হাসিনার ইস্তফার পর বাংলাদেশে আন্দোলনকারীদের উল্লাস। ছবি: রয়টার্স
শেখ হাসিনা বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর পদে ইস্তফা দিয়ে দেশ ছাড়তেই আন্দোলনকারীদের উল্লাসের ছবি দেখা গিয়েছিল পদ্মাপারে। উঠে এসেছিল গণভবনে লুটপাটের অভিযোগ। এর পর মঙ্গলবার থেকেই কিছুটা স্বাভাবিক ছন্দে ফেরার চেষ্টা বাংলাদেশে। সে দেশের সংবাদমাধ্যম ‘প্রথম আলো’য় প্রকাশ, মঙ্গলবার সকাল ৬টা থেকে সম্পূর্ণ শিথিল করা হয়েছে কার্ফু। বাংলাদেশের প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের অধীনস্থ আন্তর্বাহিনী জনসংযোগ দফতর থেকে সোমবার রাতেই এক বিজ্ঞপ্তিতে এ কথা জানানো হয়েছে। মঙ্গলবার থেকে খুলে যাচ্ছে অফিস-কাছারি, স্কুল-কলেজও।
হাসিনা বাংলাদেশ ছাড়ার পর সোমবার বিকেলে সেনাপ্রধান ওয়াকার উজ় জ়ামান জানিয়েছেন, অন্তর্বর্তী সরকার গঠন করা হবে। রাতেই জাতির উদ্দেশে ভাষণ দেন বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি মহম্মদ শাহবুদ্দিন। দেশের আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখার জন্য সব রাজনৈতিক দলকে সচেষ্ট হওয়ার বার্তা দিয়েছেন তিনি।
এর পরই বাংলাদেশের আন্তর্বাহিনী জনসংযোগ দফতর থেকে বিজ্ঞপ্তি দিয়ে জানানো হয়, মধ্যরাত ১২টা থেকে মঙ্গলবার সকাল ৬টা পর্যন্ত কার্ফু জারি থাকবে। বিজ্ঞপ্তিতে আরও জানানো হয়েছে, মঙ্গলবার সকাল থেকেই সে দেশের সব সরকারি, আধা সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত, আধা স্বায়ত্তশাসিত ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠান চালু থাকবে। খোলা থাকবে কারখানাও। স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়গুলিও মঙ্গলবার থেকে খোলা থাকবে বলে জানানো হয়েছে বাংলাদেশের আন্তর্বাহিনী জনসংযোগ দফতরের তরফে।
উল্লেখ্য, বাংলাদেশে সাম্প্রতিক কালে ছাত্র-যুবদের জোড়া আন্দোলন এবং সেই আন্দোলন দমনের চেষ্টায় এক বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল। প্রথমে কোটা সংস্কার আন্দোলন ও পরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। দু’দফায় অন্তত আড়াইশো মানুষের মৃত্যু হয়েছে বলে সংবাদ সংস্থা জানাচ্ছে। এর মধ্যে শুধু রবিবারই বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অসহযোগ কর্মসূচিকে ঘিরে উদ্ভূত পরিস্থিতিতে একশোর বেশি মানুষের প্রাণ গিয়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে সোমবার থেকে তিন দিনের সাধারণ ছুটি ঘোষণা করা হয়েছিল। তবে হাসিনার ইস্তফা ও পরবর্তী পরিস্থিতিতে মঙ্গলবার থেকেই অফিস-কাছারি, কলকারখানা ও স্কুল-কলেজ খুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।