জো বাইডেন। — ফাইল চিত্র।
কাবুলে নিহত হয়েছিলেন ১৩ জন আমেরিকান সৈনিক। তাঁদের দেহ আসবে বলে স্বদেশ আমেরিকায় অপেক্ষায় প্রিয়জনেরা। তাঁদের একাংশ সংবাদমাধ্যমে দাবি করেছেন, সেই প্রতীক্ষা দীর্ঘতর হয়েছিল কারণ, নিজের বিমানে সে সময় ঘুমিয়ে ছিলেন বিদায়ী প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। তাই পরিবারের হাতে দেহ তুলে দেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু করা যায়নি বলে অভিযোগ। হোয়াইট হাউসের মুখপাত্র যদিও স্বজনহারা পরিবারের সেই দাবি খারিজ করে দিয়েছেন।
২০২১ সালের ২৬ অগস্ট কাবুল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের অ্যাবে গেটে পর পর আত্মঘাতী বিস্ফোরণ ঘটায় তালিব জঙ্গিরা। তাতে প্রাণ হারিয়েছিলেন ১৩ জন আমেরিকান সৈনিক এবং বেশ কয়েক জন আফগান। সেই নিহত সৈনিকদের দেহ ডেলাওয়্যারে ডোভার বায়ুসেনা ঘাঁটিতে এসে পৌঁছেছিল। সেখানে নিহতদের সম্মান জানিয়ে দেহ পরিবারের হাতে তুলে দেওয়া হয়। এই গোটা প্রক্রিয়ায় উপস্থিত থাকার কথা ছিল তৎকালীন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন এবং তাঁর স্ত্রী জিল বাইডেনের। স্বজনহারাদের অভিযোগ, বায়ুসেনা ঘাঁটিতে জওয়ানদের দেহ পেতে অতিরিক্ত প্রায় তিন ঘণ্টা অপেক্ষা করতে হয়েছিল। কারণ, প্রেসিডেন্ট নিজের বিমানে ঘুমিয়ে ছিলেন।
কাবুলের বিস্ফোরণে নিজের ভাইকে হারিয়েছিলেন রয়েস ম্যাককোলাম। ব্রিটিশ সংবাদপত্র ‘ডেইলি মেল’-কে তিনি বলেন, ‘‘নিহত সৈনিকদের দেহ তুলে দিতে আমাদের অতিরিক্ত তিন ঘণ্টা অপেক্ষা করিয়েছিলেন (বাইডেন)। কারণ তিনি ঘুম থেকে উঠতে পারছিলেন না।’’ রয়েস আরও জানিয়েছেন, নিহতদের পরিবারেরা অপেক্ষা করছিলেন ঘাঁটিতে। এক সেনা আধিকারিক তাঁদের জানিয়েছিলেন, বাইডেন ঘুমিয়ে রয়েছেন। কাবুলে নিহত টেলর হুভারের বাবা ডারিন হুভারেরও একই অভিজ্ঞতা। তাঁর কথায়, ‘‘আমরা দফতরে বসেছিলাম। মনে হচ্ছিল অনন্তকাল ধরে প্রতীক্ষা করছি একটা জরাগ্রস্ত বোকা বুড়োর জন্য।’’ ওই কর্মসূচিতেই জওয়ানদের দেহ যখন পরিবারের হাতে তুলে দেওয়ার জন্য প্রস্তুত করা হচ্ছিল, তখন বাইডেনের বিরুদ্ধে ঘড়ি দেখার অভিযোগ উঠেছিল।
নিহত জওয়ানদের পরিবারের এই অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছে হোয়াইট হাউস। ‘ডেইলি মেল’-কে এক মুখপাত্র বলেছেন, ‘‘এই দাবি মিথ্যা। অ্যাবে গেটের ওই ঘটনার তিন বছর পূরণের সময় বাইডেন নিহত সৈনিকদের পরিবারকে চিঠি দিয়েছেন। এই ১৩ জন আমেরিকান এবং আরও অনেকে যাঁরা আহত হয়েছিলেন, তাঁরা প্রকৃত অর্থে দেশপ্রেমী। তাঁদের এবং তাঁদের পরিবারের কাছে আমরা চিরঋণী থাকব।’’