Kabul

Afghanistan: কাবুলে ‘রুদ্ধসংগীত’, তালিবান আতঙ্কে ব্রাত্য আফগানিস্তানের জনপ্রিয় মহিলা অর্কেস্ট্রা

কাবুলের একটি অনাথ আশ্রমের বাসিন্দা ১৩-২০ বছরের কিশোরী ও তরুণীদের নিয়ে ফারসি সংগীতের দেবী ‘জোহরা’র নামে গড়া হয়েছিল অর্কেস্ট্রা দলটি।

Advertisement
সংবাদ সংস্থা
কাবুল শেষ আপডেট: ০৪ সেপ্টেম্বর ২০২১ ১১:৩৫
সংগীত পরিবেশনে ‘জোহরা’।

সংগীত পরিবেশনে ‘জোহরা’। ফাইল চিত্র।

গানবাজনা বন্ধের ফরমান জারি হয়েছিল আগেই। বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল সংগীত স্কুলগুলি। পাশাপাশি, বাড়ির বাইরে মেয়েদের বেরনো নিয়ে জারি হয়েছিল নানা বিধিনিষেধ। তালিবানের কাবুল দখলের পর সেই ‘নিয়ম’ মেনেই স্তব্ধ হয়ে গিয়েছে আফগান মহিলাদের জনপ্রিয় অর্কেস্ট্রা দল ‘জোহরা’।

কাবুলের একটি অনাথ আশ্রমের বাসিন্দা ১৩-২০ বছরের কিশোরী ও তরুণীদের নিয়ে ফারসি সংগীতের দেবীর নামে গড়া হয়েছিল অর্কেস্ট্রা দলটি। সঞ্চালিকা ২৪ বছরের নেগিন খপ্লক। তিনিই ছিলেন দেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় মহিলা অর্কেস্ট্রা দলের মুখ। সনাতন আফগানি ধারার পাশাপাশি পশ্চিমী সংগীতও পরিবেশন করত ‘জোহরা’। সিডিনির অপেরা হাউস থেকে দাভোসে ‘ওয়ার্ল্ড ইকনমিক ফোরাম’-এক অধিবেশন, বিশ্বের নানা প্রান্তে সংগীত পরিবেশন করেছেন দলের সদস্যারা। পেয়েছেন অনেক প্রশংসা ও সম্মাননা। কিন্তু সে সবই অতীত হয়ে গিয়েছে এক লহমায়।

কাবুলে তালিবান রাজ কায়েমের পরে আমেরিকায় আশ্রয় নিয়েছেন নেগিন। দেশে ছাড়ার আগে নষ্ট করে ফেলেছেন ২০১৪ সালে তৈরি হওয়া ‘জোহরা’-র সমস্ত ইতিহাস। ছবি এবং সংবাদপত্রে প্রকাশিত খবরগুলি পুড়িয়ে দিয়েছেন। তালিবান যাতে সহজে অর্কেস্ট্রার সদস্যাদের চিহ্নিত করতে না পারে, সে কারণেই এই সাবধানতা। নেগিন বলেন, ‘‘মেয়েদের প্রায় সমস্ত স্বাধীনতাই তো চলে গেল। রাস্তায় বেরোলে এখন বোরখা পরতেই হবে। সঙ্গে থাকতে হবে কোনও পুরুষকে। মেয়েদের সংগীত চর্চা তো অনেক দূরের প্রশ্ন।’’

Advertisement

কাবুলের ‘ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ মিউজিক’ (এএনআইএম)-এ নিয়মিত দেখা যেত ‘জোহরা’কে। নেগিন জানিয়েছেন, আফগানিস্তানের বিভিন্ন প্রান্ত থেকেই অনেক শিল্পী আসতেন সেখানে। দিনভর সংগীতে মুখরিত থাকতে এএনআইএম। কিন্তু তালিবানের নির্দেশে বন্ধ হয়ে গিয়েছে সেই প্রতিষ্ঠান। ভেঙে ফেলা হয়েছে বহু বাদ্যযন্ত্র।

কাবুল দখলের পরে প্রথম সাংবাদিক বৈঠকে তালিবান মুখপাত্র জবিউল্লা মুজাহিদ জানিয়েছিলেন, ২০২১ থেকে পরিবর্তিত শাসন দেখতে চলেছে আফগানিস্তান। দু’দশক আগের অবস্থান থেকে তালিবান অনেকটা সরে এসেছে বলেও দাবি করেছিলেন তিনি। এক ধাপ এগিয়ে তালিবান সাংস্কৃতিক সংগঠনের প্রধান এমানুল্লাহ সামাগনি বলেছিলেন, ‘‘যদি মহিলারা সরকার কিংবা কর্মক্ষেত্রে অংশ নিতে চান তাঁদের স্বাগত।’’

যদিও সেই আশ্বাসে ভরসা রাখতে পারেননি নেগিন। কারণ, তালিবানের ‘শরিয়তি ব্যাখ্যা’য় সংগীতের পথ যে রুদ্ধ, সে বিষয়ে নিশ্চিত ছিলেন তিনি।

Advertisement
আরও পড়ুন