Mukul Roy in Delhi

বাংলায় ‘পরিবর্তন’ চান মুকুল! দিল্লি থেকে দাবি, মানসিক চাপের মধ্যে তৃণমূলে ফিরেছিলেন তিনি

মুকুল রায় বিজেপিতে ফিরে আসতে চান। যদিও খাতায়কলমে তিনি বিজেপিরই বিধায়ক। তবে গেরুয়া শিবিরের সঙ্গে দূরত্ব অনেক। এ বার তৃণমূলের সঙ্গেও দূরত্ব বাড়িয়ে রাজ্যে পরিবর্তন চাইলেন।

Advertisement
নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৯ এপ্রিল ২০২৩ ১৫:৩০
TMC leader Mukul Roy says he is trying to contact BJP leadership

ফের সরব হলেন মুকুল রায়। — ফাইল চিত্র।

পঞ্চায়েত নির্বাচনেই রাজ্যে ‘পরিবর্তন’ চান মুকুল রায়। তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে এসে কৃষ্ণনগর উত্তরের বিধায়ক হয়ে ফের তৃণমূলে ফিরে যাওয়া মুকুল এখন বিজেপিতে যেতে চাইছেন। সেই চাওয়ার কথা জানাতে গিয়েই বুধবার এবিপি আনন্দকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে বাংলায় ‘পরিবর্তন’ চান বলে জানিয়েছেন মুকুল। সেই সঙ্গে জানিয়েছেন, কেন তিনি তৃণমূলে ফিরেছিলেন আর বিজেপিতে ফেরার জন্য কী ভাবে চেষ্টা করছেন। তৃণমূল অবশ্য মুকুলের এ সব দাবিকে একেবারেই গুরুত্ব দিতে রাজি নয়।

সোমবার রাতে আচমকাই দিল্লি চলে যান মুকুল। তাঁর ছেলে শুভ্রাংশু রায়ের অভিযোগের ভিত্তিতে রাজ্য পুলিশ অপরহণের তদন্তও শুরু করেছে। এরই মধ্যে মঙ্গলবার রাতে মুকুল নিজেই বলেছেন, ‘‘শরীর ভাল ছিল না বলে কিছু দিন পুরো মাত্রায় রাজনীতি করতে পারিনি। এখন শরীরটা সুস্থ হয়েছে। অমিত শাহজি, নড্ডাজি (বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জেপি নড্ডা)-র সঙ্গে কথা বলব। বিজেপি করব কি না, এখনও ঠিক করিনি। সে রকম হলে বিজেপি করব আবার।’’

Advertisement

আর বুধবার সকালে মুকুল বলেন, ‘‘স্ত্রী বা নিকটাত্মীয়কে হারালে যেমন মানসিক অবস্থা হয়, সেটা হয়েছিল, এখন আর নেই। আমি বিজেপিতে ছিলাম, আছি, থাকব।’’ বিজেপিতে পুরোদস্তুর থাকার সময়ে পদ্মের তৎকালীন রাজ্য পর্যবেক্ষক তথা সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক কৈলাস বিজয়বর্গীয়ের সঙ্গে খুবই ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক ছিল মুকুলের। এ বার মুকুলের দিল্লিযাত্রার সঙ্গে কৈলাসের যোগ থাকার সম্ভাবনা থাকতে পারে বলে অনেকে মনে করেছিলেন। কিন্তু মুকুল জানিয়েছেন, তিনি ফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করলেও কৈলাস সাড়া দেননি।

তবে দিল্লিতে বসে বাংলার শাসক তৃণমূলের উপরে চাপ তৈরির চেষ্টাও করেছেন মুকুল। দাবি করেন, তৃণমূলে ফেরার সময়ে তাঁর মানসিক স্থিতি ঠিক ছিল না। মুকুল বলেন, ‘‘সেই সময় স্ত্রীবিয়োগ হওয়ায় মানসিক চাপে ছিলাম। এখন একদম ঠিক আছি।’’ একই সঙ্গে বলেন, ‘‘তৃণমূল আর সেই জায়গায় নেই। তৃণমূল যে কাজকর্মগুলো করছে সেগুলো বাংলার পক্ষে ভাল নয়। এ জেলে, ও জেলে। এটা মোটেই ভাল জিনিস নয়। এর খেসারত দিতে হবে।’’

মুকুল যে পার্থ চট্টোপাধ্যায়, অনুব্রত মণ্ডলদের কথাই বলতে চেয়েছেন সেটা স্পষ্ট। তবে তিনি এর দায় তৃণমূল নেতৃত্বকে নিতে হবে না বলেই দাবি করেছেন। মুকুল বলেছেন, ‘‘প্রত্যেকেই প্রাপ্তবয়স্ক। ফলে দায়দায়িত্ব নিজেদেরই নিতে হবে। অন্য কে নেবে?’’ এর পরেই রাজ্যে আসন্ন পঞ্চায়েত নির্বাচন প্রসঙ্গে বলেন, ‘‘ভোট যখন করব, লড়াই যখন করব, তখন পরিবর্তন তো চাইবই। পরিবর্তন দরকার, কারণ বাংলায় একটা অসহ্য পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে।’’

মুকুলের এই বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় তৃণমূল সাংসদ শান্তনু সেন বলেন, ‘‘মানুষের আশীর্বাদে তৃণমূল বাংলায় মহীরুহ হয়ে গিয়েছে। সেই অবস্থায় কোন মুকুল কোন গাছে ধরল আর কোথায় ঝরে পড়ল তাতে দলের কিছু যায়-আসে না।’’ একই সঙ্গে তৃণমূলের ওই চিকিৎসক সাংসদের বক্তব্য, ‘‘চিকিৎসকেরাই রিপোর্টে বলেছেন যে, তিনি সব কিছু ভুলে যান। তিনি বলছেন আমি সাংসদ, লোকসভার অধিবেশনে অংশ নিতে এসেছি। তিনি কী বলছেন আর কী বলছেন না তার কোনও বিশ্বাসযোগ্যতা নেই।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
আরও পড়ুন
Advertisement