Chopra Assault Case

চোপড়াকাণ্ড প্রকাশ্যে আনা সেলিম-অমিতের বিরুদ্ধে নির্যাতিতার এফআইআরে ‘রাজনীতি’ই দেখছে দু’দল

আট দিন আগে রবিবার দুপুরে চোপড়ার ঘটনাটি প্রকাশ্য আসে মহম্মদ সেলিমের একটি এক্স (সাবেক টুইটার) হ্যান্ডল পোস্টে। পরে সেই ভিডিয়ো শেয়ার করেছিলেন অমিত মালবীয়ও।

Advertisement
আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৮ জুলাই ২০২৪ ১৪:৫৪
(বাঁ দিকে)  মহম্মদ সেলিম। অমিত মালবীয় (ডান দিকে)।

(বাঁ দিকে) মহম্মদ সেলিম। অমিত মালবীয় (ডান দিকে)। —ফাইল চিত্র।

চোপড়ায় নির্যাতনের ঘটনা রাজ্যের গণ্ডি পেরিয়ে দিল্লির সংসদে গিয়ে পৌঁছেছিল যাঁদের দৌলতে, সেই মহম্মদ সেলিম এবং অমিত মালবীয়ের বিরুদ্ধেই মামলা করলেন চোপড়ার নির্যাতিতা তরুণী। তাঁর অভিযোগ, তাঁকে রাস্তায় ফেলে মারধরের ভিডিয়ো তাঁর অনুমতি ছাড়াই ভাইরাল করা হয়েছে সমাজমাধ্যমে। তথ্য ও প্রযুক্তি আইনে ৬৬এ/৬৬ই/ এবং ৬৭ এ ধারায় মামলা করেছে

Advertisement

গত ৩০ জুন দুপুরে প্রকাশ্যে এসেছিল চোপড়ার ওই ভিডিয়ো (ভিডিয়োটির সত্যতা যাচাই করেনি আনন্দবাজার অনলাইন) তার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই সন্ধ্যায় গ্রেফতার করা হয়েছিল নির্যাতনের ঘটনায় অভিযুক্ত তৃণমূল নেতা তাজিমুল ইসলাম ওরফে জেসিবিকে। নির্যাতিতদেরও দেওয়া হয়েছিল পুলিশি সুরক্ষা। চোপড়ার পুলিশ সুপার জানাচ্ছেন, ওই দিনই রাতে চোপড়া থানায় অভিযোগ দায়ের করেন নির্যাতিতা। লিখিত অভিযোগ জানান ভিডিয়ো প্রকাশকারীদের বিরুদ্ধে। পরের দিন দায়ের করা হয় এফআইআর। যদিও বিরোধীরা মনে করছেন, মামলাটি ওই নির্যাতিতা নিজে করেননি। তাঁকে দিয়ে ওই মামলা করানো হয়েছে।

এ প্রসঙ্গে সেলিম বলেন, ‘‘এর আগেও আমার বিরুদ্ধে এফআইআর হয়েছিল। আমাকে পলাতক দেখানো হয়েছিল। এ সবে আমি ভয় পাই না। রাজনৈতিক লড়াই রাজনৈতিক ভাবেই লড়ব। যে ভাবে নির্যাতিতাকে দিয়ে তিস্তা শেতলবাদের বিরুদ্ধে মামলা করানো হয়েছিল, এ ক্ষেত্রেও তা-ই হয়েছে। মোদী-মমতার মডেল এক।’’

আট দিন আগে রবিবার দুপুরে নিজের এক্স (সাবেক টুইটার) হ্যান্ডলে চোপড়ার ঘটনাটির একটি ভিডিয়ো প্রকাশ করেছিলেন সেলিম। ভিডিয়োয় দেখা গিয়েছিল, এক তরুণ এবং তরুণীকে রাস্তায় ফেলে কঞ্চির ছড়া দিয়ে যথেচ্ছ মারধর করছেন এক ব্যক্তি। চারপাশে ভিড় করে দাঁড়িয়ে সেই দৃশ্য দেখছেন একদল মানুয। তাঁদের সামনেই মার খেতে খেতে গুটিয়ে যাচ্ছেন তরুণী। কিন্তু নিগ্রহকারীকে কেউ বাধা দিচ্ছেন না। তিনি তরুণীর চুলের মুঠি ধরে টেনে এনে ধাক্কা দিয়ে মাটিতে ফেলে আবার মারছেন। মেরেই চলেছেন (ভিডিয়োটির সত্যতা যাচাই করেনি আনন্দবাজার অনলাইন) কিন্তু ভিডিয়োটি প্রকাশ্যে আসার ঘণ্টাখানেকের মধ্যেই এ নিয়ে শোরগোল পড়ে যায় রাজ্যে। সেলিম ভিডিয়োটি পোস্ট করে লিখেছিলেন, ‘‘ভিডিয়োয় যাঁকে মারতে দেখা যাচ্ছে, তিনি তৃণমূলের গুন্ডা।’’ পরে ওই একই ভিডিয়ো পোস্ট করে বিজেপির আইটি সেলের প্রধান অমিতও রাজ্যের শাসকদল তৃণমূলকে আক্রমণ করেন।

সেই অমিতের বিরুদ্ধে মামলা প্রসঙ্গে সেলিমের সুরেই কথা বলেছে বিজেপিও। রাজ্য বিজেপির প্রধান মুখপাত্র তথা রাজ্যসভার সাংসদ শমীক ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘অমিত মালবীয়ের বিরুদ্ধে এফআইআর হবে এটাই স্বাভাবিক। কারণ, পশ্চিমবঙ্গে তালিবানি শাসন চলছে। রাজ্যের মন্ত্রীরা ১৯৪৬ সালের সুরাবর্দির ভাষায় কথা বলছেন। মুখ্যমন্ত্রীর কোনও বিবৃতি নেই। ফলে অমিত মালবীয়ের বিরুদ্ধে এফআইআর নিয়ে আমরা অবাক হচ্ছি না।’’

চোপড়ার ওই ভিডিয়োটি প্রকাশ্যে আসার পরে তা নিয়ে দিল্লিতে সরব হয়েছিল বিজেপি। সংসদ চত্বরে বিজেপি সাংসদ কঙ্গনা রানাউত চোপড়া নিয়ে সমালোচনা করেন বাংলার সরকারের । সংসদের বক্তৃতায় নাম না করে চোপড়ার ঘটনার উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীও। কিন্তু যাঁকে নিয়ে এত কিছু, আপাতত তাঁরই মামলায় অভিযুক্ত তাঁর পক্ষ নিয়ে কথা বলা রাজ্যের দুই বিরোধী দলের দুই নেতা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
আরও পড়ুন
Advertisement