(বাঁ দিকে)ডোনাল্ড ট্রাম্প। আততায়ী টমাস ম্যাথিউ ক্রুক (ডান দিকে)। ছবি: এক্স।
পেনসিলভেনিয়ার বাটলারে ডোনাল্ড ট্রাম্পকে লক্ষ্য করে যিনি গুলি ছুড়েছিলেন, তাঁর পরিচয় প্রকাশ করল এফবিআই। পেনসিলভেনিয়া স্টেটের ভোটার রেকর্ড বলছে,ওই আততায়ী আদতে রিপাবলিকান প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী ট্রাম্পের নিজের দলেরই নথিভুক্ত সদস্য। এফবিআইয়ের তরফে জানানো হয়েছে, এই হামলাকে ‘খুনের চেষ্টা’ হিসাবেই দেখছে তারা। প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট তথা প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী যেখানে উপস্থিত, সেই সভাস্থলের নিরাপত্তা নিয়েও উঠেছে প্রশ্ন।
এফবিআই সূত্রে জানা গিয়েছে, বন্দুকবাজের নাম টমাস ম্যাথিউ ক্রুক। তাঁর বয়স ২০ বছর। পুলিশ এবং রক্ষীদের গুলিতে নিহত হয়েছেন তিনি। তাঁর ছোড়া গুলিতে আরও এক সমর্থকের মৃত্যু হয়েছে। দু’জন গুরুতর আহত। এফবিআই এ-ও জানিয়েছে, পেনসিলভেনিয়ার বেথেল পার্কের বাসিন্দা ক্রুক। ট্রাম্পের যেখানে মঞ্চ ছিল, তার থেকে ১৩০ গজ (১১৯ মিটার) দূরে একটি উঁচু ছাদ থেকে ট্রাম্পকে লক্ষ্য করে একাধিক গুলি ছুড়েছিলেন তিনি। সঙ্গে সঙ্গেই সতর্ক হয়ে যান সিক্রেট সার্ভিস কাউন্টার-স্নাইপার দলের সদস্যেরা। তাঁরা ক্রুককে লক্ষ্য করে পাল্টা গুলি ছোড়েন। তাতেই মৃত্যু হয় যুবকের। ভিডিয়োতে দেখা গিয়েছে, এর পরেই ট্রাম্পকে ঘিরে ধরেন রক্ষীরা। তার পর তাঁকে সরিয়ে নিয়ে যান মঞ্চ থেকে। ঘটনার তদন্তে করছে স্থানীয় পুলিশ, এফবিআই। একটি সাংবাদিক বৈঠক করে এফবিআইয়ের আধিকারিকেরা জানিয়েছেন, খুনের চেষ্টা হিসাবেই এই ঘটনাকে দেখা হচ্ছে। সেই মতো তদন্ত চলবে।
ক্রুক কি একা ছিলেন, না কি নেপথ্যে আরও কেউ বা কোনও দল ছিল, খতিয়ে দেখছে পুলিশ। পেনসিলভেনিয়া পুলিশের লেফটেন্যান্ট কর্নেল জর্জ বেভিনস বলেন, ‘‘এখনও এই বিষয়ে কিছু বলা যাবে না। এক জন বন্দুকবাজকে শনাক্ত করা হয়েছে। তদন্ত চলছে। বিভিন্ন সূত্র ধরে আমরা খোঁজার চেষ্টা করছি যে, সেখানে এক জনই বন্দুকবাজ ছিল কি না।’’ এই ঘটনার পর সভাস্থলের নিরাপত্তা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। একটি সূত্রের খবর, ট্রাম্পের প্রচারকারী দলের তরফে আরও নিরাপত্তা চাওয়া হলেও মেলেনি। এই নিয়ে জো বাইডেন প্রশাসনের তরফে কোনও জবাব দেওয়া হয়নি। বাটলারে একটি খোলা জায়গায় ট্রাম্প সভা করছিলেন। তদন্তকারীদের সূত্রে খবর, সেখানে তাঁকে অবাধে নিশানা করা যেতে পারে, যা করেছিলেন ক্রুক। নিরাপত্তারক্ষীরা কী ভাবে ওই জায়গায় সভার অনুমতি দিলেন, উঠছে প্রশ্ন। হাউস ওভারসাইট কমিটির চেয়ারম্যান জেমস কোমারম্যান এই নিয়ে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন।
ট্রাম্পের সহকারীরা জানিয়েছেন, তিনি সুস্থ রয়েছেন। এই ঘটনার পর ট্রাম্পের সন্তানেরা দাবি করেছেন, আমেরিকার এমনই এক জন ‘লড়াকু’ প্রেসিডেন্টের প্রয়োজন। ভিডিয়োতে দেখা গিয়েছে, কান ঘেঁষে গুলি বেরিয়ে যাওয়ার পর কান ধরে ভরা সভায় বসে পড়ছেন ট্রাম্প। সঙ্গে সঙ্গে তাঁর কাছে ছুটে যান রক্ষীরা। এর পর দেখা যায়, ট্রাম্পের ডান কান দিয়ে রক্ত গড়িয়ে পড়ছে। তাঁর গালেও লেগে রয়েছে রক্ত। এই ঘটনার পর এক্স হ্যান্ডলে (সাবেক টুইটার) ট্রাম্পের ছেলে এরিক ট্রাম্প লেখেন, ‘‘এই যোদ্ধাকেই আমেরিকার প্রয়োজন।’’ ডোনাল্ড ট্রাম্প জুনিয়র লেখেন, ‘‘আমেরিকাকে রক্ষা করার লড়াই তিনি কখনও থামাবেন না।’’ মেয়ে ইভাঙ্কা ট্রাম্প সমর্থক এবং আমেরিকার গোয়েন্দা বিভাগকে ধন্যবাদ দিয়েছেন।