বিধানসভা থেকে বেরনোর পর রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়।
মন্ত্রিত্ব ছেড়েছিলেন আগেই। এ বার বিধায়ক পদ থেকেও ইস্তফা দিলেন রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়। শুক্রবার সকালেই বিধানসভায় পৌঁছন তিনি। স্পিকারের সঙ্গে বৈঠক করতে যাচ্ছেন বলে প্রথমে জানান। পরে জানা যায়, স্পিকারের সামনে বসেই পদত্যাগপত্র লেখেন তিনি। খুব শীঘ্র তিনি তৃণমূলের সদস্যপদও ছাড়তে পারেন বলে জল্পনা তুঙ্গে। তবে এ দিন বিধানসভা থেকে বেরিয়ে আসার সময়ও রাজীবের হাতে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ছবি ছিল। রাজীব জানান, ‘‘দলনেত্রী আমার কাছে মায়ের মতো। আগেও মাথার পিছনে ওঁর ছবি থাকত। আগামী দিনেও ছবি কাছে রাখব।’’
ইস্তফা দেওয়ার পর এ দিন সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে রাজীব বলেন,‘‘পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভার বিধায়ক পদ থেকে ইস্তফা দিয়েছি। অধ্যক্ষ মহাশয়ের হাতে ইস্তফাপত্র জমা দিয়েছি। তাঁর কিছু প্রশ্ন ছিল। আমি উত্তর দিচ্ছিলাম। তিনি বলেছেন, সবটাই আইন অনুযায়ী পরীক্ষা করে দেখবেন। তার পর সিদ্ধান্ত জানাবেন। আনুষ্ঠানিক ভাবে পদত্যাপপত্র তুলে দিয়েছি ওঁর হাতে। কৃতজ্ঞতা জানিয়েছি। কারণ দীর্ঘ ১০ বছর ওঁর সহযোগিতা পেয়েছি। একই সঙ্গে বিধানসভার সহকর্মী এবং বাংলার মানুষকে ধন্যবাদ জানাই। ১০ বছর ধরে সকলের ভালবাসা পেয়েছি। কৃতজ্ঞতা জানাই দলনেত্রীকে। বিধায়ক হওয়ার সুযোগ করে দিয়েছিলেন উনি। ওঁর কাছে চিরকৃতজ্ঞ থাকব। ডোমজুড়ের শিশু থেকে বৃদ্ধ, যাঁদের ভালবাসা পেয়েছি, বিগত ১০ বছর ধরে যাঁদের জন্য কাজ করেছি, তাঁদের সকলকে কৃতজ্ঞতা জানাই। কথা দিচ্ছি, আগামী দিনেও ডোমজুড় বিধানসভা মানুষের পাশে থাকব। মানুষের স্বার্থে, উন্নয়নের স্বার্থে কাজ করে যাব।’’
তবে বিধায়ক পদ থেকে ইস্তফা দিলেও, এখনও পর্যন্ত তৃণমূলের সদস্যপদ ছাড়েননি রাজীব। সে নিয়ে প্রশ্ন করলে বলেন, ‘‘এখনও দলের সদস্য আমি। একটা মানসিক প্রস্তুতির দরকার ছিল। মন্ত্রিসভা ত্যাগের পরেও ৭ দিন অপেক্ষা করেছিলাম। সংসদীয় গণতন্ত্রে রাজনীতির কাজ করতে গেলে কোনও না কোনও দলের অংশ হতে হয় । নির্দল হয়ে সে ভাবে মানুষের জন্য কাজ করা যায় না। শেষ পর্যন্ত কী করব, আগামী কাল সিদ্ধান্ত জানাব আপনাদের।’’
বেশ কিছু দিন ধরেই দলের বিরুদ্ধে সরব রাজীব। দলে থেকে কাজ করতে অসুবিধা হচ্ছে বলে বার বার অভিযোগ করতে দেখা যায় তাঁকে। তার পর গত ২২ জানুয়ারি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মন্ত্রিসভা থেকে বেরিয়ে আসেন। ইস্তফা দেন বনমন্ত্রীর পদ থেকে।
সেই থেকেই তাঁর পরবর্তী পদক্ষেপ নিয়ে জল্পনা চলছিল। তিনি গেরুয়া শিবিরে যোগ দিতে যাবেন কি না, সে দিকে তাকিয়ে ছিল রাজ্যের রাজনৈতিক মহল। এত দিন সে নিয়ে মুখ না খুললেও, অমিত শাহের বঙ্গ সফরের কয়েক ঘণ্টা আগে রাজীবের এই সিদ্ধান্তে ফের সেই জল্পনা জোর পেয়েছে। শোনা যাচ্ছে রবিবার শাহের উপস্থিতিতে ডুমুরজলায় বিজেপি-তে যোগ দিতে পারেন রাজীব।