হাই কোর্টের নির্দেশে নিরাপত্তা সংক্রান্ত একাধিক সিদ্ধান্ত নবান্নের। ফাইল চিত্র।
কলকাতা হাই কোর্টের নির্দেশের পরিপ্রেক্ষিতে হনুমান জয়ন্তী নিয়ে নবান্নে বৈঠকে বসলেন রাজ্য প্রশাসনের শীর্ষ কর্তারা। বৃহস্পতিবার রাজ্য জুড়ে হনুমান জয়ন্তী পালন করবে বেশ কিছু সংগঠন। শহর এবং শহরতলিতে বেশ কিছু জায়গায় বেরোবে ধর্মীয় শোভাযাত্রাও। রামনবমীর ঘটনাবলি থেকে শিক্ষা নিয়ে ওই দিন অশান্তি এবং অপ্রীতিকর পরিস্থিতি এড়াতে একগুচ্ছ পদক্ষেপ করার সিদ্ধান্ত নিয়ে রাজ্য সরকার। মঙ্গলবারের বৈঠকে রামনবমীর মিছিলের পর অশান্ত হওয়া এলাকাগুলিতে ৩ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন রাজ্যের মুখ্যসচিব হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদীও। ইতিমধ্যেই পশ্চিমবঙ্গে কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে বলে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের তরফে জানানো হয়েছে।
বৈঠকে স্থির হয়েছে, এই সব এলাকায় বড় সংখ্যায় রাজ্য পুলিশ থাকবে। কিন্তু যেখানে প্রয়োজন হবে, সেখানে কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন করা হবে। আপাতত স্থির হয়েছে, হাওড়া এবং ব্যারাকপুর পুলিশ কমিশনারেটে ৩ কোম্পানি আধাসেনা মোতায়ন করা হবে। রামনবমীর মিছিলকে কেন্দ্র করে অশান্তি ছড়িয়ে পড়ে হাওড়া কমিশনারেটের অন্তর্ভুক্ত শিবপুর এবং চন্দননগর কমিশনারেটের অন্তর্ভুক্ত হুগলির রিষড়ায়। ধর্মীয় শোভাযাত্রায় স্বেচ্ছাসেবকদের তালিকা পুলিশের কাছে জমা করতে হবে। সব স্বেচ্ছাসেবককে পুলিশের তরফে পরিচয়পত্র (আই কার্ড) দেওয়া হবে। পরিচয়পত্র ছাড়া কাউকে মিছিলে অংশ নিতে দেওয়া হবে না। বৈঠকে ভার্চুয়াল মাধ্যমে উপস্থিত ছিলেন পুলিশ কমিশনাররাও।
Central Armed Police Forces deployed in West Bengal to assist state police in maintaining law and order during observance of Hanuman Jayanti.
— Spokesperson, Ministry of Home Affairs (@PIBHomeAffairs) April 5, 2023
হনুমান জয়ন্তীর দিন শহরে বেশ কয়েকটি মিছিল বেরোনোর কথা। তার আগে বুধবার একটি বিজ্ঞপ্তি দিয়ে হনুমান জয়ন্তীর শোভাযাত্রা নিয়ে একাধিক নির্দেশিকা জারি করেছে লালবাজারও। লালবাজারের তরফে প্রকাশিত বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, বৃহস্পতিবার যে কোনও মিটিং-মিছিলের জন্য উদ্যোক্তাদের আগাম অনুমতি নিতে হবে পুলিশের। কলকাতা পুলিশের অনলাইন পোর্টালে নির্দিষ্ট ফর্ম পূরণ করলে এবং ওই ফর্মে উল্লিখিত যাবতীয় শর্ত রক্ষা করার প্রতিশ্রুতি দিলে তবেই সব দিক খতিয়ে দেখে অনুমতি দেওয়া হবে। অস্ত্র বা লাঠি হাতে শোভাযাত্রায় বেরোনো যাবে না। ব্যবহার করা যাবে না ডিজে কিংবা সাউন্ড সিস্টেমও।
বুধবার সম্প্রতি অশান্ত হয়ে ওঠা এলাকাগুলিতে শান্তি প্রতিষ্ঠা করতে রাজ্যকে কেন্দ্রীয় বাহিনীর সাহায্য নেওয়ার নির্দেশ দেয় কলকাতা হাই কোর্টের ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানম এবং বিচারপতি হিরণ্ময় ভট্টাচার্যের ডিভিশন বেঞ্চ। এ ব্যাপারে রাজ্যকে অবিলম্বে সাহায্য করার জন্য নির্দেশ দেওয়া হয় কেন্দ্রকেও। রাজ্যে অশান্তির ঘটনা নিয়ে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী একটি জনস্বার্থ মামলা করেছিলেন। আদালতের কাছে তিনি কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন এবং জাতীয় তদন্তকারী সংস্থা (এনআইএ)-কে দিয়ে তদন্ত করানোর আর্জি জানান। ওই মামলার সঙ্গে আরও কয়েকটি এই সংক্রান্ত মামলা যুক্ত হয়। তারই শুনানিতে অশান্ত হয়ে ওঠা রিষড়ায় শান্তি ফেরাতে প্রাথমিক ভাবে রাজ্য সরকারকে প্রয়োজনে আধা সামরিক বাহিনীর সাহায্য নেওয়ার পরামর্শ দেয় ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ।