সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদ। —ফাইল চিত্র।
রবিবার সকালেই সিরিয়ার রাজধানী দামাস্কাসে ঢুকে পড়েছিলেন বিদ্রোহীরা। তার পরই বিভিন্ন সূত্রে খবর ছড়ায় রাজধানী ত্যাগ করেছেন প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদ। তাঁকে শেষ বার বিমানে উঠতে দেখা গিয়েছিল। কিন্তু সেই বিমানে চেপে তিনি কোথায় গিয়েছেন, তা এখনও অস্পষ্ট। তার মাঝেই খবর মেলে আসাদের বিমান আকাশপথে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না! তবে কি আসাদের বিমান ভেঙে পড়ল? মৃত্যু হয়েছে আসাদের? শুরু হয়েছে জল্পনা।
গত কয়েক দিন ধরেই সিরিয়ার একের পর এক শহর দখল করতে শুরু করে সিরিয়ার দুই বিদ্রোহী সশস্ত্র গোষ্ঠী ‘হায়াত তাহরির আল-শাম’ (এইচটিএস) এবং তাদের সহযোগী ‘জইশ আল-ইজ্জা’র যৌথবাহিনী। রবিবার তারা রাজধানী দামাস্কাসে ঢুকে পড়ার পরই বিমান ধরে এই শহর ছাড়েন বাশার। কিন্তু কিছু ক্ষণ পরই তার বিমান নিখোঁজ হয়ে যায় আকাশপথে। তার পরই নানা জল্পনা শুরু হয়। অনেকেই দাবি করেন, বাশারের বিমান গুলি করে নামানো হয়েছে! যদিও এই সব খবরের সত্যতা প্রকাশ্যে আসেনি। বিদ্রোহী গোষ্ঠী বা সিরিয়ার সরকারের তরফে কোনও বিবৃতি জারি করা হয়নি।
বিমানের অনলাইন ট্র্যাকার সংক্রান্ত একটি ওয়েবসাইট থেকে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, সিরিয়ার একটি বিমান দামাস্কাস বিমানবন্দর থেকে উড়েছিল সকালে। প্রথমে দেখা যায় বিমানটি সিরিয়ার উপকূলীয় অঞ্চলের দিকে যাচ্ছে। পরে আকস্মিক ভাবেই হোমস শহর পার হতেই কোনও খোঁজ পাওয়া যায় না বিমানটির। শেষ পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, বিমানটি অদৃশ্য হওয়ার আগে খুব দ্রুত নীচের দিকে নামতে শুরু করে। তার পর আচমকাই অদৃশ্য হয়ে যায় সেটি। বিভিন্ন প্রতিবেদনে দাবি করা হয়, ওই বিমানেই ছিলেন বাশার।
আকাশপথে বিমান অদৃশ্য হওয়ার নেপথ্যে অনেক কারণ থাকতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। হতে পারে ওই বিমানের ‘জিপিএস জ্যামিং’-এর কারণে বিমানের গতিবিধি সম্পর্কিত তথ্য মেলেনি। কিংবা বিমানের গতিবিধির পুরনো তথ্যই যান্ত্রিক গোলযোগের কারণে দেখা যেতে পারে। তবে বিমানটি গুলি করে নামানোর তথ্যও উড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে না।
অনেকের মতে, দামাস্কাস থেকে বিমানটি রাশিয়ার দিকে যাচ্ছিল। সেখানেই নিরাপদ আশ্রয়ে থাকার বন্দোবস্ত করেছিলেন বাশার। আবার কেউ কেউ বলছেন, দেশ ছেড়ে না-ও পালাতে পারেন সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট। দেশের মধ্যে যে সব এলাকা বিদ্রোহীদের দখলে নয়, সেখানেই আশ্রয় নিয়েছেন তিনি। যদিও কোনও সূত্রই বাশারের সঠিক অবস্থান সম্পর্কে নিশ্চিত করেনি।
সিরিয়ার রাজধানী দামাস্কাসকে ‘স্বাধীন’ বলে ঘোষণা করল সে দেশের বিদ্রোহী গোষ্ঠী। রবিবার সকালেই দামাস্কাসে প্রবেশ করেছেন বিদ্রোহীরা। প্রধানমন্ত্রী মহম্মদ গাজ়ি জালালিও জানিয়েছেন, তিনি ক্ষমতার হস্তান্তরের জন্য প্রস্তুত। এই তপ্ত পরিস্থিতির আবহে সিরিয়ার সরকারি টেলিভিশনে এক ভিডিয়োবার্তায় দামাস্কাসকে ‘স্বাধীন’ শহর বলে দাবি করেছেন বিদ্রোহীরা। বাশার ‘ক্ষমতাচ্যুত’ হয়েছেন বলেও দাবি করছেন তাঁরা। দামাস্কাসের বিভিন্ন প্রান্তে বিদ্রোহীদের বিজয় উল্লাসের ছবিও প্রকাশ্যে আসছে। একই সঙ্গে প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট তথা বাশারের বাবা হাফিজ় আল আসাদের মূর্তি ভাঙার ভিডিয়ো ছড়িয়ে পড়ে সমাজমাধ্যমে। যদিও তার সত্যতা যাচাই করেনি আনন্দবাজার অনলাইন।