ওট্সের রয়েছে নানা প্রকার। ছবি: সংগৃহীত।
শরীরের কথা ভেবে জলখাবারে দুধ-ওট্স খান। কেউ আবার ওট্সের খিচুড়ি খেতেও ভালবাসেন। হাতে সময় থাকলে তোয়াজ করে পরিজ় বানিয়ে নেন মাঝেমধ্যে। তবে যে পদই বানান না কেন, ওট্সের প্যাকেট তো সেই একটিই। অফিসে হঠাৎ এক সহকর্মীকে ‘রোল্ড ওট্স’ খেতে দেখে প্রথম মনে সন্দেহ দানা বাঁধে। ইন্টারনেট ঘেঁটে জানতে পারেন ওট্সেরও বিভিন্ন প্রকার রয়েছে। রাঁধলে হয়তো দেখতে সবই এক রকম লাগবে। কিন্তু পুষ্টিবিদেরা বলছেন, প্রতিটি ধরনের পুষ্টিগুণ আলাদা। তাই কেনার আগে দেখে নেওয়া যেতে পারে ওট্সের গুণাগুণ।
কী কী আছে ওট্সে?
১) ফাইবারে সমৃদ্ধ:
ওট্সে রয়েছে ‘বিটা-গ্লুকান’ ফাইবার। এটি হজম সংক্রান্ত সমস্যা নিয়ন্ত্রণে রাখে। রক্তে শর্করার মাত্রা চট করে বাড়তে দেয় না। আবার, কোলেস্টেরলের মাত্রা স্বাভাবিক রাখে।
২) হার্টের জন্য ভাল:
সহজপাচ্য ফাইবার এবং অ্যান্টিঅক্সিড্যান্টে সমৃদ্ধ ওট্স খেলে হার্টও ভাল রাখে। কার্ডিয়োভাসকুলার রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি কমায়। ‘জার্নাল অফ ফুড সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি’ জার্নালে প্রকাশিত একটি গবেষণাপত্রে বলা হয়েছে, রক্তে লিপিডের মাত্রা স্বাভাবিক রাখতেও ডায়েটে ওট্স রাখা ভাল।
৩) ওজন নিয়ন্ত্রণে থাকে:
ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে গেলে কম ক্যালোরির খাবার খাওয়া প্রয়োজন। ওট্স সে দিক থেকে নিরাপদ। ফাইবারে সমৃদ্ধ খাবার অন্ত্র ভাল রাখে। ‘নিউট্রিয়েন্টস’ জার্নালে প্রকাশিত একটি গবেষণাপত্রে বলা হয়েছে, রোজ ওট্স খেলে রক্তে লিপিডের মাত্রা স্বাভাবিক থাকে, ফলে ওজনও নিয়ন্ত্রণে থাকে।
৪) ত্বকের জন্য ভাল:
ওট্সে অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট এবং অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি উপাদান রয়েছে। তাই নিয়মিত ওট্স খেলে ত্বকের প্রদাহজনিত সমস্যা নিয়ন্ত্রণে থাকে, যা ত্বক আর্দ্র রাখতেও সাহায্য করে।
৫) রক্তে শর্করা নিয়ন্ত্রণে থাকে:
ওট্সে রয়েছে ফাইবার, যা রক্তে ভাসমান শর্করা শোষণে বাধা দেয়। তা ছাড়া ওট্সের গ্লাইসেমিক ইনডেস্ক কম। তাই ডায়াবেটিকদের জন্যও ওট্স নিরাপদ।
কত ধরনের ওট্স পাওয়া যায়?
১) হোল ওট্স:
ওট্সের এই প্রকারটি রাঁধতে একটু বেশি সময় লাগে। যে হেতু হোল ওট্সে ফাইবারের পরিমাণ বেশি, তাই পুষ্টিগুণের দিক থেকে এটিকে এগিয়ে রাখাই যায়।
২) স্টিল-কাট ওট্স:
আবার পুষ্টিবিদেরা বলছেন, ‘স্টিল-কাট’ ওট্স সর্বগুণসম্পন্ন। যে হেতু এটি ছোট ছোট টুকরো করা থাকে, তাই রাঁধতে বেশি সময়ও লাগে না। হার্টের জন্যও ভাল।
৩) রোল্ড ওট্স:
অনেকটা কর্নফ্লেক্সের মতো দেখতে রোল্ড ওট্স। তবে আকারে কর্নফ্লেক্সের তুলনায় অনেকটাই ছোট। বাজারে সাধারত যে ওট্স পাওয়া যায়, তা এটিই। স্বাস্থ্যের জন্য এটিও ভাল।
৪) ইনস্ট্যান্ট ওট্স:
কম সময়ে ওট্স দিয়ে নানা ধরনের পদ রাঁধার জন্য অনেকেই এটি ব্যবহার করেন। বিশেষ এই ধরনের ওট্স আগে থেকে সেদ্ধ করে, শুকিয়ে তার পর প্যাকেটজাত করা হয়। সঙ্গে নানা ধরনের মশলাও থাকে।
ওট্স কেনার আগে কী কী মাথায় রাখবেন?
দোকান থেকে ওট্স কেনার আগে কয়েকটি জিনিস দেখে নেওয়া দরকার। তা যেন ১০০ শতাংশ রাসায়নিক-বর্জিত হয়। ওট্স প্যাকেটজাত করার সময়ে ‘প্রিজ়ারভেটিভ’, কৃত্রিম স্বাদ, বর্ণ, গন্ধ ব্যবহার না করা হলেই ভাল। খুব বেশি প্রক্রিয়ার মধ্যে দিয়ে গেলে ওট্সে ফাইবার, ভিটামিন, খনিজগুলি নষ্ট হয়ে যেতে পারে। তাই সেই সম্পর্কে সচেতন হওয়া প্রয়োজন।