University Grants Commission

শিক্ষক-উপাচার্য নিয়োগে বদল আনছে ইউজিসি

উপাচার্য পদে প্রার্থীদের যোগ্যতার বিষয়ও বদল হতে চলেছে। প্রশাসন এবং শিল্পক্ষেত্র থেকেও উপাচার্য পদপ্রার্থী হওয়া যাবে। উপাচার্যদের কাজের মেয়াদ চারের বদলে হবে পাঁচ বছর।

Advertisement
নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ০৭ জানুয়ারি ২০২৫ ০৭:২০
ইউজিসি।

ইউজিসি। —ফাইল চিত্র।

কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক ও উপাচার্য নিয়োগে বড় পরিবর্তন আনতে চলেছে ইউজিসি। বর্তমানে শিক্ষক পদে আবেদনের জন্য প্রার্থীদের স্নাতকোত্তর এবং পিএইচডি ডিগ্রিতে একই বিষয়ের ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে হয়। সেই নিয়ম তুলে দেওয়া হচ্ছে। পাশাপাশি উপাচার্য পদে আবেদনের শর্তের বদল ঘটিয়ে শিক্ষা জগতের বাইরে থেকেও উপাচার্য নিয়োগের পথ খুলে দেওয়া হচ্ছে।

Advertisement

সোমবার দিল্লিতে এই নিয়ম পরিবর্তনের খসড়া প্রকাশ করেন কেন্দ্রীয় শিক্ষামন্ত্রী ধর্মেন্দ্র প্রধান। ইউজিসি চেয়ারম্যান এম জগদেশ কুমার জানিয়েছেন, নতুন নিয়মে প্রার্থীদের ইউজিসি নেট অথবা সেট এবং পিএইচডি করার বিষয়ই মূল যোগ্যতা হিসেবে গুরুত্ব দেওয়া হবে। স্নাতক ও স্নাতকোত্তরে অন্য বিষয়ে পড়াশোনা করলেও প্রার্থীর আবেদন করতে বাধা থাকবে না। প্রার্থী কয়টি গবেষণাপত্র প্রকাশ করতে পেরেছেন, তাকে এপিআই (অ্যাকাডেমিক পারফরমেন্স ইন্ডিকেটর) স্কোরে গুরুত্বপূর্ণ বলে ধরা হত। এখন এপিআইএ-র বদলে বাস্তব ক্ষেত্রে প্রার্থীর অবদানকে গুরুত্ব দেওয়া হবে। ভারতীয় ভাষা ও ইন্ডিয়ান নলেজ সিস্টেমের প্রচারও তার মধ্যে রয়েছে।

উপাচার্য পদে প্রার্থীদের যোগ্যতার বিষয়ও বদল হতে চলেছে। প্রশাসন এবং শিল্পক্ষেত্র থেকেও উপাচার্য পদপ্রার্থী হওয়া যাবে। উপাচার্যদের কাজের মেয়াদ চারের বদলে হবে পাঁচ বছর। উপাচার্য নিয়োগের সার্চ কমিটিতে থাকবেন আচার্য এবং ইউজিসির প্রতিনিধির সঙ্গে সংশ্লিষ্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের কোর্ট বা সেনেটের প্রতিনিধি। যদিও সার্চ কমিটিতে কারা থাকবেন, তা নিয়ে এ রাজ্যে বছর কয়েক ধরেই বিতর্ক চলছে। ২০১১ সালের আগে এ রাজ্যেও উপাচার্য নিয়োগের সার্চ কমিটিতে ইউজিসি, আচার্য এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের কোর্ট বা সেনেটের প্রতিনিধিরাই থাকতেন। ২০১২ সালে সেই বিধি বদলে ইউজিসি-র বদলে রাজ্য সরকারের প্রতিনিধি যুক্ত করা হয়। ২০২১-এ তৃণমূল সরকার বিধানসভায় প্রস্তাব পাশ করে, উপাচার্য নিয়োগের সার্চ কমিটিতে থাকবেন মুখ্যমন্ত্রী, উচ্চশিক্ষা দফতর, উচ্চশিক্ষা সংসদের প্রতিনিধির পাশাপাশি ইউজিসি ও আচার্যর প্রতিনিধি। সেই বিল এখনও রাজভবন থেকে সই হয়ে আসেনি। যদিও রাজ্যের বিশ্ববিদ্যালয়গুলির উপাচার্য নিয়োগের চলতি প্রক্রিয়ায় সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে আচার্য, ইউজিসি এবং রাজ্য সরকারের প্রতিনিধিদের সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রীর প্রতিনিধিও সার্চ কমিটিতে রয়েছেন।

কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির (কুটা) সাধারণ সম্পাদক সনাতন চট্টোপাধ্যায় বলেন, “মনে হচ্ছে, প্রচলিত শিক্ষাধারার বাইরে যে সব চর্চা ইতিউতি চলত, উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানে সেগুলি চর্চার জন্য মানুষ দরকার। আশা করব, পরিবর্তিত নিয়োগনীতি শুধু মাত্র উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভাবে এই সব অপ্রচলিত শিক্ষাধারার ব্যক্তিবর্গের শিক্ষাক্ষেত্রে অনুপ্রবেশের পথ সুগম করতে ব্যবহৃত হবে না।” তিনি বলেন, “মনে হচ্ছে শিক্ষাজগতের উপাচার্যদের দিয়ে কেন্দ্রীয় সরকারের উদ্দেশ্য সাধন হচ্ছে না। তাই যিনি সেগুলি করার উপযুক্ত, তিনিই উপাচার্য হবেন।” যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির (জুটা) সাধারণ সম্পাদক পার্থপ্রতিম রায় বলেন, “উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক নিয়োগের পদ্ধতি এমন ভাবে বদলানো হয়েছে, যাতে নিয়োগের ক্ষেত্রে দুর্নীতির পথ প্রশস্ততর হবে।”

Advertisement
আরও পড়ুন