বাড়ি থেকে উদ্ধার মামা এবং ভাগ্নের দেহ। —নিজস্ব চিত্র।
বাড়ির সামনে রক্ত আর চিঠি পড়ে থাকতে দেখেই সন্দেহ হয়েছিল স্থানীয়দের। খবর পেয়ে পুলিশও আসে। দরজা ভেঙে ঘরের শোকেস থেকে উদ্ধার হয় এক বৃদ্ধের দেহ। দেহটি কম্বল প্যাঁচানো অবস্থায় ছিল। এর পরেই বাড়িতে তল্লাশি শুরু হয়। সেই সময়েই বাড়ির পিছনে একটি সেপটিক ট্যাঙ্ক থেকে উদ্ধার হয় আরও একটি দেহ। প্লাস্টিক দিয়ে মোড়ানো অবস্থায়। এই ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়াল কোচবিহারের ডাওয়াগুড়ি গ্রাম পঞ্চায়েতের বৈশ্যপাড়া এলাকায়। স্থানীয়েরা পুলিশকে জানান, যে দু’জনের দেহ উদ্ধার হয়েছে, তাঁরা সম্পর্কে মামা-ভাগ্নে। সেপটিক ট্যাঙ্ক থেকে উদ্ধার হওয়া যুবক ওই বৃদ্ধের ভাগ্নে। বৃদ্ধের ছেলে তাঁদের খুন করেছেন বলে অভিযোগ পড়শিদের।
স্থানীয় সূত্রে খবর, বাবা বিজয়কুমার বৈশ্য এবং তাঁর ছেলে প্রণবকুমার বৈশ্য বাড়িতে থাকতেন একসঙ্গে। বিজয় কিছু দিন ধরেই অসুস্থ ছিলেন। সোমবার এক মাছ ব্যবসায়ী তাঁদের বাড়ি গিয়ে দেখেন, দরজার সামনে একটি চিঠি পড়ে রয়েছে। আশপাশে রক্তের ছাপ। মাছ ব্যবসায়ী চিঠিটি খুলে দেখেন, তাতে লেখা, প্রণব জরুরি ভিত্তিতে তাঁর বাবাকে নিয়ে চেন্নাই গিয়েছেন চিকিৎসার জন্য। চিঠি দেখেই সন্দেহ হয়েছিল মাছ ব্যবসায়ীর। তিনি প্রতিবেশীদের বিষয়টি দেখানোর পরেই খবর দেওয়া হয় থানায়। এর পর পুলিশ এসে বিজয়ের (৬৫) দেহ উদ্ধার করে।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, বিজয়ের দেহ উদ্ধারের পর পড়শিরাই জানান, গত এক মাস ধরে প্রণবের পিসতুতো দাদা গোপাল রায় নিখোঁজ। তাঁরা সন্দেহ প্রকাশ করেন, প্রণবই হয়তো বিজয় এবং গোপালকে খুন করেছেন। সেই মতো বাড়িতে তল্লাশি শুরু হয়। তখনই সেপটিক ট্যাঙ্ক থেকে উদ্ধার হয় গোপালের দেহ। পরে দু’জনের দেহ ময়নাতদন্তের জন্য পাঠিয়েছে পুলিশ।
স্থানীয় বাসিন্দা জয়কুমার দাস বলেন, ‘‘এক মাছবিক্রেতাই আমাদের ডেকে আনে। প্রণব যদি চিকিৎসার জন্য বাবাকে চেন্নাই নিয়ে যেত, আমরা জানতে পারতাম। সেই কারণেই সন্দেহ হয়েছিল। রবিবার রাতে বাড়িতে গন্ডগোলের আওয়াজও শোনা গিয়েছিল। প্রণব সব সময় নেশা করে থাকত। বড্ড হিংসাত্মকও ছিল। ও-ই দু’জনকে খুন করেছে বলে আমাদের অনুমান।’’
কোচবিহারের পুলিশ সুপার দ্যুতিমান ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘প্রথমে বিজয়কুমার বৈশ্যের দেহ উদ্ধার হয়। পরে ওই বাড়ির সেপটিক ট্যাঙ্ক থেকে গোপাল রায়ের দেহ উদ্ধার করেছি। গোটা ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।’’