West Bengal Police STF

বাংলাদেশের জঙ্গি সংগঠন যোগে গ্রেফতার রাজ্যের আরও এক যুবক, চেন্নাই থেকে ধরে আনল এসটিএফ

ধৃতের পরিবারের দাবি, যুবক কোনও ভাবেই জঙ্গি সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত থাকতে পারেন না। তাঁকে ফাঁসানো হয়েছে।

Advertisement
আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ২৯ জুন ২০২৪ ১৮:৪০

—প্রতীকী চিত্র।

বাংলাদেশের নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠনের সঙ্গে যোগ থাকার অভিযোগে কয়েক দিন আগে পশ্চিম বর্ধমানের কাঁকসা থেকে এক কলেজপড়ুয়াকে গ্রেফতার করেছিল এসটিএফ। এ বার পূর্ব বর্ধমানের মঙ্গলকোটের এক যুবককেও ‘জঙ্গি সংশ্রবে’র অভিযোগে গ্রেফতার করা হল। ধৃতের নাম আনোয়ার শেখ। পেশায় পরিযায়ী শ্রমিক ওই যুবককে চেন্নাই থেকে গ্রেফতার করেছে এসটিএফ। যদিও পরিবারের দাবি, আনোয়ার কোনও ভাবেই জঙ্গি সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত থাকতে পারেন না। তাঁকে ফাঁসানো হয়েছে।

Advertisement

এসটিএফ সূত্রে খবর, চেন্নাইয়ের ভিরুগামবাক্কম এলাকা থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে আনোয়ারকে। শুক্রবার তাঁকে চেন্নাই আদালতে পেশ করা হয়। ট্রানজিট রিমান্ডে শনিবার দুর্গাপুর মহকুমা আদালতে হাজির করানো হলে আনোয়ারের ১৪ দিনের এসটিএফ হেফাজতের নির্দেশ দেন বিচারক। গত ২২ জুন কাঁকসা থেকে জঙ্গি সন্দেহে গ্রেফতার হয়েছিলেন মহম্মদ হাবিবুল্লা। এসটিএফ সূত্রের দাবি ছিল, বাংলাদেশের নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠন আনসার আল ইসলামের মডিউল ‘শাহদাত’-এর সদস্য ছিলেন ওই পড়ুয়া। পরে হাওড়া স্টেশন থেকে গ্রেফতার করা হয় হাবিবুল্লার এক সঙ্গীকে। তদন্তকারীদের দাবি, ২০২০ সাল থেকে হোয়াট্‌সঅ্যাপে ও ব্লগের মাধ্যমে এক যুবকের সঙ্গে যুক্ত হয়ে জেহাদি হয়েছিলেন আনোয়ারও। হাবিবুল্লা ও তাঁর সঙ্গী গ্রেফতার হওয়ার পরেই চেন্নাই পালিয়ে গিয়েছিলেন তিনি।

মঙ্গলকোটের ভাগ্যগ্রাম অঞ্চলের কুলসোনা গ্রামের ঢালাইপাড়ার বাসিন্দা আনোয়ার। অ্যাসবেস্টসের ছাউনি দেওয়া ঘর। ভেঙেচুরেও গিয়েছে। ছোট্ট সেই ঘরে আনোয়ারের তিন নাবালিকা মেয়ে ও স্ত্রী রেজিনা থাকেন। রেজিনা জানান, শুক্রবার বিকেলে তিনি খবর পান, তাঁর স্বামীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। স্ত্রী বলেন, ‘‘পরে জানতে পারি, জঙ্গি সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত থাকার সন্দেহে ওকে ধরা হয়েছে। আমার স্বামী এই ধরনের কাজ করতেই পারেন না।’’

স্থানীয় সূত্রে খবর, আনোয়ারেরা তিন ভাই, পাঁচ বোন। প্রায় ২০ বছর আগে তাঁদের মা মারা যান। তার পর বাবা আনিসুর রহমান ফের দ্বিতীয় বিয়ে করে গ্রাম ছেড়ে পালিয়ে যান। বিধবা নিঃসন্তান মাসি জাবিদা বিবি তখন আনোয়ার ও তাঁর ভাইবোনদের দায়িত্ব নেন। তিনি কুলসোনা গ্রামেই থেকে যান। জাবিদা বিবি বলেন, ‘‘আমরা খুব গরিব পরিবার। লোকের কাছে চেয়েচিন্তে ওদের বড় করেছি। এখন ওরা খেটে খায়। ওরা কেউ জঙ্গি হতে পারে না।’’ তিন ভাইয়ের মধ্যে আনোয়ার মেজ। বড় দাদা আলিম শেখ মোটরভ্যান চালান। ছোট ভাই সেলিম চেন্নাইয়ে একটি চামড়ার কারখানায় কাজ করেন। আনোয়ার আগে উত্তরপ্রদেশে কাজ করতেন। পরে তিনি চেন্নাইও চলে যান। সেখানে একটি লন্ড্রিতে কাজ করতেন। আনোয়ারের গ্রেফতার নিয়ে গ্রামবাসী মিরাজ শেখ, সইদুর রহমানেরা বলেন, ‘‘আমরা অবাক হয়ে গিয়েছি। আনোয়ার নিরীহ প্রকৃতির ছেলে। অতি দরিদ্র পরিবার। রুজি-রোজগারের স্বার্থে বাইরে কাজ করতে যেতে হয়েছে। আমাদের মনে হয়, কোথাও ভুল হচ্ছে! ভাল করে খতিয়ে দেখা উচিত।’’

Advertisement
আরও পড়ুন