TMC

সমন্বয়-সূত্র, উপদেষ্টা সংস্থার ভূমিকাও বেঁধে দিতে চাইছে তৃণমূল

দল ও প্রশাসনে সমন্বয়ের প্রয়োজন মানছে তৃণমূল কংগ্রেস। দলের সর্বোচ্চ স্তরে এই সমন্বয়ের জন্য নির্দিষ্ট করে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় ছাড়াও নাম উঠে আসছে দলের রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সীর।

Advertisement
রবিশঙ্কর দত্ত
শেষ আপডেট: ১৫ জানুয়ারি ২০২৫ ০৫:৫৩
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। —ফাইল চিত্র।

ক্ষমতায় আসার প্রায় দেড় দশক পরে দল ও প্রশাসনে সমন্বয়ের প্রয়োজন মানছে তৃণমূল কংগ্রেস। দলের সর্বোচ্চ স্তরে এই সমন্বয়ের জন্য নির্দিষ্ট করে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় ছাড়াও নাম উঠে আসছে দলের রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সীর। সেই সঙ্গেই দলের পরামর্শদাতা সংস্থার কাজ নির্দিষ্ট করার কথাও হয়েছে। সে ক্ষেত্রে কেবলই সহযোগী হিসেবে এই তিন জনের কাছে তারা প্রস্তাব দেবে, এমন কথাই চলছে।

Advertisement

দল ও প্রশাসনে রদবদলের আগে সামগ্রিক ভাবে কাজকর্ম পরিচালনা নিয়ে আলোচনা শুরু হয়েছে শাসক শিবিরে। প্রাথমিক ভাবে এই নিয়ে দলীয় প্রতিনিধির কথা হয়েছে পরামর্শদাতা সংস্থার সঙ্গেও। সেখানেই দল ও প্রশাসনের মধ্যে এই সমন্বয়ের বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয়েছে। দলীয় সূত্রে খবর, সেই আলোচনার সূত্রেই ওই তিন জনকে নির্দিষ্ট করে সমন্বয়ের কথা ভাবা হয়েছে। দুই ক্ষেত্রেই নিয়মিত সংস্কার ও প্রয়োজনীয় পদক্ষেপের জন্য মত বিনিময়ের এই ভাবনা দলে নতুন হলেও কার্যকর বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্ট সকলে। রাজ্য দলের এক নেতার কথায়, ‘‘সমন্বয় আগেও ছিল, এখনও আছে। তা নিয়মিত করার প্রয়াস অবশ্যই ইতিবাচক পদক্ষেপ হতে পারে।’’ সেই সঙ্গে তাঁর মন্তব্য, ‘‘তৃণমূলের সংবিধান অনুযায়ী, সমস্ত ক্ষমতা চেয়ারপার্সনের (মমতা) উপরে ন্যস্ত। সেই সিদ্ধান্ত কাযর্কর করার জন্য প্রয়োজনীয় সমন্বয়ের সিদ্ধান্ত নিশ্চয়ই জরুরি।’’

আগামী মাসে রাজ্য বাজেট। রাজ্যে ২০২৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনের আগে পূর্ণাঙ্গ এই বাজেটেই দলের ভোট-কৌশল তৈরি করতে পারেন মমতা। তার পরে সেই বাজেটকে কাজে লাগিয়ে ও প্রচারে পরবর্তী এক বছর ধরে সাধারণ মানুষের কাছে নিয়ে যাওয়ার ভাবনা রয়েছে সর্বোচ্চ নেতৃত্বের। একই সঙ্গে ভোটের মুখে সরকারের চালু প্রকল্পগুলি রূপায়ণে নজরদারির প্রয়োজন মেনে নিয়েও মতামত ও তথ্য বিনিময়ের উপরে জোর দিতেই এই রকম সমন্বয়ের কথা ভাবা হয়েছে। নিয়মিত এই সমন্বয়ের জন্য তিন শীর্ষ স্থানীয় নেতাকে নিয়ে আনুষ্ঠানিক কোনও কমিটি গড়া হবে কি না, তা পরবর্তী পর্যায়ে আলোচনা করে ঠিক হবে। সেখানেই সংগঠন পরিচালনা, রাজনৈতিক কৌশল নির্ধারণ এবং প্রশাসনিক কাজের গতিপ্রকৃতি নিয়ে মত বিনিময় হবে।

এই ভাবনার পিছনে আরও একটি বিষয় রয়েছে, তা হল পরামর্শদাতা সংস্থার ভূমিকা নির্দিষ্ট করে দেওয়া। দলের প্রতিনিধির সঙ্গে সংস্থার কর্তাদের যে কথা হয়েছে, সেখানে বলা হয়েছে, তাঁরা কৌশল এবং প্রচারের অভিমুখ চিহ্নিত করে দিন। দল কোন পথে এগোবে, তা চূড়ান্ত হবে এই শীর্ষ স্তরে। তাতে প্রতি পদক্ষেপে সকলের মতামতের প্রতিফলন থাকবে। এবং কোনও স্তরেই তা নিয়ে দলের কোনও ‘ধোঁয়াশা’ তৈরির সুযোগ থাকবে না।

প্রসঙ্গত, উপদেষ্টা সংস্থার ‘পরামর্শ’ অনুযায়ী নানা ক্ষেত্রে যে ভাবে দলের কাজ চলেছে, তা নিয়ে দলীয় বৈঠকেই ইতিমধ্যে উষ্মা প্রকাশ করেছেন তৃণমূল নেত্রী। দলীয় সূত্রের ব্যাখ্যা, পরামর্শদাতা সংস্থাকে অতিরিক্ত ‘গুরুত্ব’ দিতে বা তাদের হাতে ‘রাশ’ ছাড়তে নারাজ তিনি। আগামী বিধানসভা ভোটের প্রস্তুতির সময়ে প্রশাসন ও দলের নিয়ন্ত্রণ মমতা যখন নিজের হাতে শক্ত করে রাখছেন, তার পাশাপাশি সংস্থার ভূমিকা নির্দিষ্ট করে দেওয়ার পরিকল্পনা চলছে। তৃণমূলের পুরনো নেতারা মনে করিয়ে দিচ্ছেন, পার্থ চট্টোপাধ্যায় মহাসচিব থাকার সময়েও ওই সংস্থার ভূমিকার পরিধি নিয়ে দলে প্রশ্ন উঠেছিল।

Advertisement
আরও পড়ুন