পর্নতারকা স্টর্মি ড্যানিয়েলসকে ঘুষ দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিরুদ্ধে। ফাইল চিত্র।
শারীরিক সম্পর্ক নিয়ে মুখ না খুলতে পর্নতারকা স্টর্মি ড্যানিয়েলসকে ঘুষ দেওয়ার অভিযোগে গ্রেফতার হলেও আপাতত পুলিশ এবং জেল হেফাজত এড়িয়েছেন। কিন্তু আমেরিকার আইন বলছে, শেষ পর্যন্ত সবক’টি অভিযোগে দোষী সাব্যস্ত হলে ১৩৬ বছর জেলে কাটাতে হতে পারে সে দেশের প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে!
মঙ্গলবার ভারতীয় সময় রাত ১২টার একটু আগেই নিউ ইয়ের্কের ম্যানহাটন আদালতে আত্মসমর্পণ করতে গিয়েছিলেন ট্রাম্প। তার আগেই বিচারক হুয়ান মারচেনের নির্দেশে নিয়ম মেনে তাঁকে হেফাজতে নেয় পুলিশ। পর্ন তারকা স্টর্মিকে ১ লক্ষ ৩০ হাজার ডলার ‘ঘুষ’ দেওয়ার ফৌজদারি মামলায় গত সপ্তাহেই তাঁর বিরুদ্ধে চার্জ গঠন করেছিল নিউ ইয়র্কের গ্র্যান্ড জুরি।
স্টর্মির দাবি, ২০০৬ সালে তিনি এবং ট্রাম্প শারীরিক সম্পর্কে জড়িয়েছিলেন। এর পর ২০১৬ সালে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের আগে তাঁর মুখ বন্ধ রাখতে ঘুষ দিয়েছিলেন ট্রাম্প। ট্রাম্পের প্রাক্তন আইনজীবী মাইকেল কোহেন দাবি করেছিলেন, তিনিই ট্রাম্পের হয়ে স্টর্মি এবং অন্য এক মডেল কারেনের কাছে অর্থ পৌঁছে দেওয়ার কাজ করেছিলেন। যদিও ট্রাম্প এই অভিযোগ অস্বীকার করেছিলেন। কোহেন ইতিমধ্যেই ভোটপ্রচারে নীতি লঙ্ঘনের জন্য দোষী সাব্যস্ত হয়ে জেলে রয়েছেন।
ম্যানহাটন ডিস্ট্রিক্ট অ্যাটর্নি অ্যালভিন ব্র্যাগ অভিযোগের তদন্ত করেছিলেন। তিনি ডেমোক্র্যাট দলের সদস্য। ফলে ‘রাজনৈতিক চক্রান্তের’ অভিযোগ তুলেছে ট্রাম্প শিবির। বুধবার আদালতে আমেরিকার প্রাক্তন প্রেসিডেন্টের বিরুদ্ধে ৩৪টি ফৌজদারি অপরাধের অভিযোগ আনা হয়, যার প্রতিটিতেই নিজেকে নির্দোষ বলে দাবি করেছেন তিনি।
ঘণ্টাখানেকের শুনানি শেষে নিউ ইয়র্ক ছেড়ে ফ্লোরিডার উদ্দেশে পাড়ি দেন ট্রাম্প। তাঁর বিরুদ্ধে আনা ৩৪টি অভিযোগের তালিকায় রয়েছে তথ্য গোপন, বেআইনি ভাবে অর্থ দেওয়া, প্রতারণা, তদন্তে অসহযোগিতার মতো গুরুতর ফৌজদারি ধারা। যার প্রত্যেকটিতে দোষী সাব্যস্ত হলে ১৩৬ বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড হতে পারে তাঁর। কারণ, অধিকাংশ অভিযোগের ক্ষেত্রেই অন্তত ৪ বছরের সাজার নিদান রয়েছে। যদিও আইন বিশেষজ্ঞেরা বলছেন, বাস্তবে এমন সম্ভাবনা প্রায় নেই। তবুও বছর দশেক জেলে থাকতে হতে পারে ৭৬ বছরের রিপাবলিকান নেতাকে।
প্রসঙ্গত, সম্প্রতি রিপাবলিক দলের হয়ে ২০২৪-এ আবার আমেরিকার প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে দাঁড়ানোর ইচ্ছা প্রকাশ করেছিলেন ট্রাম্প। সেই আবহেই তাঁকে এই মামলায় অভিযুক্ত করা হল। শেষ পর্যন্ত জেলের সাজা এড়ালেও ট্রাম্পের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগগুলি হোয়াইট হাউসে তাঁর প্রত্যাবর্তনের চেষ্টায় জল ঢেলে দিতে পারে বলে অনেকেই মনে করছেন।