State BJP on Theatre Group

এত নাটকের দলের অনুদান বন্ধের নোটিস নিয়ে আঁধারে রাজ্য বিজেপি, সামাল দিতে আসরে সাংসদ শমীক

শুধু বাংলা নয়, দেশের অনেক নাট্যদলের উপরেই কোপ পড়েছে। তার মধ্যে কলকাতা ও জেলা মিলিয়ে এ রাজ্যের খান দশেক দল রয়েছে। তালিকা প্রকাশের পরে অনেক নাট্যব্যক্তিত্বই ক্ষোভ জানিয়ে মুখ খুলেছেন।

Advertisement
আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৪ অগস্ট ২০২৪ ১২:৫৪
West Bengal BJP is not pleased on the decision of cultural ministry to stop grant of several theatre group

গ্রাফিক: সনৎ সিংহ।

এমনিতেই বিজেপি সে ভাবে রাজ্যের সাংস্কৃতিক জগতের মানুষদের পাশে পায় না। তার উপরে কেন্দ্রীয় সংস্কৃতি মন্ত্রকের এক সিদ্ধান্তে অনেকটা চাপ তৈরি হয়েছে। বেশ কয়েকটি দলের রেপার্টরি অনুদান বন্ধ করে দিয়েছে কেন্দ্রীয় সংস্কৃতি মন্ত্রক। ১ অগস্ট মন্ত্রকের তরফে তালিকা প্রকাশের পরে বাংলার একাধিক নাট্যদলের মধ্যে ক্ষোভ তৈরি হয়েছে। আর তাতে চাপে রাজ্য বিজেপি। দলের দাবি, কেন্দ্রের এই সিদ্ধান্তের সঙ্গে রাজ্য দলের কোনও যোগ নেই। সকলের অজান্তেই এটা হয়েছে। ইতিমধ্যেই এই বার্তা দলের তরফে বিভিন্ন নাট্যব্যক্তিত্বকে দিয়েছেন বিজেপির সাংসদ তথা রাজ্যের প্রধান মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্য। কেন্দ্র যাতে সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা করে, তার জন্য যথাসম্ভব চেষ্টা করা হবে বলেও সকলকে কথা দিয়েছেন শমীক।

Advertisement

শুধু বাংলা নয়, দেশের অনেক নাট্যদলের উপরেই কোপ পড়েছে। তার মধ্যে কলকাতা ও জেলা মিলিয়ে এ রাজ্যের খান দশেক দল রয়েছে। সেই সঙ্গে ২০টির মতো নতুন দলকে ওই তালিকায় যুক্ত করা হয়েছে বলেও জানা গিয়েছে। সেগুলি মূলত জেলায় কাজ করা নাটকের দল। তবে কলকাতা কেন্দ্রিক নামী দলগুলি বাদ যাওয়াতেই যত ক্ষোভ। এই ধরনের পদক্ষেপের নেপথ্যে ‘রাজনৈতিক অভিসন্ধি’ রয়েছে বলেই মনে করছেন নাট্যজগতের একাংশ। এ নিয়ে শমীক বলেন, ‘‘কেন বা কী ভাবে এই তালিকা তৈরি হয়েছে আমার জানা নেই। তবে বিজেপির পক্ষে কোনও রাজনৈতিক অভিসন্ধি নেই। আমি এ নিয়ে সংস্কৃতি মন্ত্রকের সঙ্গে কথা বলব।’’

তালিকা প্রকাশের পরে অনেক নাট্যব্যক্তিত্বই ক্ষোভ জানিয়ে মুখ খুলেছেন। দীর্ঘ সময় ধরে কেন্দ্রীয় অনুদান পায় মেঘনাদ ভট্টাচার্যের দল ‘সায়ক’। মেঘনাদ শনিবার বলেন, ‘‘দলের ১৮ জনের টাকাই বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে! জেলার একাধিক দলেরও একই অবস্থা। অনুদান বন্ধের নেপথ্যে যে সমস্ত কারণ দেখানো হয়েছে, তা হাস্যকর।’’ একই ভাবে অনুদান বন্ধ হয়ে যাওয়া নিয়ে নাট্যদল ‘সংসৃতি’র কর্ণধার দেবেশ চট্টোপাধ্যায় জানান, গত ১২ বছর তাঁরা অনুদান পাচ্ছিলেন। এ বার তাঁর দলের ১৭ জনের অনুদান বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। দেবেশ বলেন, ‘‘আমি নাকি খুবই প্রভাবশালী। আমি নাকি কর্পোরেট অনুদানে নাটক করি! আমি নাকি ছবি পরিচালনা করি। তাই অনুদান বন্ধ।’’

ইতিমধ্যেই মেঘনাদ এবং দেবেশের সঙ্গে কথা বলেছেন শমীক। তিনি বলেন, ‘‘মেঘনাদদা এবং দেবেশের সঙ্গে আমার কথা হয়েছে। দিল্লি গিয়ে আমার পক্ষে যতটা সম্ভব দেখব। আসলে কে বা কারা এই তালিকা তৈরি করেছেন, তা আমার অজানা।’’ একই সঙ্গে শমীক দাবি করেন, ‘‘আমি নাটকের নিয়মিত দর্শক। অনেকের সঙ্গেই আমার ব্যক্তিগত যোগাযোগ রয়েছে। সেটা ছাড়াও বিজেপি অতীতের মতো ‘ওরা-আমরা’ সংস্কৃতিতে বিশ্বাস করে না। যাঁরা যোগ্য, তাঁরা যাতে অনুদান পান, সেটাই প্রাধান্য দেওয়া উচিত।’’

শমীকের উপরে অনেকটাই ভরসা করছেন দেবেশ। তিনি বলেন, ‘‘আমি শমীকের উপরে ভরসা তো রাখছিই। যত দ্রুত সম্ভব সংস্কৃতি মন্ত্রকের সঙ্গে যোগাযোগ করা দরকার। কোনও ব্যক্তির অসূয়া বা রাজনৈতিক প্রতিহিংসা বা এই দু’টির যে কোনও একটিও যদি থেকে থাকে, তবে অবিলম্বে যেন তদন্ত করা হয়। মন্ত্রকের সঙ্গে কথা বলে সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা করা উচিত।’’

প্রসঙ্গত, চলতি বাজেট অধিবেশনেই রাজ্যসভায় সংস্কৃতি মন্ত্রকের কাছে নাটকের দলগুলিকে দেওয়া অনুদান নিয়ে কিছু প্রশ্ন করেছেন সাংসদ শমীক। তাতে বাংলার কত দল এই অনুদান পায়, অর্থের পরিমাণ বৃদ্ধি করা যায় কি না, সে প্রশ্নও করেছেন শমীক। তবে রাজ্যসভায় সেই প্রশ্ন জমা পড়ার অনেক আগেই বাতিল ও সংযোজনের তালিকা তৈরি হয়ে গিয়েছিল বলেই জানা গিয়েছে।

আরও পড়ুন
Advertisement