ঙ্গলবার শুভেন্দুর নাম না করেই দিলীপ বলেন, ‘‘দল ইতিমধ্যেই দক্ষিণবঙ্গের একজন বিরোধী দলনেতা পেয়েছে। এ বার উত্তরবঙ্গ থেকে রাজ্য সভাপতি পেল।’’
একটু কমও নয়। এক চুল বেশিও নয়। বাংলার রাজনীতির দাঁড়িপাল্লায় উত্তর এবং দক্ষিণবঙ্গকে সমান ওজন দিতে চায় বিজেপি। উত্তরবঙ্গের বিজেপি সাংসদকে বিজেপির রাজ্য সভাপতি করার সিদ্ধান্ত সেই ভাবনা থেকেই। কারণ দক্ষিণবঙ্গ ইতিমধ্যেই এক জন বিরোধী দলনেতা (শুভেন্দু অধিকারীকে) পেয়েছে। রাজ্যে দলের সাম্প্রতিক নেতৃত্ব বদল নিয়ে এমনই ব্যাখ্যা দিলেন বিজেপির নতুন সর্বভারতীয় সহ-সভাপতি দিলীপ ঘোষ।
মঙ্গলবার সকালেই বিজেপি-র রাজ্য সভাপতি তথা বালুরঘাটের বিজেপি সাংসদ সুকান্ত মজুমদার কলকাতায় এসে তাঁর নতুন দায়িত্ব বুঝে নেন। কলকাতার বিজেপি দফতরে সেই সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে হাজির ছিলেন দিলীপও। তাঁর কাছে দলের নেতৃত্ব বদলের কারণ জানতে চাওয়া হলে দিলীপ বলেন, ‘‘উত্তরের সভাপতি, দক্ষিণের বিরোধী দলনেতা, আসলে সংগঠনে ব্যালেন্স করা হচ্ছ।’’
রাজ্য বিজেপি-র সভাপতি পদ থেকে দিলীপকে সরিয়ে সোমবারই তাঁকে বিজেপি-র সর্বভারতীয় সহ সভাপতি পদ দেওয়া হয়। তাঁর জায়গায় রাজ্য বিজেপি-র সভপতি পদে দায়িত্ব নেন সুকান্ত। রাজনৈতিক মহলে এই রদবদলের নানা ব্যাখ্যা দেওয়া হলেও সাংবাদিকদের সামনে সুকান্তকে আলিঙ্গন করতে দেখা যায় দিলীপকে। পরে তিনি বলেন, ‘‘সুকান্তর বয়স কম, অভিজ্ঞতা কম হতে পারে। তবে ও পোক্ত, বুদ্ধিমান এবং শিক্ষিত। দলের নেতৃত্ব নিশ্চয়ই ভবিষ্যতের কথা ভাবনা চিন্তা করেই একজন যুবকের উপর এই দায়িত্ব দিয়েছেন।’’ প্রাক্তন বিজেপি-র রাজ্য সভাপতিকে প্রশ্ন করা হয়েছিল, সুকান্ত তো উত্তরবঙ্গের মানুষ। দক্ষিণবঙ্গের পরিস্থিতি বুঝতে কি ওঁর সমস্যা হবে না! তাতে দিলীপের জবাব, ‘‘এত দিন দলের বিষয়টি কিছুটা কলকাতাকেন্দ্রিক ছিল। এ বার দল সাংগঠনিক ভারসম্য রক্ষার চেষ্টা করছে।’’
রাজ্যের বিজেপি-র প্রধান বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু দলের মধ্যে দিলীপের প্রতিদ্বন্দ্বী বলে পরিচিত রাজনৈতিক মহলে। মঙ্গলবার শুভেন্দুর নাম না করেই দিলীপ বলেন, ‘‘দল ইতিমধ্যেই দক্ষিণবঙ্গের একজন বিরোধী দলনেতা পেয়েছে। এ বার উত্তরবঙ্গ থেকে রাজ্য সভাপতি পেল। দু’জনে মিলে দলের সাংগঠনিক প্রক্রিয়ার ব্যালেন্স করবেন।’’ কিন্তু সুকান্ত কি দায়িত্ব সামলাতে পারবেন? দিলীপের উত্তর, ‘‘যারা বোঝে না, তারা সারা জীবনেও বোঝে না। যাদের বোঝার তারা দু’দিনেই বুঝে যায়।’’
মঙ্গলবার বিজেপি-র রাজ্য সভাপতি পদে নতুন ইনিংস অবশ্য বেশ আক্রমণাত্মক ভঙ্গিতেই শুরু করেছেন সুকান্ত। তিনি বলেছেন, ‘‘পশ্চিমবঙ্গকে আফগানিস্তান হওয়া থেকে বাঁচাতে বিজেপি-র লড়াই চলবে। বাংলায় তালিবানি শাসন চলতে দেবে না বিজেপি।’’ পরে বিজেপি নেতাদের দল বদলের প্রসঙ্গ টেনেও সুকান্ত বলেন, ‘‘যাঁরা বিজেপি-র কর্মী, লড়াই করতে চান, তাঁরা দলেই থাকেন। লড়াই যাঁরা করেন, তাঁরা দল ছাড়েন না। যদি কেউ মনে করেন দল বদলে বিজেপি-কে শেষ করবেন। তাঁরা জেনে রাখুন এ ভাবে বিজেপি-কে শেষ করা যায় না।’’ বিজেপি থেকে সদ্য তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন গায়ক রাজনীতিবিদ বাবুল সুপ্রিয়। তাঁর দলবদল প্রসঙ্গেই সুকান্তর এই মন্তব্য করেছেন বলে অনুমান। যদিও মঙ্গলবার সকালে কলকাতায় পা দিয়ে এই সুকান্তই বলেছিলেন, ‘‘বাবুল দলে থাকলে ভালই হতো।’’