ভিডিয়ো বার্তা ইমরানের।
তোষাখানা দুর্নীতি মামলা এবং এক মহিলা বিচারক ও দুই পুলিশ আধিকারিককে হুমকি দেওয়ার অভিযোগে প্রাক্তন পাক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানকে গ্রেফতার করতে সক্রিয় হল পুলিশ । মঙ্গলবার সন্ধ্যায় তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই)-এর সমর্থকদের সঙ্গে দফায় দফায় সংঘর্ষের পরে প্রতিরোধ হটিয়ে লাহোরের জমান পার্ক এলাকায় ইমরানের বাড়ি দরজায় পৌঁছে যায় পুলিশ কিন্তু রাত পর্যন্ত তাঁকে গ্রেফতার করা যায়নি।
ইমরানের গ্রেফতারির আশঙ্কায় তাঁর বাড়ি ঘিরে অবস্থানে বসেছিলেন কয়েক হাজার পিটিআই কর্মী-সমর্থক। বিকেল থেকেই তাঁদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ শুরু হয়। পুলিশ লাঠি, জলকামান, কাঁদানে গ্যাস ব্যবহার করে বলে অভিযোগ। রাতে টুইটারে ভিডিয়ো-বার্তায় ইমরান তাঁর সমর্থকদের উদ্দেশে বলেন, ‘‘জাতির উদ্দেশে আমার বার্তা, প্রকৃত স্বাধীনতা এবং আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে, লড়াই চালিয়ে যান। পুলিশ ভাবছে আমাকে জেলে পাঠালে সব ঠাণ্ডা হয়ে যাবে। কিন্তু তা হবে না।’’
সেই সঙ্গে অনুগামীদের উদ্দেশে তাঁর আবেদন, ‘‘আমরা মৃত্যু হলেও এ লড়াই আপনারা থামাবেন না। একনায়কতন্ত্রকে উৎখাত না করা পর্যন্ত লড়াই চালিয়ে যেতে হবে।’’ ইমরানের টুইটার বার্তার পরে লাহৌরের পাশাপাশি পাকিস্তানের অন্যান্য শহরেও বিক্ষোভ শুরু করেছেন পিটিআই সমর্থকেরা। বিভিন্ন এলাকা থেকে নতুন করে অশান্তির খবর আসতে শুরু করেছে।
اپنی قوم کو میرا پیغام ہے کہ پوری ہمت و استقامت سے کھڑی ہو اور حقیقی آزادی و قانون کی حکمرانی کیلئے میدانِ عمل میں ڈٹ جائے! pic.twitter.com/ln4hLFu8Sp
— Imran Khan (@ImranKhanPTI) March 14, 2023
প্রসঙ্গত, এক মহিলা বিচারক এবং দুই পুলিশ আধিকারিককে হুমকি দেওয়ার অভিযোগে প্রাক্তন পাক ক্রিকেট অধিনায়কের বিরুদ্ধে সোমবার জামিন অযোগ্য গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছিলেন ইসলামাবাদ জেলা ও দায়রা আদালতের বিচারক রানা মুজাহিদ রহিম। তিনি ইমরানকে গ্রেফতারের সময়সীমা দিয়েছিলেন ২১ মার্চ।
অন্য দিকে, তোষাখানা মামলার শুনানিতে হাজির না হওয়ায় গত মঙ্গলবারই অতিরিক্ত দায়রা বিচারক জাফর ইকবাল ইমরানের বিরুদ্ধে পৃথক গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করে। তাতে ১৮ মার্চের মধ্যে প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রীকে গ্রেফতারের নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল পুলিশকে। জোড়া গ্রেফতারি পরোয়ানার জেরেই তাঁকে গ্রেফতারির এই অভিযান।
প্রসঙ্গত, গত বছর ইসলামাবাদে পুলিশি হেফাজতে এক পিটিআই নেতার বিরুদ্ধে অত্যাচারের অভিযোগ তুলে ইমরান দাবি করেন, অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা বিচারক জেবা চৌধুরী, পুলিশের আইজি আকবর নাসির খান এবং স্থানীয় ডিআইজির বিরুদ্ধে মামলা করবে তাঁর দল। সেই মন্তব্যের জেরে তাঁর বিরুদ্ধে মামলা হয়। কিন্তু শুনানিতে তিনি হাজির হননি। এর পর প্রাক্তন পাক ক্রিকেট অধিনায়কের বিরুদ্ধে সোমবার জামিন অযোগ্য গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছিলেন ইসলামাবাদ জেলা ও দায়রা আদালতের বিচারক রহিম। এর আগে গত ৫ মার্চ তোষাখানা মামলায় গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির পরেও ইমরানকে ধরতে তাঁর লাহোরের বাড়িতে পুলিশি অভিযান হয়েছিল। কিন্তু তাঁর নাগাল পাওয়া যায়নি। পরে হাই কোর্ট তাঁর জামিনের আবেদন মঞ্জুর করেছিল।