জাস্টিন ট্রুডো (বাঁ দিকে) এবং অ্যাডল্ফ হিটলার। — ফাইল চিত্র।
কানাডার পার্লামেন্টে দাঁড়িয়ে কূটনৈতিক রীতি ভেঙে খলিস্তানপন্থী মন্তব্য করে ভারতের সঙ্গে সংঘাতে জড়িয়েছিলেন দেড় সপ্তাহ আগে। এ বার সেই পার্লামেন্টেই দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের নাৎসি সেনাকে আমন্ত্রণ জানিয়ে বিতর্কে জড়ালেন কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো। ঘটনার জন্য জাতির উদ্দেশে ক্ষমা চেয়েছেন তিনি।
জার্মানির নাৎসি একনায়ক অ্যাডল্ফ হিটলারের বাহিনীর হয়ে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে অংশ নেওয়া ওই ব্যক্তি বর্তমানে ইউক্রেনের বাসিন্দা। কানাডার পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষ ‘হাউস অফ কমন্স’-এর অধিবেশনে ‘সম্মাননীয় অতিথি’ হিসাবে অংশ নেওয়ার জন্য তাঁকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল। ইয়ারোস্লাভ হানকা নামে ওই ৯৮ বছরের প্রাক্তন নাৎসি যোদ্ধাকে গত শুক্রবার কানাডার পার্লামেন্টে সম্মান জানানো হয়েছিল। ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জ়েলেনস্কিও সে দিন ‘হাউস অফ কমন্স’-এর অধিবেশনে হাজির ছিলেন।
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় হানকা হিটলারের এসএস ওয়াফেন বাহিনী পরিচালিত প্রথম ইউক্রেনীয় ডিভিশনের যোদ্ধা হিসাবে রুশ ফৌজের বিরুদ্ধে লড়েছিলেন। প্রধানমন্ত্রী ট্রুডোর পাশাপাশি, ‘হাউস অফ কমন্স’-এর স্পিকার অ্যান্টনি রোটা আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন ওই ব্যক্তিকে। ঘটনার জেরে প্রবল বিতর্কের মুখে পড়ে ইস্তফা দিয়েছেন রোটা। ট্রুডো বুধবার রাতে পার্লামেন্টের অধিবেশনে ঘটনার জন্য ক্ষমা চেয়ে বলেন, ‘‘আমাদের একটি বড় ভুল হয়ে গিয়েছে। সঠিক পরিচয় না জেনে ওই ব্যক্তিকে সম্মান জানানো একটি ভয়ঙ্কর ভুল। নাৎসি বাহিনীর নির্যাতনের শিকার হওয়া ব্যক্তিদের স্মৃতির প্রতি অশ্রদ্ধা। এ জন্য আমি ক্ষমাপ্রার্থী।’’
প্রসঙ্গত, গত জুন মাসে জুন মাসে খলিস্তানপন্থী সংগঠন ‘খলিস্তান টাইগার ফোর্স’ (কেটিএফ)-এর প্রধান তথা কানাডার সারের গুরু নানক শিখ গুরুদ্বার সাহিবের প্রধান নিজ্জরকে গুরুদ্বার চত্বরের মধ্যেই গুলি করে খুন করা হয়। সেই ঘটনার তদন্তে ভারতের গুপ্তচর সংস্থার ভূমিকা ছিল বলে কানাডার পার্লামেন্টের জরুরি অধিবেশনে গত ১৮ সেপ্টেম্বর অভিযোগ করেছিলেন ট্রুডো। কানাডার তদন্তকারী সংস্থাগুলি এ বিষয়ে আরও বিশদে তদন্ত করছে বলেও জানান তিনি। পাশাপাশি দাবি করেন, বিষয়টি নিয়ে জি২০ শীর্ষ সম্মেলন চলাকালীন তাঁর সঙ্গে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীরও কথা হয়েছে। ট্রুডোর ওই বিবৃতির পরে কানাডার এক ভারতীয় কূটনীতিককে বহিষ্কার করা হয়। সে দেশের বিদেশমন্ত্রী মেলানি জোলি জানিয়েছেন, ওই ব্যক্তি ‘র’-এর কানাডার প্রধান হিসাবে দায়িত্ব সামলাতেন। ওই পদক্ষেপের প্রতিক্রিয়ায় পরের মঙ্গলবার মোদী সরকার কানাডার এক শীর্ষ কূটনীতিককে পাঁচ দিনের মধ্যে দিল্লি ছাড়ার নির্দেশ দেয়। পাশাপাশি, নিজ্জর খুনের ঘটনায় দায় অস্বীকার করে ভারত।