কলকাতা মেডিক্যালে মারা গেল অ্যাডিনোভাইরাস আক্রান্ত আরও দুই শিশু। ফাইল চিত্র।
অ্যাডিনোভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে রাজ্যে আরও দুই শিশুর মৃত্যু হল। বুধবার ভোরে কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ৬ মাসের এক শিশুকন্যার মৃত্যু হয়। মঙ্গলবার রাতে কলকাতা মেডিক্যাল কলেজেই চিকিৎসাধীন ৬ মাসের আর এক শিশুর মৃত্যু হয়েছে।
হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, মৃত শিশুদের এক জন হুগলি জেলার মগরার বাসিন্দা। জ্বর, শ্বাসকষ্ট-সহ একাধিক উপসর্গ নিয়ে গত ২৭ জুন তাকে কলকাতা মেডিক্যাল কলেজে ভর্তি করানো হয়েছিল। হাসপাতালের জরুরি বিভাগে ভর্তি ছিল সে। অঙ্গপ্রত্যঙ্গ বিকল হয়ে তার মৃত্যু হয়েছে বলে জানা হাসপাতাল সূত্রে খবর। ডেথ সার্টিফিকেট (মৃত্যু শংসাপত্র)-এ লেখা হয়েছে, অ্যাডিনোভাইরাসে সংক্রমিত হয়েছিল শিশুটি। তা ছাড়াও অপুষ্টি এবং সেপসিসের সমস্যা ছিল তার।
মৃতদের মধ্যে অন্য জন উলুবেড়িয়ার বাসিন্দা। সে-ও জ্বর, শ্বাসকষ্টজনিত সমস্যায় ভুগছিল। প্রথমে গ্রামীণ হাসপাতালে চিকিৎসা শুরু হলেও পরে শারীরিক অবস্থার অবনতি হয়। ওই শিশুকে মেডিক্যাল কলেজে রেফার করা হয়। জরুরি বিভাগে চিকিৎসাধীন শিশুটি মঙ্গলবার রাতে মারা যায়। তাঁর মৃত্যু শংসাপত্রেও শরীরে অ্যাডিনোভাইরাসের উপস্থিতির কথা লেখা হয়েছে।
অ্যাডিনোভাইরাসের কারণে রাজ্যে বিসি রায় হাসপাতাল, কলকাতা মেডিক্যাল-সহ বেশ কয়েকটি হাসপাতালে একাধিক শিশুর মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে কিছু দিন আগেই বিধানসভায় উদ্বেগপ্রকাশ করেছিলেন স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। অ্যাডিনোকে রুখতে চিকিৎসকেরা একাধিক পরামর্শ দিচ্ছেন। তাঁদের মতে, যারা ইতিমধ্যেই সংক্রমিত হয়েছে কিংবা ক্রিটিক্যাল কেয়ারে ছিল, আগামী এক বছর সেই শিশুদের খুব সাবধানে রাখতে হবে। সংক্রমণে ওই শিশুদের ফুসফুস ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। একটু এ দিক-ও দিক হলেই ফের সংক্রমণের সম্ভাবনা রয়েছে। নির্দিষ্ট সময় অন্তর তাদের চিকিৎসককে দেখাতে হবে। এক্স-রে করে ফুসফুসের অবস্থা পরীক্ষা করতে হবে। এখনও যারা জ্বরে আক্রান্ত হচ্ছে, তাদের প্রথমেই অ্যান্টিবায়োটিক দিতে বারণ করছেন চিকিৎসকেরা। বরং রোগীকে প্রথমে প্যারাসিটামল দেওয়া এবং প্রচুর জল খাওয়ানোর কথা বলছেন তাঁরা। তা ছাড়াও ছোটদের মাস্ক পরানোর উপর জোর দিতে বলছেন চিকিৎসকেরা।