সাগরমেলা। ফাইল চিত্র।
অতিমারি পরিস্থিতিতে সাগরমেলায় ‘ই-দর্শন’ বা ‘ই-স্নান’ -এর করার উপরে দিয়েছিল কলকাতা হাই কোর্ট। এ বার অতিমারি কাটলেও সেই প্রযুক্তিকে হাতিয়ার করতে চাইছে রাজ্য সরকার। প্রশাসনের খবর, পরিকল্পনা অপরিবর্তিত থাকলে যোগী-রাজ্য থেকে মোদীর নির্বাচনী কেন্দ্র— সর্বত্রই পৌঁছনোর কথা কপিল মুনির আশ্রমের পুজো, গঙ্গাসাগরে পূর্ণস্নান এবং আরতির দৃশ্য।
প্রশাসনিক সূত্রের খবর, এখনও পর্যন্ত যে পরিকল্পনা রয়েছে, তাতে দশাশ্বমেধ ঘাট (বারাণসীতে তা প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর নির্বাচনী কেন্দ্রের অন্তর্গত), সিদ্ধি বিনায়ক মন্দির, উত্তরপ্রদেশের ইলাহাবাদ, হরিদ্বার, পুরীর জগন্নাথ মন্দির, রাজস্থানের পুষ্কর-সহ গুরুত্বপূর্ণ আরও অনেক ধর্মীয় জায়গায় গঙ্গাসাগরের পুজো এবং পূণ্যস্নানের ছবি সরাসরি সম্প্রচার হওয়ার কথা। মেলার চারদিনই সাগর আরতির ব্যবস্থা রাখার সিদ্ধান্তও হয়েছে। ফলে ১২-১৫ জানুয়ারি-এই চার দিন ধরে সেই সব ছবিই দেশের বিভিন্ন প্রান্তের মানুষ সরাসরি দেখতে পারবেন।
প্রশাসনিক পর্যবেক্ষকদের অনেকেই জানাচ্ছেন, গঙ্গাসাগর নিয়ে গোটা দেশের পূণ্যার্থীদের মধ্যে উন্মাদনা রয়েছে যথেষ্ট। কোভিডের কারণে গত দু’বছর ভিন রাজ্যের মানুষ সে ভাবে আসার সুযোগ পাননি। এবছরের ভিন্ন পরিস্থিতিতে পূণ্যার্থীদের জমায়েত বিগত বেশ কয়েক বছরের রেকর্ড ভাঙতে পারে বলে অনুমান প্রশাসনের। তা সত্ত্বেও যাঁরা আসতে পারবেন না, তাঁদের পুণ্যস্নান চাক্ষুষ করাতেই এই পরিকল্পনা করা হয়েছে।
মেলা প্রাঙ্গণে সরকারি কাজের প্রচারের ধরনেও বদল আনা হবে বলে খবর। সূত্রের বক্তব্য, মেলায় আসা পুণ্যার্থীদের নিখরচে ছবি তুলে একটি শংসাপত্র দেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে। তাতে মুখ্যমন্ত্রীর শুভেচ্ছা বার্তা-সহ সরকারি কল্যাণ প্রকল্পগুলির উল্লেখও রাখা হতে পারে। এতে রাজ্যের কাজকর্ম, মনোভাব এবং উন্নয়ন সম্পর্কে ভিন রাজ্যের মানুষদের সহজেই অবহিত করা সম্ভব। প্রশাসনিক পর্যবেক্ষকদের একাংশের ধারণা, ২০২৪ সালে লোকসভা ভোট। তার আগে গঙ্গাসাগর মেলাকে নিয়ে এমন পরিকল্পনা তাৎপর্যপূর্ণ। যদিও রাজনৈতিক পরিকল্পনা বাদ দিয়ে এ কাজে মানুষের আবেগকে মর্যাদা দেওয়াই সরকারের লক্ষ্য বলে নবান্নের কর্তাদের অনেকের দাবি।
রেকর্ড ভিড়ের অনুমান করে প্রস্তুতিতেও ফাঁক রাখছে না প্রশাসন। চলতি মাস থেকে নদীর নাব্যতা বাড়াতে পলি তোলার কাজ শুরু করেছে সেচ দফতর। পূর্ত এবং জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতর পরিকাঠামো এবং পানীয় জলের পর্যাপ্ত ব্যবস্থা রাখছে। গত বারের তুলনায় এ বছর বাস, লঞ্চের সংখ্যাও বাড়ানো হচ্ছে। ঘাটে বেশি মানুষ পৌঁছলে তাঁদের জন্য অতিরিক্ত বার্জেরও ব্যবস্থা থাকছে।