সুব্রত বক্সী। —ফাইল চিত্র।
তৃণমূলের অন্দরমহলে যখন নবীন-প্রবীণ দ্বন্দ্ব থামছে না। সেই বিতর্কের আবহেই বুধবার তৃণমূল ভবনে বাঁকু়ড়া জেলা নেতৃত্বকে নিয়ে বৈঠক করলেন রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সী। লোকসভা ভোটের কারণে জেলা নেতৃত্বের সঙ্গে বৈঠক শুরু করেছেন তিনি। শুরু করতে চেয়েছিলেন ব্যারাকপুর দিয়ে। যেখানে সাংসদ অর্জুন সিংহ বনাম বিধায়ক সোমনাথ শ্যামের কলহের ঘটনায় রাশ টানতে চেয়েছিলেন বক্সী। কিন্তু শেষ পর্যন্ত শনিবার নৈহাটি পুরসভায় বৈঠক করতে গিয়েও ফিরে আসতে হয়েছিল তাঁকে। কারণ বিধায়ক সোমনাথের অনুপস্থিতি। সেই বৈঠক না হওয়ায় দলের নেতা কুণাল ঘোষের কাছে তাঁকে খোঁচাও দিয়েছিলেন।
কিন্তু তারপরেও দমে না গিয়ে, মঙ্গলবার তৃণমূল ভবনেই পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা তৃণমূল নেতৃত্বের একাংশের সঙ্গে বৈঠক করেছিলেন তিনি। বুধবারও সেই পর্যায়েই বাঁকুড়া জেলা তৃণমূল নেতৃত্বের সঙ্গে বৈঠক করলেন এই প্রবীণ নেতা। গত লোকসভা ভোটের সময় থেকেই বাঁকুড়ায় বিজেপি ভাল ফল করেছে। ২০১৯ সালে বাঁকুড়া ও বিষ্ণুপুর লোকসভা আসন জিতেছিল বিজেপি। ২০২১ সালে গোটা রাজ্যে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে তৃণমূল বিরাট জয় পেলেও, বাকুঁড়া জেলায় আটটি আসনে জয় পেয়েছিল বিজেপি। তাই সেই জোড়া নির্বাচন থেকে শিক্ষা নিয়ে বাঁকুড়া জেলা তৃণমূল নেতৃত্বকে সংগঠনের ছোট ছোট সমস্যা মিটিয়ে ফেলতে বলেছেন রাজ্য সভাপতি।
সূত্রের খবর, সংগঠনের অভ্যন্তরীণ সমস্যা যাতে লোকসভা ভোটের ফলাফলের উপর কোনও প্রভাব না ফেলে সে দিকে নজর দিতে বলেছেন বক্সী। দু’টি আসনেই যাতে দলীয় প্রার্থীরা আগের মতো জয় পান সেই দায়িত্ব দলের সব নেতাকে নিতে হবে বলে জানিয়ে দিয়েছেন তিনি। প্রসঙ্গত, ২০১৪ সালের লোকসভা ভোটে বাঁকুড়ার দু’টি আসনে প্রথমবারের জন্য জয় পায় তৃণমূল। বাঁকুড়া আসনে অভিনেত্রী মুনমুন সেন ও বিষ্ণুপুর আসনে জয় পান সৌমিত্র খাঁ। কিন্তু ২০১৯ সালের লোকসভা ভোটে বাঁকুড়ায় প্রার্থী বদল করে তৃণমূল। মুনমুনকে আসানসোলে প্রার্থী করে পাঠিয়ে অধুনা প্রয়াত সুব্রত মুখোপাধ্যায়কে প্রার্থী করা হয়। সাংসদ সৌমিত্র দলবদল করে বিষ্ণুপুরে বিজেপির প্রার্থী হলে তৃণমূল টিকিট দেয় মন্ত্রী শ্যামল সাঁতরাকে। কিন্তু দু’টি আসনেই পরাজিত হন তৃণমূল প্রার্থীরা। কিন্তু এ বার সেই ঘটনার পুনরাবৃত্তি রুখতে চান বক্সী। তবে রাজ্য সভাপতির এই বৈঠকের পর তৃণমূলের এক নেতার কথায়, একটি জেলার নেতাদের হয়ত লোকসভা ভোটের প্রস্তুতি নিয়ে রাজ্য সভাপতি নির্দেশ দিতেই পারেন। কিন্তু, যে ভাবে দলের নেতারা প্রকাশ্যেই পরস্পরের বিরুদ্ধে বিবৃতি দিচ্ছেন, তাতে সবার আগে নেতৃত্বের উচিত নেতাদের সর্তক করা। তা না হলে জেলা নেতৃত্বের সঙ্গে রাজ্য সভাপতির বৈঠকও কোনও কাজে আসবে না।