স্ত্রী এবং তাঁর প্রেমিকের বিয়ে দেওয়ার পরে নবদম্পতির সঙ্গে ছবি তুলেছিলেন বাবলু (বাঁ দিকে)। —ফাইল চিত্র।
উত্তরপ্রদেশের মেরঠে প্রাক্তন মার্চেন্ট নেভি অফিসার সৌরভ রাজপুতকে খুনের ঘটনা প্রকাশ্যে আসার পর ভয় পেয়ে গিয়েছিলেন সে রাজ্যেরই আর এক যুবক বাবলু। স্ত্রীর পরকীয়ার কথা জানতে পেরে প্রেমিকের সঙ্গেই তাঁর বিয়ে দিয়ে দেন তিনি! কিন্তু সেই ঘটনার কয়েক দিন কাটতে না কাটতেই আবার তাঁর স্ত্রী প্রেমিকের সংসার ছেড়ে চলে এলেন বাবলুর কাছে! না, স্বেচ্ছায় নয়। নতুন শাশুড়ির অনুরোধেই ফিরতে হয় তাঁকে। সন্তানদের ছেড়ে এসেছিলেন বাবলুর স্ত্রী। যা দেখে কষ্ট পেয়েছেন তাঁর নতুন শাশুড়ি। তাঁর মতে, তিনি চান না বাচ্চারা কষ্ট পাক। বঞ্চিত হোক মায়ের ভালবাসা থেকে!
প্রেমিকের সংসার ছেড়ে ফিরে আসার পর ওই মহিলার এখন ঠাঁই হয়েছে বাবলুরই সংসারে! তবে এই নিয়ে আপত্তি তোলেননি বাবলু। তিনি স্পষ্ট জানান, এর পর কিছু হলে তার জন্য দায়ী থাকবেন নিজেই।
উত্তরপ্রদেশের সন্ত কবির নগরের এক গ্রামের বাসিন্দা বাবলু। ২০১৭ সালে গোরক্ষপুরের মেয়ে রাধিকার সঙ্গে বিয়ে হয়েছিল বাবলুর। তিনি পেশায় পরিযায়ী শ্রমিক। ফলে বাড়িতে থাকতেন না। তাঁর দুই সন্তান রয়েছে। কিছু দিন আগে তিনি জানতে পারেন, বিকাশ নামের এক যুবকের সঙ্গে তাঁর স্ত্রী বিবাহ-বহির্ভূত সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েছেন। জানতে পেরে গ্রামে ফিরে আসেন বাবলু। নজর রাখেন স্ত্রীর উপর। খোঁজখবর নিয়ে স্ত্রীর প্রেমের ব্যাপারে নিশ্চিত হন। তবে তত দিনে মেরঠের মতো হাড়হিম করা কাণ্ড ঘটে গিয়েছে। বিভিন্ন জায়গায় চলছে সেই নিয়েই আলোচনা। সব দিক বিবেচনা করে বাবলু ঠিক করেন, বিকাশের সঙ্গে রাধিকার বিয়ে দেবেন! সন্তানদের একাই মানুষ করবেন।
গ্রামের শিবমন্দিরে স্ত্রীকে নিয়ে যান যুবক। প্রেমিক ও তাঁর চার হাত এক করে দেন। নিজে দাঁড়িয়ে তাঁদের মালাবদল দেখেন। নবদম্পতির সঙ্গে ছবিও তোলেন। স্ত্রীর বিয়ের সাক্ষী থাকা বাবলু বলেন, ‘‘আমি আমার নিজের কথা ভেবেই এই সিদ্ধান্ত নিয়েছি। চারপাশে যে সব ঘটনা ঘটছে, তা দেখার পর নিজের জীবন নিয়ে ভয়ে ছিলাম। তাই আমি ঠিক করি স্ত্রীকে তাঁর প্রেমিকের সঙ্গে বিয়ে দেব। এতে আমরা দু’জনেই ভাল থাকব।’’
বিয়ের পর গোরক্ষপুরে বিকাশের বাড়িতে গিয়ে উঠেছিলেন রাধিকা। কিন্তু কয়েক দিন পরেই বিকাশের মা, রাধিকাকে বাবলুর সংসারে ফিরে যেতে বলেন। তিনি চাননি বাচ্চাগুলো কষ্ট পাক। মাকে ছাড়া বড় হোক। তাঁর কথায়, ‘‘বিকাশ আমার ছেলে বটে। তবুও আমি রাধিকাকে বাবলুর কাছে ফিরে যেতে বলেছি। কারণ বাচ্চা দু’টির জন্য আমার কষ্ট হচ্ছিল।’’ রাধিকা ফিরে যান। শুধু তা-ই নয়, তাঁকে মেনেও নেন বাবলু।