TMC Dharna at Delhi

দিল্লিতে মমতা-অভিষেকের ধর্না বাংলা জুড়ে দেখাতে তৎপর তৃণমূল, ব্লকে ব্লকে বসানো হবে জায়ান্ট স্ক্রিন

আগামী অক্টোবর মাসের ২ ও ৩ তারিখে কেন্দ্রীয় বঞ্চনার বিরুদ্ধে দিল্লিতে সরব হবে তৃণমূল শীর্ষ নেতৃত্ব। সেই প্রতিবাদের ধ্বনি যাতে পশ্চিমবঙ্গের প্রতিটি ব্লকে পৌঁছে দেওয়া যায়, সেই বিষয়ে বিশেষ বন্দোবস্ত করা হচ্ছে।

Advertisement
আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ১২:৫২
TMC will show Delhi protest on giant screens in all blocks of Bengal

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়-অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। ছবি: সংগৃহীত।

রাজধানীতে আয়োজিত তৃণমূলের প্রতিবাদ কর্মসূচি পশ্চিমবঙ্গের প্রতিটি ব্লকে পৌঁছে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিল তৃণমূল নেতৃত্ব। আগামী অক্টোবর মাসের ২ এবং ৩ তারিখে কেন্দ্রীয় বঞ্চনার বিরুদ্ধে দিল্লিতে সরব হবে তৃণমূল। সেই প্রতিবাদের ধ্বনি যাতে পশ্চিমবঙ্গের প্রতিটি ব্লকে পৌঁছে দেওয়া যায় সেই বিষয়ে বিশেষ বন্দোবস্ত করা হচ্ছে। পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন জেলার তৃণমূলের সভাপতিদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে যে, প্রতিটি ব্লকে জায়ান্ট স্ক্রিনের মাধ্যমে দিল্লির প্রতিবাদ কর্মসূচির সম্প্রচার দেখানোর বন্দোবস্ত করতে। তৃণমূল সূত্রে খবর, প্রতিটি ব্লকের বিডিও অফিসের সামনে দু’দিন ধরে প্রতিবাদ কর্মসূচির সম্প্রচার দেখানোর বন্দোবস্ত করতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। জেলা সভাপতিরা নির্দেশ পাওয়ার পরেই এই বিষয়ে জেলা কমিটির সঙ্গে বৈঠক করেছেন। সেই বৈঠকে ব্লক সভাপতিদের এই কর্মসূচি আয়োজনের পদক্ষেপ করতে বলা হয়েছে। বিডিও অফিসের সামনে যে কর্মসূচির আয়োজন করা হবে, তাতে যেন ভাল জনসমাগম হয়, সেই বিষয়টিও জেলা সভাপতিরা নিশ্চিত করতে নির্দেশ দিয়েছেন।

Advertisement

২১ জুলাই শহিদ দিবসের মঞ্চ থেকে তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় ‘দিল্লি চলো’ কর্মসূচির ঘোষণা করেছিলেন। সেই সময় ঠিক ছিল পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন জেলা থেকে নেতাকর্মীরা দিল্লি গিয়ে কৃষি ভবনের বাইরে ১০০ দিনের কাজের টাকা আটকে রাখা এবং কেন্দ্রীয় বঞ্চনার বিরুদ্ধে ধর্না দেবেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত দিল্লি পুলিশ অনুমতি না দেওয়ায় কর্মসূচিতে বদল করা হয়েছে। ঠিক হয়েছে তৃণমূলের সাংসদ, বিধায়ক, জেলা পরিষদের সভাধিপতি এবং পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতিরা দিল্লি গিয়ে প্রতিবাদ কর্মসূচিতে অংশ নেবেন। গান্ধী জয়ন্তীর দিনে রাজঘাটে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং অভিষেক প্রার্থনা করে কর্মসূচির সূচনা করবেন। পরে কেন্দ্রীয় গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রী গিরিরাজ সিংহের অফিসে যাবেন পাওনা আদায়ের দাবিতে। তাঁর দফতরে ৫০ লক্ষ চিঠি জমা দিয়ে দাবি আদায়ের পক্ষে সরব হবেন তাঁরা। পরের দিন ৩ অক্টোবর দিল্লির যন্তর মন্তরে একই দাবিতে ধর্না কর্মসূচি করবেন। এই দু’দিনের কর্মসূচিই জায়ান্ট স্ক্রিন মারফত ব্লকে ব্লকে সম্প্রচার করা হবে। এক তৃণমূল নেতার কথায়, “গ্রামীণ এলাকার মানুষ যে হেতু সরাসরি ১০০ দিনের কাজের সঙ্গে যুক্ত, তাই ১০০ দিনের কাজের টাকা আটকে রাখার কেন্দ্রীয় সরকারের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে দল যে দিল্লিতে প্রতিবাদ করছে তা গ্রামের মানুষের কাছে তুলে ধরতেই এই প্রচারের কৌশল নেওয়া হয়েছে।”

কর্মসূচিতে যোগদান করতে নেতাদের এক দিন আগেই দিল্লি পৌঁছে যেতে নির্দেশ দিয়েছেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক। আর মঙ্গলবার দিল্লিতে পশ্চিমবঙ্গের প্রতি কেন্দ্রীয় বঞ্চনা নিয়ে তৃণমূলের অভিযোগের পাল্টা কেন্দ্রীয় গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রী গিরিরাজের অভিযোগ, পশ্চিমবঙ্গের আবাস যোজনা কিংবা ১০০ দিনের কাজের মতো প্রকল্পে স্বচ্ছতা নেই বলেই অর্থ মঞ্জুর করা যাচ্ছে না। তিনি বলেছেন, “পশ্চিমবঙ্গে আবাস যোজনায় ৩৪ লক্ষ বাড়ি মঞ্জুর করা হয়েছে। অর্থও দেওয়া হয়েছিল। তার পরেও ১১ লক্ষ বাড়ি মঞ্জুর হয়েছে। তবে আগামী দিনে স্বচ্ছতা থাকলে তবেই টাকা দিতে পারব। পশ্চিমবঙ্গে ১০০ দিনের কাজেও প্রচুর দুর্নীতি হয়েছে।” তাই জাতীয় রাজনীতির কারবারিরা মনে করছেন, তৃণমূলের কর্মসূচির আগেই কেন তাঁদের দাবি পূরণ করা যাচ্ছে না, সেই বিষয়ে নিজের মত স্পষ্ট করে দিয়েছেন কেন্দ্রীয় গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রী। মনে করা হচ্ছে, গিরিরাজের এমন মন্তব্যের পর দিল্লিতে তৃণমূলের প্রতিবাদের সুর আরও বেশি আক্রমণাত্মক হতে পারে।

Advertisement
আরও পড়ুন