Bangladesh Unrest

ঘটেছে ক্ষোভের প্রকাশ

Advertisement
গোলাম সারওয়ার
ঢাকা শেষ আপডেট: ০৭ অগস্ট ২০২৪ ০৮:০৫
ঢাকা গণভবনের বাইরে লোকে লোকারণ্য। সোমবার। ছবি সৌজন্যে লেখক।

ঢাকা গণভবনের বাইরে লোকে লোকারণ্য। সোমবার। ছবি সৌজন্যে লেখক।

সোমবার সন্ধ্যায় গণভবনের সামনে এসে দাঁড়িয়েছিলাম। সঙ্গে স্ত্রী এবং দুই নাবালিকা মেয়ে। গণভবনে তখন জনতা আছড়ে পড়েছে যেন। আমারও আনন্দ হচ্ছিল। আবেগতাড়িত হয়ে পড়ছিলাম।

Advertisement

সাতের দশকে জন্ম হলেও দেশের স্বাধীনতা প্রাপ্তি আমি দেখিনি। আমাকে যদি জিজ্ঞাসা করা হয়, তা হলে বলব, এ বা যা হল, ততটা আশা করিনি। দেশের তরুণ প্রজন্মের স্বতঃস্ফূর্ত আবেগ ও লড়াই আমাকে অবাক করেছে। শেখ হাসিনা সরকারের নানা নীতি, বিপর্যস্ত অর্থনীতি, শিক্ষাব্যবস্থা— সব দিক থেকে মানুষ বিরক্ত ছিলেন। আমরা বুঝতে পারছিলাম, ঠিক হচ্ছে না কিছুই। সেই ক্ষোভেরই বহিঃপ্রকাশ হয়েছে সমবেত ভাবে।

ঢাকা শহরের ইকবাল রোডে আমার বাসস্থান। মাত্র ৫ মিনিটের হাঁটাপথ প্রধানমন্ত্রীর বাসভবন বা গণভবন থেকে। সোমবার ‘লং মার্চ টু ঢাকা’ কর্মসূচি, গণভবন ঘেরাও করার যে সিদ্ধান্ত হয়েছিল, তা নিয়ে একটু আশঙ্কা ছিল। ভয় পাচ্ছিলাম, আবার না খারাপ কিছু ঘটে! আসলে রবিবার সন্ধ্যা ৬টা থেকে কার্ফু জারি ছিল। ইন্টারনেট বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল। সোমবার সকাল ১১টা নাগাদ দু’একটি নিউজ় চ্যানেলে দেখাচ্ছিল, খুব বড় মিছিল আসছে। বিশেষ করে উত্তরা থেকে ঢাকার দিকে। যেটিকে ঢাকার ‘গেটওয়ে’ বলা চলে। গাজিপুর টোঙ্গি-সহ বেশ কিছু এলাকার মানুষ উত্তরা হয়ে ঢাকা শহরে আসেন, ওই দিক থেকে যখন বড় মিছিল আসার খবর পেলাম, উৎকণ্ঠা আরও বাড়ল।

কিন্তু রবিবার থেকে কোথাও যেন একটা ইঙ্গিত ছিল। গত রাত থেকে যখন সেনা নামানো হয়েছিল, তাঁরা এবং পুলিশ সাধারণ মানুষের, ছাত্রদের সঙ্গে যে ব্যবহার করছিলেন, তখনই মনে হয়েছিল, নির্ণায়ক কিছু একটা হতে চলেছে।

ঠিক ছিল, সোমবার লং মার্চ প্রথমে যাবে শহিদ মিনারের দিকে। তার পরে গণভবনের দিকে আসবে। কিন্তু মিছিল প্রথম থেকেই গণভবনের দিকে যেতে চাইছিল। সেনাবাহিনী, পুলিশ বাধা দেয়। কিছুক্ষণ আটকেও রাখে। লাভ হয়নি।

হঠাৎ খবর আসে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পদত্যাগ করে দেশ ছাড়ছেন। মিছিলের উচ্ছ্বাস বাঁধ ভাঙে। সকলে গণভবনের দিকে এগোতে শুরু করেন। ঢেউ আছড়ে পড়ে সেখানে। খবর পেয়ে যখন আমি আমার পরিবারের সদস্যদের নিয়ে গণভবনের দিকে যাওয়ার চেষ্টা করলাম, তখন আর সেখানে প্রবেশের পরিস্থিতি ছিল না।

(লেখক: বেসরকারি সংস্থার কর্মী)

অনুলিখন: দয়াল সেনগুপ্ত

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
আরও পড়ুন
Advertisement