Subrata Mukherjee

নন্দীগ্রামে মমতার জমি দেখতে ৩ দিনের সফরে সুব্রত, ফিরে এসে দেবেন ‘গ্রাউন্ড রিপোর্ট’

একুশের বিধানসভা নির্বাচন এক কথায় মরণ-বাঁচন লড়াই তৃণমূলের কাছে। তাই নাড়ি বোঝার জন্য এই মুহূর্তে পুরনো সৈনিক সুব্রতর উপরই ভরসা করছে তারা।

Advertisement
নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৭ জানুয়ারি ২০২১ ১৪:২৩
ভোটের আগে ৩ দিনের নন্দীগ্রাম সফরে সুব্রত।

ভোটের আগে ৩ দিনের নন্দীগ্রাম সফরে সুব্রত।

নন্দীগ্রামের জমি আন্দোলনই হাত শক্ত করেছিল তাঁর। ক্ষমতা টিকিয়ে রাখার লড়াইয়েও এ বার বাজি সেই নন্দীগ্রাম। গেরুয়া দাপট সত্ত্বেও তাই সেখানে প্রার্থী হওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই মতো দলনেত্রীর জন্য জমি তৈরি করতে নেমে পড়ল তৃণমূল। সে কারণে পঞ্চায়েতমন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায়কে আগামী ১ ফেব্রুয়ারি থেকে ৩ দিনের জন্য নন্দীগ্রাম সফরে পাঠানো হচ্ছে। সেখানে পায়ের নীচের জমি কতটা মজবুত, তা পরখ করে দলকে রিপোর্ট দেবেন তিনি।

একুশের বিধানসভা নির্বাচন এক কথায় মরণ-বাঁচন লড়াই তৃণমূলের কাছে। তাই নাড়ি বোঝার জন্য এই মুহূর্তে পুরনো সৈনিক সুব্রতর উপরই ভরসা করছে তারা। দলের প্রত্যাশা পূরণে মরিয়া সুব্রতও। তিনি বলেন, ‘‘দলের হয়ে পরিস্থিতি তদারকি করতে যাচ্ছি। ৩ দিন থাকব। প্রত্যেকটা ব্লকে যাব। আমাদের কর্মীদের সঙ্গে দেখা করব। কর্মীদের ডেকে নয়, দেখা করব ওদের ওখানে গিয়ে। সব সারতে ৩ দিন এমনিই কেটে যাবে।’’

Advertisement

দলের প্রচারের কাজে যাচ্ছেন না, শুধুমাত্র জমি জরিপ করতে যাচ্ছেন বলেও সাফ জানিয়ে দেন সুব্রত। দল প্রার্থী নির্বাচন করার পর প্রচারের কাজ শুরু হবে বলে জানিয়েছেন তিনি। কিন্তু ২৯৪টি কেন্দ্র থাকতে বেছে বেছে শুধু নন্দীগ্রামেই কেন সমীক্ষা করতে হচ্ছে, সে প্রশ্নের উত্তরে নন্দীগ্রামে মমতার ভোটে দাঁড়ানোর সিদ্ধান্তে কার্যত সিলমোহর দেন সুব্রত। তিনি বলেন, ‘‘নন্দীগ্রামে যে হেতু মুখ্যমন্ত্রী দাঁড়াবেন, তাই পরিস্থিতি মেপে দেখা প্রয়োজন। অনেক দিন ধরে নির্বাচন করাচ্ছি। তাই দলের হয়তো মনে হয়েছে বেস্ট রিপোর্ট দিতে পারব।’’

আরও পড়ুন:

গত ১৮ জানুয়ারি নন্দীগ্রামের মাটিতে দাঁড়িয়েই সেখান থেকে ভোটে লড়ার জল্পনা উস্কে দিয়েছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। নন্দীগ্রামের জন্য প্রার্থী তালিকায় তাঁর নাম ঢোকানো যায় কি না, তা দেখার দায়িত্ব দিয়েছিলেন দলের রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সীকে। তৃণমূলত্যাগী শুভেন্দু অধিকারীকে ভর করে নন্দীগ্রামে পদ্ম ফোটানোর স্বপ্নে মশগুল বিজেপিকে এই ঘোষণার মাধ্যমে মমতা জোর ধাক্কা দিয়েছেন বলে আলোচনা শুরু হয় সর্বত্র।

কিন্তু শুভেন্দু জানিয়ে দেন, সত্যি সত্যিই যদি নন্দীগ্রাম থেকে ভোটে দাঁড়ানোর সিদ্ধান্ত নেন মমতা, তাঁকে ৫০ হাজারের বেশি ভোটে হারাবেন তিনি। সাহস থাকলে শুধু নন্দীগ্রাম থেকেই দাঁড়াতে হবে মমতাকে, ভবানীপুর ছাড়তে হবে, এমন চ্যালেঞ্জও ছুড়ে দেন। যদিও নিজে নন্দীগ্রাম থেকে তাঁকে প্রার্থী করা হবে কি না, তা এখনও নিশ্চিত ভাবে জানায়নি বিজেপি। রাজ্যের কোনও আসনেই এখনও প্রার্থী ঘোষণা করেনি তারা।

তবে নন্দীগ্রাম যাওয়ার আগে শুভেন্দুর হুঁশিয়ারিকে গুরুত্ব দিতে নারাজ সুব্রত। তিনি বলেন, ‘‘পশ্চিমবঙ্গের কোনও কেন্দ্রে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে চ্যালেঞ্জ দেওয়ার মতো কেউ নেই। ও যদি নিজে দাঁড়ায় এবং বলে ৫০ হাজার ভোটে হারাবে, তা তো বলতেই পারে। যে হেরে যায়, যার জামানত পর্যন্ত বাজেয়াপ্ত হয়ে যায়, সে-ও তো জেতার কথাই বলে।’’

তিনি সমীক্ষা সেরে এলে মুখ্যমন্ত্রী ফের নন্দীগ্রাম সফরে যাবেন বলেও জানিয়েছেন সুব্রত।

আরও পড়ুন
Advertisement