বুধবার রাতে একদল জনতার ভাঙচুর শুরু করেন ঢাকায় ৩২ নম্বর ধানমন্ডির বাড়িতে। ছবি: ভিডিয়ো থেকে প্রাপ্ত।
বাংলাদেশে শেখ হাসিনা-বিরোধীদের ক্ষোভ ফের গিয়ে পড়ল ঢাকার ৩২ নম্বর ধানমন্ডির বাড়িতে। বুধবার রাতে ধানমন্ডির ওই বাড়িতে শেখ মুজিবুর স্মৃতি জাদুঘরে গিয়ে বিক্ষোভ দেখান জনতা। বাংলাদেশি সংবাদমাধ্যম ‘প্রথম আলো’য় প্রকাশিত খবর অনুসারে, বিক্ষোভকারীরা ‘২৪-এর বিপ্লবী ছাত্র জনতা’। ভারতীয় সময় অনুসারে সন্ধ্যা সাড়ে ৭টা থেকে শুরু হয় বিক্ষোভ। ‘প্রথম আলো’ জানিয়েছে, বিক্ষোভকারীরা ওই বাড়িতে প্রবেশ করে ভাঙচুরও শুরু করেছেন।
প্রচুর বিক্ষোভকারী ভিড় করেছেন ধানমন্ডির ৩২ নম্বর বাড়ির সামনে। তাঁরা স্বৈরাচার, ফ্যাসিবাদ ও আওয়ামী লীগ-বিরোধী বিভিন্ন স্লোগান দিতে শুরু করেন। ‘প্রথম আলো’র খবর অনুসারে, বিক্ষোভকারীরা প্রথমে বাড়ির গেট ভেঙে ফেলেন। তার পরে ভিতরে প্রবেশ করে ভাঙচুর শুরু করে দেন। একটি ভিডিয়োয় দেখা গিয়েছে বাড়িত উপরের তলায় অগ্নিসংযোগও করা হয়েছে।
শেখ হাসিনার সরকারের পতনের পরেও গত অগস্টে ৩২ নম্বর ধানমন্ডির বাড়িতে জনরোষ আছড়ে পড়েছিল। সেই থেকে বাড়িটি দৃশ্যত পরিত্যক্ত অবস্থাতেই পড়েছিল। এই বাড়িতেই পাঁচ দশক আগে বাংলাদেশে রক্তাক্ত পালাবদলের সময় গুলিতে ঝাঁঝরা হয়ে গিয়েছিল শেখ মুজিবুর রহমানের দেহ। মুজিব-কন্যা হাসিনা প্রধানমন্ত্রী হয়ে ৩২ নম্বর ধানমন্ডির সেই বাড়িটিকে পরিণত করেছিলেন সংগ্রহশালায়। বুধবার বাংলাদেশে হাসিনা সরকারের পতনের ছ’মাস অতিক্রান্ত হচ্ছে। বাংলাদেশবাসীর উদ্দেশে আজই একটি ভার্চুয়াল ভাষণ দেওয়ার কথা রয়েছে হাসিনার। তার ভার্চুয়াল ভাষণ শুরুর আগেই ফের জনরোষের মুখে পড়ল মুজিবুরের স্মৃতি বিজড়িত ৩২ নম্বর ধানমন্ডির বাড়ি।
এর পরে ধানমন্ডির ৫/এ-তে আওয়ামী লীগ নেত্রী হাসিনার বাসভবন সুধা সদনেও আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। প্রত্যক্ষদর্শীরা ‘প্রথম আলো’কে জানান, রাতে সাড়ে ১০টার পরে ধানমন্ডিতে হাসিনার বাসভবনে আগুন ধরিয়ে দেন কয়েকজন।
‘প্রথম আলো’র প্রতিবেদন অনুসারে, বুধবার বিকেল থেকেই ধানমন্ডির ৩২ নম্বর বাড়িটি গুঁড়িয়ে দেওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়ে বাংলাদেশে বিভিন্ন পোস্ট ছড়িয়ে পড়ে সমাজমাধ্যমে। সন্ধ্যায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম আহ্বায়ক হাসনাত আবদুল্লাহও সমাজমাধ্যমে একটি পোস্ট করেন। তিনি লেখেন, “আজ রাতে বাংলাদেশ ফ্যাসিবাদের তীর্থভূমি মুক্ত হবে।”
বুধবার বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতৃত্ব বাংলাদেশের সংবাদমাধ্যমগুলির উদ্দেশ্যেও বার্তা দিয়ে রেখেছেন। তাঁদের বক্তব্য, হাসিনার ভাষণ কোনও সংবাদমাধ্যম প্রচার করলে, সেই গণমাধ্যম হাসিনাকে সহযোগিতা করছে বলে ধরে নেওয়া হবে।