কালো গাড়িতে করে নার্সিংহোমে নিয়ে যাওয়া হল বাইরন বিশ্বাসকে। —নিজস্ব চিত্র।
আয়কর হানার মাঝেই অসুস্থ হয়ে পড়লেন মুর্শিদাবাদের সাগরদিঘির বিধায়ক বাইরন বিশ্বাস। বুধবার সন্ধ্যার পর থেকে শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ায় তাঁকে রাতে নিজের নার্সিংহোমেই ভর্তি করানো হল।
বুধবার সকাল ৬টা নাগাদ বাইরনের শমসেরগঞ্জের বাড়িতে যান আয়কর আধিকারিকেরা। তখন থেকে বিধায়কের বাড়িতে তল্লাশি অভিযান চলছে। পরিবার সূত্রে খবর, দুপুর ১০টা নাগাদ নথি পরীক্ষা জিজ্ঞাসাবাদ করা শুরু করেন কেন্দ্রীয় সংস্থার কর্তারা। তখন থেকেই অসুস্থ বোধ করতে থাকেন বাইরন। সেই সময় বাড়িতে চিকিসকদের নিয়ে আসা হয়। কিন্তু সন্ধ্যার পর তাঁর শারীরিক অবস্থার অবনতি হয়। এর পর রাত ৯টা নাগাদ একটি কালো গাড়ি করে বাইরনকে তাঁর নিজের নার্সিংহোমে নিয়ে যাওয়া হয় বলে খবর পরিবার সূত্রে। ওই সূত্রেরই দাবি, রক্তে শর্করার মাত্রা অস্বাভাবিক হারে কমে যাওয়ার কারণেই অসুস্থ হয়ে পড়েছেন বিধায়ক।
বাইরনের বাড়িতে এখনও তল্লাশি অভিযান চালিয়ে যাচ্ছেন আয়কর দফতরের কর্তারা। রাতের দিকে বিধায়কের বাড়িতে টোটোতে বালিশ, কম্বল নিয়ে আসা হয়েছে। মনে করা হচ্ছে, আয়কর কর্তাদের জন্যই আনা হয়েছে এগুলি। কেন্দ্রীয় সংস্থা সূত্রে খবর, বাইরনের বাড়ি থেকে এখনও পর্যন্ত নগদ ৭২ লক্ষ টাকার হদিস মিলেছে।
বাড়ি ছাড়াও আয়কর আধিকারিকদের কয়েক জন বিধায়কের বিড়ি কারখানা, স্কুল ও হাসপাতালে গিয়ে তল্লাশি চালান। বাড়িতে তল্লাশি অভিযান চলাকালীন বিধায়কের পরিবারের সদস্যদেরও জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। বিকেলে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে বাড়ি থেকে বেরিয়ে এসে আয়কর আধিকারিকদের ভূয়সী প্রশংসা করতে দেখা গিয়েছিল বাইরনের বাবা বাবর বিশ্বাসকে। তিনি বাইরে বেরোতেই তাঁকে আয়কর আধিকারিকদের জিজ্ঞাসাবাদ নিয়ে প্রশ্ন করতে থাকেন সংবাদমাধ্যমের প্রতিনিধিরা। সেই সময়েই কেঁদে ফেলেন বাইরনের বাবা। তিনি দাবি করেন, আয়কর আধিকারিকদের কেউ কেউ তাঁকে নিজের বাবার মতো মনে করে সম্মান দিয়েছেন। তাঁর কথায়, ‘‘বড় মাপের এক জন অফিসার আমায় বলেছে, ‘আপনি আমার বাবার মতো। আমার খুব ভাল লেগেছে।’’ বাবর আরও দাবি করেছিলেন, তাঁদের পারিবারিক ব্যবসা নিয়ে অনেক কথা বলেছেন আয়কর আধিকারিকেরা। এলাকার গরিব মানুষের উন্নতিসাধনে তাঁদের যা অবদান, তার প্রশংসাও করেছেন তাঁরা। বাবর বলেন, ‘‘আয়করের কর্তারা আমাকে বলেছেন, ‘আমরা জানি, আপনি খুব ভাল লোক। আপনি খুব দয়ালু লোক। গরিব মানুষের জন্য ভাল কাজ করেছেন আপনারা। আপনার স্কুলে অনেক গরিব ছেলে ফ্রি-তে পড়াশোনা করে। গরিব মানুষদের বিনামূল্যে চিকিৎসা করান আপনারা’’’