহবিচ্ছেদের মামলা। — প্রতীকী চিত্র।
স্বামী সারা ক্ষণ আধ্যাত্মিকতা নিয়ে ব্যস্ত থাকেন। বিভিন্ন মন্দিরে মন্দিরে ঘুরে বেড়ান। পরিবারিক জীবনে বা যৌনতায় তাঁর কোনও আগ্রহই নেই বলে দাবি স্ত্রীর। এই ঘটনাকে মানসিক নিষ্ঠুরতার সামিল বলে মনে করছে কেরল হাই কোর্ট। স্ত্রীর আবেদনের প্রেক্ষিতে কেরলের এক পারিবারিক আদালত আগেই ওই দম্পতির বিবাহবিচ্ছেদের নির্দেশ দিয়েছিল। এ বার হাই কোর্টও সেই নির্দেশই বহাল রাখল।
২০১৬ সালে তাঁদের বিয়ে হয়েছিল। কিন্তু বিয়ের কিছু দিনের মধ্যেই সম্পর্কে তিক্ততা আসতে শুরু করে। স্ত্রীর দাবি, তাঁর স্বামী সারা ক্ষণ ধর্মাচরণে ব্যস্ত থাকেন। পরিবার পরিকল্পনা বা যৌনতায় তাঁর কোনও আগ্রহই নেই। কাজের পরে বাকি সময়টা মন্দির এবং আশ্রমে ঘুরতেই পছন্দ করেন স্বামী। এমনকি স্ত্রীকেও সেই একই পথ অবলম্বন করার জন্য তিনি জোর করতেন বলে অভিযোগ। বিয়ের তিন বছর পরে ২০১৯ সালেই পারিবারিক আদালতে বিচ্ছেদের আর্জি জানান তিনি। তবে স্বামী নিজের আচরণ শুধরে নেবেন বলে আশ্বাস দিলে, বিচ্ছেদের মামলা সেই সময় প্রত্যাহার করে নেন স্ত্রী। কিন্তু মামলা প্রত্যাহারের পরেও স্বামীর আচরণে কোনও বদল আসেনি বলে অভিযোগ স্ত্রীর।
সেই কারণে ২০২২ সালে বিবাহবিচ্ছেদের আর্জিতে পুনরায় পারিবারিক আদালতের দ্বারস্থ হন স্ত্রী। সেখানে স্ত্রীর আবেদনের প্রেক্ষিতে বিচ্ছেদ মঞ্জুর করে আদালত। ওই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে হাই কোর্টের দ্বারস্থ হন স্বামী। স্বামীর দাবি, তাঁর আধ্যাত্মিকতাকে ভুল বুঝেছেন স্ত্রী। বৈবাহিক সম্পর্কে তিনি কোনও কর্তব্যপালনে খামতি রাখেননি বলেও দাবি করেন স্বামী। আইনি খবর পরিবেশনকারী ওয়েবসাইট ‘বার অ্যান্ড বেঞ্চ’ অনুসারে কেরল হাই কোর্ট জানিয়েছেন, “বিবাহ কখনও দম্পতির একে অন্যের উপর আধ্যাত্মিক বা অন্য কোনও ব্যক্তিগত বিশ্বাস চাপিয়ে দেওয়ার অধিকার দেয় না।” হাই কোর্ট জানিয়েছে, স্ত্রী যে অভিযোগগুলি জানাচ্ছেন, তা অবিশ্বাস করার মতো কোনও তথ্য আদালতের কাছে নেই। জোর করে এমন কিছু চাপিয়ে দেওয়া মানসিক নিষ্ঠুরতার শামিল বলে মনে করছে আদালত।