Wagner

মস্কো থেকে ছ’ঘণ্টা দূরে ওয়াগনার বাহিনী! ‘বিশ্বাসঘাতক’ প্রিগোজিন গদি ওল্টাবেন পুতিনের?

ওয়াগনার বাহিনীকে রুখতে রুশ ‘চপার’ (যুদ্ধ হেলিকপ্টার) ধারাবাহিক আক্রমণ চালাচ্ছে। এমনকি ঘনবসতিপূর্ণ এলাকায় সাধারণ নাগরিকদের প্রাণহানির ঝুঁকি সত্ত্বেও আকাশপথে হামলা চালানো হচ্ছে।

Advertisement
আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
মস্কো শেষ আপডেট: ২৪ জুন ২০২৩ ১৮:০৮
Fighters of Wagner Group enter Lipetsk, now only six hours away from Moscow

মস্কো দখল করে পুতিনকে (বাঁ দিকে) সরাতে অভিযান প্রিগেজিনের ওয়াগনার বাহিনীর। গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।

কিভ দখলের দায়িত্ব ওয়াগনার বাহিনীর হাতে তুলে দিয়েছিলেন ভ্লাদিমির পুতিন। এখন তাদের ‘বন্দুকের নল’ ঘুরে গিয়েছে তাঁরই দিকে। দ্রুত গতিতে মস্কোর দিকে ধেয়ে আসছে রুশ বাহিনী। রুশ ধনকুবের ব্যবসায়ী অলিগার্চ ইয়েভজেনি প্রিগোজিনের ভাড়াটে যোদ্ধার দল। পশ্চিমি সংবাদমাধ্যম জানাচ্ছে, শনিবার দুপুরে রাশিয়ার আর এক শহর লিপেৎস্কের দখল নিয়েছে তারা। মস্কো থেকে ওই শহর মাত্র ছ’ঘণ্টার পথ।

ট্যাঙ্ক এবং সাঁজোয়া গাড়ি নিয়ে প্রায় ২০ হাজার ওয়াগনার যোদ্ধা মস্কো দখলের অভিযানে নেমেছে বলে প্রকাশিত একাধিক খবরের দাবি। এই পরিস্থিতিতে তাদের রুখতে রুশ ‘চপার’ (যুদ্ধ হেলিকপ্টার) ধারাবাহিক আক্রমণ চালাচ্ছে। এমনকি ঘনবসতিপূর্ণ এলাকায় সাধারণ নাগরিকদের প্রাণহানির ঝুঁকি সত্ত্বেও আকাশপথে হামলা চালানো হচ্ছে। প্রেসিডেন্ট পুতিন শনিবার জাতির উদ্দেশে ভাষণে বলেছেন, ‘‘বিশ্বাসঘাতকেরা সমুচিত জবাব পাবে।’’ প্রিগোজিনের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানাও জারি করেন তিনি।

Advertisement

প্রসঙ্গত, চলতি সপ্তাহেই ইউক্রেনের সীমান্ত পেরিয়ে রাশিয়ার মূল ভূখণ্ডে বড় অভিযান শুরু করেছিল বিদ্রোহী ওয়াগনার বাহিনী। প্রিগোজিনের মালিকানাধীন ভাড়াটে যোদ্ধারা শনিবার সকালে ইউক্রেন সীমান্তের অদূরে পশ্চিম রাশিয়ার গুরুত্বপূর্ণ শহর ভোরোনেজ় দখল করেছে বলে কয়েকটি পশ্চিমি সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত খবরে দাবি। এর আগে ওয়াগনার বাহিনী শুক্রবার ইউক্রেন সীমান্ত লাগোয়া রোস্তভ-অন-ডন শহরের দখল নিয়েছিল। ওই এলাকা থেকে মস্কোর দূরত্ব প্রায় হাজার কিলোমিটার। এর পর মস্কোর দিকে আরও কয়েকশো কিলোমিটার এগিয়ে গিয়েছে তারা।

প্রিগোজিন শনিবার অডিয়ো-বার্তায় দাবি করেন, রাশিয়ার রাজধানী মস্কোর উদ্দেশে তাঁদের অভিযান চলবে। রুশ সেনা ইউক্রেনে ওয়াগনার যোদ্ধাদের উপর হামলা চালাচ্ছে বলেও অভিযোগ করেন তিনি। তবে ওয়াগনার যোদ্ধারা সত্যিই ইউক্রেন সীমান্তবর্তী এলাকা নিয়ন্ত্রণে নিয়েছেন কি না, সে বিষয়ে এখনও রুশ সরকার কিছু জানায়নি। খবর সত্যি হলে ইউক্রেনে মোতায়েন কয়েক লক্ষ রুশ সেনা বিপদের মুখে পড়তে পারে বলে সামরিক বিশেষজ্ঞদের একাংশ মনে করছেন। কারণ, সে ক্ষেত্রে অস্ত্র এবং রসদ সরবরাহের পথই বন্ধ হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা।

একদা পুতিন-ঘনিষ্ঠ হোটেল ব্যবসায়ী প্রিগোজিনের ওই ভাড়াটে বাহিনী রুশ সেনার অংশ নয়। কিন্তু গত দেড় বছর ধরে ধারাবাহিক ভাবে তারা রুশ বাহিনীর সহযোগী হয়ে ইউক্রেন যুদ্ধে অংশ নিয়েছে। অতীতে লিবিয়া, সিরিয়া, মোজাম্বিক, সুদানের মতো দেশে গৃহযুদ্ধেও লড়েছে প্রায় ৪০ হাজার যোদ্ধার এই পেশাদার ভাড়াটে বাহিনী। ইউক্রেন যুদ্ধের কৌশল নির্ধারণ নিয়ে গত কয়েক মাস ধরে রুশ প্রতিরক্ষামন্ত্রী সের্গেই শোইগু এবং সেনাপ্রধান ভ্যালেরি গেরাসিমভের সঙ্গে মতবিরোধ চলছিল প্রিগোজিনের। রুশ সেনা পরিকল্পিত ভাবে‌ ওয়াগনার যোদ্ধাদের মৃত্যুর মুখে ঠেলে দিচ্ছিল বলেও অভিযোগ করেছিলেন তিনি। এ বার সরাসরি মস্কোর বিরুদ্ধে অস্ত্র তুলে ধরেছে প্রিগোজিনের ভাড়াটে যোদ্ধারা।

আরও পড়ুন
Advertisement