Tigress Zeenat

জ়িনত কখন আসবে জল খেতে! পুকুরপাড়ে ঠায় বসে আশাহত বনকর্মীরা, শেষে হুলা ডেকে ‘বাঘবন্দি খেলা’

বাঘিনি আবার জল খেতে আসতে পারে, এই আশায় তার পর থেকে পুকুরপাড়ের কাছেপিঠে ঘাপটি মেরে বসেছিলেন বনকর্মীরা। সঙ্গে ছিল ট্র্যাঙ্কুলাইজ দল। কিন্তু সারা দিন বসে থেকেও দেখা মিলল না জ়িনতের!

Advertisement
আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ২৬ ডিসেম্বর ২০২৪ ২২:০০
This time forest department called a hula party to catch the tigress Zeenat

সারা দিন বসে থেকেও দেখা মিলল না জ়িনতের! —প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।

ছাগল মেরে খাওয়ার পর বুধবার গ্রামের অদূরে পুকুরে জল খেতে এসেছিল জ়িনত। পুকুরপাড়ে তার পায়ের ছাপ মিলেছিল। বাঘিনি আবার জল খেতে আসতে পারে, এই আশায় তার পর থেকে পুকুরপাড়ের কাছেপিঠে ঘাপটি মেরে বসেছিলেন বনকর্মীরা। সঙ্গে ছিল ট্র্যাঙ্কুলাইজ দল (যারা ঘুমপাড়ানি গুলি ছুড়ে বাঘিনিকে কাবু করবে)। কিন্তু সারা দিন বসে থেকেও দেখা মিলল না জ়িনতের! বাঘিনিকে খাঁচাবন্দি করার চেষ্টায় শেষমেশ ডাক পড়ল হুলা পার্টির।

Advertisement

পুরুলিয়ার বান্দোয়ানে রাইকা পাহাড় থেকে বুধবারই নিজের আস্তানা বদলে পাশের ভাঁড়ারি পাহাড়ের জঙ্গলে ঘাঁটি গেড়েছে ওড়িশা থেকে আসা জ়িনত। বন দফতর সূত্রে খবর, বৃহস্পতিবার আর সে আস্তানা বদলায়নি। এত দিন ধরে জ়িনতকে বাগে আনতে জায়গায় জায়গায় খাঁচা বসিয়ে টোপ ফেলে রেখেছিলেন বনকর্মীরা। কিন্তু একটি টোপও গেলেনি বাঘিনি। খাঁচার আশপাশ ঘুরে সেখান থেকে চলে গিয়েছে সে। তাই এ বার হুলা পার্টি ডেকে বাঘিনিকে ধরতে চাইছে বন দফতর।

রাইকা এবং ভাঁড়ারি পাহাড় হাতের তালুর মতো চেনেন, স্থানীয় এমন ৭০ জনকে নিয়ে চারটি পৃথক হুলা পার্টি তৈরি করে বৃহস্পতিবার দুপুর থেকে ভাঁড়ারি পাহাড়ে উঠতে শুরু করেন বনকর্মী ও পুলিশ আধিকারিকেরা। ওই দলে রয়েছে ওড়িশার সিমলিপাল ব্যাঘ্রপ্রকল্পের বনকর্মীরাও। পাহাড়ের যে দিক থেকে হুলা পার্টির অভিযান শুরু হয়েছে, ঠিক তার উল্টো দিকে জালের বেড়া দেওয়া রয়েছে। হুলা পার্টির তাড়া খেয়ে জ়িনত পাহাড়ের উল্টো দিকের ঢাল দিয়ে পালানোর চেষ্টা করলেই যাতে তাকে জালবন্দি করা যায়। পুরুলিয়ার ডিএফও পূরবী মাহাতো বলেন, ‘‘বাঘিনি ওই এলাকাতেই রয়েছে। তাকে সুস্থ ভাবে ওড়িশায় পাঠানোর চেষ্টা চলছে। রেডিয়ো কলারের মাধ্যমে তার গতিবিধির নজর রাখা হচ্ছে।’’

গত ১৫ নভেম্বর মহারাষ্ট্রের তাডোবা-আন্ধারি ব্যাঘ্র প্রকল্প থেকে তিন বছরের জ়িনতকে ওড়িশার ময়ূরভঞ্জ জেলার সিমলিপাল ব্যাঘ্র প্রকল্পে (টাইগার রিজ়ার্ভ, সংক্ষেপে বা এসটিআর) আনা হয়েছিল। কয়েক দিন ঘেরাটোপে রেখে পর্যবেক্ষণের পরে রেডিয়ো কলার পরিয়ে ২৪ নভেম্বর তাকে সিমলিপাল ব্যাঘ্র প্রকল্পের জঙ্গলে ছাড়া হয়েছিল। তার পরেই ঝাড়খণ্ডের দিকে হাঁটা দেয় জ়িনত। কয়েক দিন ঝাড়খণ্ডে ঘুরে চাকুলিয়া রেঞ্জের রাজাবাসার জঙ্গল পেরিয়ে চিয়াবাঁন্ধি এলাকা থেকে ঝাড়গ্রামের বেলপাহাড়ি থানার অন্তর্গত কাটুচুয়া জঙ্গলে ঢুকে পড়ে সে। তার পর ঝাড়গ্রাম থেকে বাঘিনি ঢুকে পড়ে পুরুলিয়ায়।

Advertisement
আরও পড়ুন