Bangladesh Situation

আয়নাঘরে গুমের নির্দেশে যোগ হাসিনার! ইউনূসকে জানাল তদন্ত কমিটি, দাবি বাংলাদেশি সংবাদমাধ্যমের

গুমবিষয়ক তদন্ত কমিশন শনিবার প্রথম অন্তর্বর্তী রিপোর্ট জমা দিয়েছে মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে। গুমের নির্দেশদাতা হিসাবে হাসিনার যোগ পাওয়া গিয়েছে বলে অভিযোগ ওই কমিশনের। র‍্যাবের অস্তিত্ব মোছারও প্রস্তাব দিয়েছে তারা।

Advertisement
আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৪ ডিসেম্বর ২০২৪ ২৩:০৭
(বাঁ দিকে) শেখ হাসিনা এবং মুহাম্মদ ইউনূস (ডান দিকে)।

(বাঁ দিকে) শেখ হাসিনা এবং মুহাম্মদ ইউনূস (ডান দিকে)। —ফাইল চিত্র।

বাংলাদেশের গোপন বন্দিশালা বা আয়নাঘরে মানুষকে আটকে রাখার ঘটনায় নির্দেশদাতা হিসাবে প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার যোগ পাওয়া গিয়েছে বলে অভিযোগ। ‘প্রথম আলো’ অনুসারে, শনিবার বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসকে জমা দেওয়া রিপোর্টে এ কথা জানিয়েছে গুমবিষয়ক তদন্ত কমিশন।

Advertisement

বাংলাদেশে শেখ হাসিনার পতনের পর গুমসংক্রান্ত বিষয় খতিয়ে দেখতে একটি কমিশন গঠন করে অন্তর্বর্তী সরকার। ওই কমিশন শনিবার ইউনূসের কাছে প্রথম অন্তর্বর্তী রিপোর্ট জমা দিয়েছে। ‘প্রথম আলো’ জানিয়েছে, তদন্তে আয়নাঘরে মানুষকে গুম করার নেপথ্যে হাসিনার যোগ পেয়েছে কমিশন। পাশাপাশি বাংলাদেশের র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটেলিয়ন (র‌্যাব)-এর বিলুপ্তিরও প্রস্তাব দিয়েছে গুমবিষয়ক তদন্ত কমিশন।

র‌্যাব মূলত গঠন করা হয়েছিল সন্ত্রাসদমন, মাদক চোরাচালান রোধ, আপৎকালীন পরিস্থিতিতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপের জন্য। তবে হাসিনার জমানায় এই বাহিনীকে বিভিন্ন অবৈধ কাজে ব্যবহার করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। বাংলাদেশে শেখ হাসিনার আমলে বেশ কিছু গুপ্তহত্যারও অভিযোগ রয়েছে। মানবাধিকার লঙ্ঘন, বিরোধীদের দমনপীড়ন, অবৈধ ভাবে আটক করে রাখা, মিথ্যা মামলায় ফাঁসানো, এমনকি গুপ্তহত্যার কাজেও এই বাহিনীকে ব্যবহার করার অভিযোগ দীর্ঘ দিনের। আন্তর্জাতিক স্তরেও এ নিয়ে বিভিন্ন সময়ে চর্চাও হয়েছে।

এই অভিযোগগুলি খতিয়ে দেখতে ইউনূসের অন্তর্বর্তী সরকার একটি কমিশন গঠন করে। কমিশনের নেতৃত্বে ছিলেন অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি মইনুল ইসলাম চৌধুরী। ‘প্রথম আলো’ জানিয়েছে, ওই কমিশনের কাছে এখনও পর্যন্ত দেড় হাজারেরও বেশি অভিযোগ জমা পড়েছে। তার মধ্যে ৭৫৮টি অভিযোগ ইতিমধ্যে যাচাই করে দেখেছেন কমিশনের সদস্যেরা। ইউনূসের প্রেস উইং থেকে জানানো হয়েছে, হাসিনার নির্দেশে গুমের ঘটনা ঘটেছে— এমন যোগসূত্র পেয়েছেন কমিশনের সদস্যেরা।

ইউনূসের সরকার ক্ষমতায় আসার পরেই র‌্যাবের শীর্ষপদে বদল করেছে। ‘হাসিনা-ঘনিষ্ঠ’ হিসাবে পরিচিত হারুন উর-রশিদকে সরিয়ে দেওয়া হয় র‌্যাব প্রধানের পদ থেকে। পরিবর্তে ওই বাহিনীর নতুন ডিজি করা হয় একেএম শহিদুর রহমানকে। সম্প্রতি আয়নাঘরের অস্তিত্বের কথা স্বীকার করেছেন তিনি। হাসিনার সরকারের আমলে একাধিক গুমখুনের অভিযোগও স্বীকার করেছেন তিনি। র‌্যাব সদস্যদের দ্বারা যাঁরা নির্যাতিত হয়েছেন, যাঁদের পরিবার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, তাঁদের কাছে ক্ষমাও চেয়েছেন বাহিনীর বর্তমান প্রধান। এই ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি হবে না বলেও আশ্বস্ত করেন তিনি। যদিও র‌্যাব অস্তিত্ব থাকবে কি না, সে বিষয়টি অবশ্য ইউনূসের অন্তর্বর্তী সরকারের সিদ্ধান্তের উপরেই ছেড়ে দেন শহিদুর।

এরই মধ্যে শনিবার গুমসংক্রান্ত তদন্ত কমিশন অন্তর্বর্তী রিপোর্ট জমা দিল ইউনূসের কাছে। কমিশনের প্রধান জানিয়েছেন, তিন মাস পরে তাঁরা আরও একটি অন্তর্বর্তী রিপোর্ট জমা দেবেন। কমিশনের তদন্ত সম্পূর্ণ হয়ে চূড়ান্ত রিপোর্ট জমা দিতে আরও অন্তত এক বছর সময় লাগবে বলে জানিয়েছেন তিনি।

Advertisement
আরও পড়ুন