Calcutta High Court

শান্তিতে ঘুমের পক্ষে রায় দিল হাই কোর্ট, ১৫ দিনের মধ্যে সরাতে বলল ফরাক্কার সেই বাসন কারখানা

মামলাকারীদের বক্তব্য, সরকার বাড়ি বানানোর জন্য জমি দিয়েছিল। সেই জমিতে বাড়ি না বানিয়ে এক জন বাসন তৈরির কারখানা করেছেন। ওই কারখানার শব্দে ঘুমোতে পারছেন না এলাকার বাসিন্দারা।

Advertisement
আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৪ জুলাই ২০২৪ ১৯:৩৬
The Calcutta High Court ordered the removal of the illegal vessels factory at Farakka in Murshidabad

—ফাইল চিত্র।

রাতে শান্তিতে ঘুমনোর পক্ষে রায় দিল কলকাতা হাই কোর্ট। মুর্শিদাবাদে শমসেরগঞ্জের বাসন কারখানা ১৫ দিনের মধ্যে সরানোর নির্দেশ দিল উচ্চ আদালত। প্রধান বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানম এবং বিচারপতি হিরণ্ময় ভট্টাচার্যের ডিভিশন বেঞ্চ জানায়, ওই এলাকা থেকে বাসন কারখানা সরিয়ে ফেলতে হবে। কারখানার মালিককে ১৫ দিনের মধ্যে কারখানা অন্যত্র সরিয়ে নিয়ে যেতে হবে। দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের অনুমতি রয়েছে এবং বাসিন্দাদের আপত্তি নেই, এমন এলাকায় কারখানা করা যেতে পারে। পাশাপাশি, আদালত জানায়, আপাতত ওই কারখানায় বন্ধ থাকবে বাসন উৎপাদন।

Advertisement

বাসন কারখানার শব্দে রাতে ঘুম নষ্ট হচ্ছে। ফলে জীবনে শান্তি বিঘ্নিত হওয়ার অভিযোগ তুলে হাই কোর্টে জনস্বার্থ মামলা দায়ের হয়। মুর্শিদাবাদের শমসেরগঞ্জের ভাসাইপাইকর গ্রামের কয়েক জন আদালতের দ্বারস্থ হন। তাঁদের বক্তব্য, ১৯৬৪ সালে ফরাক্কায় ব্যারেজ তৈরির প্রকল্পের জন্য ওই এলাকায় অনেক জমি অধিগ্রহণ করা হয়। জমি যায় মুর্শিদাবাদের মহব্বতপুর গ্রামের লোকেদেরও। পরে সরকারের তরফে জমিহারাদের কিছু পরিমাণে জায়গা দেওয়া হয়। জিয়াউল শেখ-সহ জনস্বার্থ মামলাকারীদের বক্তব্য, সরকার বাড়ি বানানোর জন্য ওই জমি দিয়েছিল। সেখানে জমি পেয়েছেন এমন এক ব্যক্তি বাড়ি না বানিয়ে সম্প্রতি বাসন তৈরির কারখানা করেছেন। ফলে ওই কারখানা থেকে ইস্পাতের ব্যাপক শব্দ হয়। রাতে ওই শব্দ আরও ভয়ানক আকার ধারণ করে। ওই শব্দে রাতে ঘুমোতে পারছেন না এলাকার বাসিন্দারা। তাঁদের আরও অভিযোগ, ওই কারখানা থেকে নির্গত বর্জ্য রাসায়নিক পদার্থ পরিবেশের ক্ষতিও করছে। এ সবের পরেও প্রশাসন কোনও পদক্ষেপ করেনি।

মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অধীনে রাজ্যের স্বরাষ্ট্র দফতরকেও বিষয়টি জানান ওই এলাকার বাসিন্দারা। অভিযোগ জানানো হয়, জেলাশাসক, জেলা পুলিশের কাছেও। ওই কারখানা গড়তে দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের অনুমতি ছিল কি না, তা জানতে চায় হাই কোর্ট। গত ৭ জুলাই প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ পর্ষদকে মামলায় যুক্ত করতে নির্দেশ দেয়। গত বৃহস্পতিবার রাজ্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ জানায়, ওই এলাকায় কারখানা তৈরির অনুমোদন তুলে নেওয়া হয়েছে। এলাকার প্রধান আদালতে জানান, প্রাথমিক ভাবে অনুমতি দেওয়া হয়েছিল। পরবর্তীতে ওই জমি যাচাই করা হয়েছে। দেখা গিয়েছে, ওই জায়গায় শুধু মাত্র বাড়ি তৈরি করা যেতে পারে। শিল্প সংক্রান্ত কোনও কাজকর্ম করা যাবে না। এর পরেই আদালত মামলাটির নিষ্পত্তি করে ওই কারখানা সরিয়ে ফেলার নির্দেশ দেয়।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
আরও পড়ুন
Advertisement