(বাঁ দিকে) ২০২২ সালের জুলাইয়ে শ্রীলঙ্কার রাস্তায় বিক্ষুব্ধ জনতা, বাংলাদেশের রাস্তায় উল্লাস বিক্ষোভকারীদের (ডান দিকে)। ছবি: এক্স (সাবেক টুইটার) থেকে।
কলম্বোর পরে ঢাকা। তফাতটা শুধু পতাকার রঙে। কিন্তু ২৫ মাসের ব্যবধানে ভারতের দুই পড়শি দেশে গণরোষের ধাঁচ হুবহু এক। দু’ক্ষেত্রেই জনতার নিশানায় শাসকের প্রাসাদ।
২০২২ সালের জুলাই মাসে আর্থিক মন্দায় ধ্বস্ত শ্রীলঙ্কায় বিক্ষুব্ধ জনতার নিশানা হয়েছিল প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজাপক্ষে এবং তদারকি প্রধানমন্ত্রী রনিল বিক্রমসিঙ্ঘের (গণরোষের জেরে গোতাবায়ার দাদা মাহিন্দা প্রধানমন্ত্রী পদে ইস্তফা দিয়ে দেশ ছাড়ার পরে যিনি দায়িত্ব নিয়েছিলেন) সরকারি বাসভবনের দখল নিয়েছিল বিদ্রোহী জনতা। সোমবার বাংলাদেশের সদ্য পদত্যাগী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকারি আবাস গণভবনেরও একই পরিণতি হল।
শুধু গণভবন নয়, হাসিনার পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্মৃতি বিজড়িত ৩২ নম্বর ধানমন্ডির বাড়ি এবং তাঁর গড়া দল আওয়ামী লীগের সদর দফতরও ক্ষোভের নিশানা হয়েছে। ধানমন্ডির ওই বাড়িতেই পাঁচ দশক আগে আর এক রক্তাক্ত অগস্টে অভ্যুত্থানকারী সেনাদের গুলিতে নিহত হয়েছিলেন তৎকালীন রাষ্ট্রপতি বঙ্গবন্ধু। তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে বঙ্গবন্ধুর মূর্তিও ভাঙা হয়েছে সোমবার।
হাসিনার মতোই গণবিক্ষোভের জেরে শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট পদ থেকে ইস্তফা দিতে বাধ্য হয়েছিলেন গোতাবায়া। সেনা তাঁকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নিয়ে যাওয়ার পর কলম্বোয় তাঁর সরকারি বাসভবন তছনছ করা হয়েছিল। লুটের অভিযোগও উঠেছিল। সুইমিং পুলে নেমে পড়েছিলেন আন্দোলনকারীদের একাংশ। এ বার হাসিনাও একই ভাবে প্রধানমন্ত্রী পদ থেকে ইস্তফা দিয়ে ‘নিরাপদ ঠিকানা’র সন্ধানে ঢাকা ছেড়েছেন। তিনি বাংলাদেশ ছাড়ার পর গণভবনেও সোমবার হয়েছে কলম্বোকাণ্ডের পুনরাবৃত্তি। সমাজমাধ্যমে কয়েকটি ভিডিয়ো প্রকাশিত হয়েছে (আনন্দবাজার অনলাইন তার সত্যতা যাচাই করেনি)। সেই ভিডিয়োয় দেখা গিয়েছে, গণভবনের ভিতরে পুকুরে নেমেছেন বহু মানুষ। সাঁতার দিচ্ছেন তাঁরা। হাসিনার বিছানায় শুয়ে রয়েছেন বিক্ষোভকারী। এক হামলাকারীকে দেখে গিয়েছে গণভবনের ভিতর থেকে পোষ্য ছাগল কোলে নিয়ে বেরোতেও!