Biman Banerjee

আদালত পক্ষ নিচ্ছে, বার্তা ছড়ালে বিপদ! ‘উনি’ বলে বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের দিকে আঙুল স্পিকারের?

বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের উদ্দেশে স্পিকার বিমানের বার্তা, উপলব্ধি করতে হবে, বার্তাটা যেন এমন না যায় যে, আদালতও কোনও একটা পক্ষভুক্ত হতে চলেছে।

Advertisement
নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৪ এপ্রিল ২০২৩ ১৪:৫২
West Bengal Assembly Speaker Biman Banerjee raises question on working method of justice Abhijit Ganguly of Calcutta High Court

নাম না করে বিচারপতিকে বার্তা স্পিকারের? — ফাইল চিত্র।

বিচারব্যবস্থার অতিসক্রিয়তা এবং অহংবোধ নিয়ে প্রশ্ন তুললেন রাজ্য বিধানসভার স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়। ঘটনাচক্রে, কলকাতা হাই কোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় তাঁর পর্যবেক্ষণে নিয়োগ দুর্নীতি সংক্রান্ত মামলায় তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে প্রশ্ন করার জন্য তদন্তকারী সংস্থাকে ‘ছাড়পত্র’ দেওয়ার পরের দিনই এই প্রশ্ন তুললেন বিমান।

শুক্রবার রাজ্য বিধানসভার অম্বেডকরের জন্মদিবস কর্মসূচিতে যোগ দিতে এসে স্পিকার বলেন, ‘‘যে যার প্রেক্ষাপটে কাজ করা উচিত, প্রশাসনের কাজ প্রশাসনের করা উচিত। বিচারবিভাগের কাজ বিচারবিভাগের করা উচিত। কেউ যদি মনে করেন আমি কারও থেকে সুপিরিয়র, এই দৃষ্টিভঙ্গি যদি কারও থাকে, আমার মতে তা বাঞ্ছনীয় নয়।’’ এর পরেই প্রবীণ আইনজীবী বিমানের মন্তব্য, ‘‘আদালত যদি মনে করে আমরা সব ব্যাপারে সুপ্রিম, আমার মনে হয়, তা গণতন্ত্রের পক্ষে ভাল হবে না।’’

Advertisement

মানুষকে ন্যায়বিচার পাইয়ে দেওয়ার প্রেক্ষাপটে আদালতের ‘গুরুত্বের’ কথা স্বীকার করে নিলেও স্পিকারের মতে আদালতের উচিত রাজ্য সরকারকে স্বাধীন ভাবে প্রশাসনিক কাজ করতে দেওয়া, কোন পরিস্থিতিতে তার এমন মন্তব্য? প্রশ্নের উত্তরে বিমান বলেন, ‘‘সংবাদপত্র খুললেই তো আজকাল দেখছি সব ব্যাপারে আদালতের হস্তক্ষেপ। কোনও সংবাদপত্রের প্রথম পাতায় এমন খবর নেই যাতে আদালতের হস্তক্ষেপের কথা আপনারা পাবেন না!’’

সরাসরি বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের নাম না নিলেও অভিষেক সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তরে স্পিকার বলেন, ‘‘উনি যদি বলে দেন, অমুককে ডেকে পাঠানো উচিত! কালকে হয়তো বলবেন বিধানসভার অধ্যক্ষকে ডেকে পাঠানো উচিত, কিন্তু সেটা তো বাঞ্ছনীয় হবে না। আগে ওঁকে উপলব্ধি করতে হবে, বার্তাটা যেন এমন না যায় যে, আদালতও কোনও একটা পক্ষভুক্ত হতে চলেছে।’’

প্রসঙ্গত, নিয়োগ দুর্নীতিতে ধৃত এবং বহিষ্কৃত তৃণমূল নেতা কুন্তল ঘোষের চিঠি সংক্রান্ত মামলার শুনানিতে, বৃহস্পতিবার বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের পর্যবেক্ষণ ছিল, প্রয়োজনে অভিষেককে প্রশ্ন করতে পারবে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা সিবিআই এবং এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি)। এর পরই টুইটে নাম না করে বিচারপতিকে আক্রমণ করেছিলেন তৃণমূলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষ। লিখেছিলেন, “সরাসরি রাজনীতিতে আসুন।”

এর পর সাংবাদিক বৈঠকে সরাসরি নাম করে বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের উদ্দেশে তোপ দাগেন কুণাল। বলেন, ‘‘বিরোধী দল কংগ্রেস, সিপিএম এবং বিজেপির মদতে ঠান্ডা মাথায় অভিষেকের চরিত্রহনন করছেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়।’’ তৃণমূল সাংসদ অপরূপা পোদ্দারও বৃহস্পতিবার নিশানা করেছিলেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়কে। এ বার নাম না করে স্পিকার বিমানও খোঁচা দিলেন তাঁকে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
আরও পড়ুন
Advertisement