কর্ণধার সঞ্জীব গোয়েন্কার (মাঝে) সঙ্গে ঋষভ পন্থ (ডান দিকে)। রয়েছেন মেন্টর জ়াহির খানও (বাঁ দিকে)। — নিজস্ব চিত্র।
জল্পনাই সত্যি হল। আইপিএলে লখনউয়ের নতুন অধিনায়ক হলেন ঋষভ পন্থ। সোমবার আলিপুরের আরপিএসজি হাউসে ভারতীয় উইকেটকিপারকে পাশে নিয়ে ঘোষণা করলেন দলের মালিক সঞ্জীব গোয়েন্কা।
২০২২ সাল থেকে আইপিএলে খেলা শুরু করার পর থেকে কেএল রাহুলই ছিলেন দলের নেতা। তবে গত মরসুমে হায়দরাবাদ ম্যাচে হারের পর গোয়েন্কা প্রকাশ্যে ভর্ৎসনা করেন রাহুলকে। ওই ঘটনার পরেই বোঝা গিয়েছিল, রাহুলের দল ছাড়া সময়ের অপেক্ষা। সেটাই হয়েছে। গত বছর মহানিলামে রেকর্ড ২৭ কোটি টাকা দিয়ে ঋষভকে কিনেছিল লখনউ। সোমবার তাঁকেই অধিনায়ক হিসাবে বেছে নেওয়া হল।
পছন্দের ১৭ নম্বর জার্সিই নতুন দলে পাচ্ছেন পন্থ। তাঁর নাম লেখা জার্সিতে খোদাই করা রয়েছে ‘ক্যাপ্টেন’ শব্দটিও। পন্থকে পাশে নিয়ে সেই জার্সি প্রকাশ্যে আনেন গোয়েন্কা এবং দলের মেন্টর জ়াহির খান।
দায়িত্ব নিয়ে পন্থ বলেছেন, “আমার উপরে আস্থা রাখার জন্য সঞ্জীব স্যর, জ়াক ভাইকে ধন্যবাদ। লখনউয়ের হয়ে সব সময় ২০০ শতাংশ দেওয়ার চেষ্টা করব।”
দিল্লিতে খেলার সময় শেষ তিন বছর অধিনায়ক ছিলেন পন্থই। ২০২৩ সালে চোটের কারণে খেলতে পারেননি। ফলে লখনউ যে অধিনায়ক হিসাবে তাঁর নামই ঘোষণা করত তা নিয়ে সন্দেহ থাকার কথা ছিল না। তবে নিকোলাস পুরানেরও অধিনায়ক হওয়ার সম্ভাবনা ছিল। তাঁকে টেক্কা দিয়েছেন পন্থ।
আইপিএলে প্রথম দু’বছর প্লে-অফের যোগ্যতা অর্জন করলেও গত মরসুমে প্রথম চারে শেষ করতে পারেনি তারা। গত বছর ৮ মে আইপিএলে খেলা ছিল হায়দরাবাদ এবং লখনউয়ের। সেই ম্যাচে আগে ব্যাট করে ১৬৫/৪ তোলে লখনউ। জবাবে ৯.৪ ওভারে কোনও উইকেট না হারিয়ে জয়ের রান তুলে নিয়েছিল হায়দরাবাদ। অভিষেক শর্মা এবং ট্রেভিস হেডের দাপটে জিতেছিল তারা।
ম্যাচের পরেই সঞ্জীব নেমে এসেছিলেন মাঠে। বাউন্ডারির ধারে দাঁড়িয়ে রাহুলকে হাত নেড়ে নেড়ে অনেক কিছু বোঝাতে থাকেন। তাঁর আচরণ দেখেই বোঝা যাচ্ছিল দলের এই হারে তিনি খুশি নন। কিছু কিছু ক্রিকেটারের দিকে হাত দেখিয়ে ইঙ্গিত করতে থাকেন সঞ্জীব। তাঁর গলার স্বরও যে বেশ উঁচু ছিল, সেটাও বোঝা গিয়েছে ভিডিয়ো দেখে।
সঞ্জীবের দাপটের সামনে রাহুল কিছু বলতেই পারেননি। তিনি চুপচাপ মাথা নিচু করে দাঁড়িয়েছিলেন। সঞ্জীবের কথা শুনছিলেন। পরে তৎকালীন কোচ জাস্টিন ল্যাঙ্গারকেও বেশ কিছু কথা বলেছিলেন সঞ্জীব। সেই ভিডিয়ো সমাজমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ামাত্রই সমালোচনার ঝড় বয়ে গিয়েছিল।
ভারতীয় দলের একজন ক্রিকেটারের প্রতি দলমালিকের এমন আচরণে খুশি হতে পারেননি সমর্থকেরা। তাঁদের দাবি ছিল, দলের হারে মালিকের রাগ হতেই পারে। সেটা তো সাজঘরে ফিরেও বোঝানো যেত। মাঠের মধ্যে সবার সামনে এ ভাবে রাহুলকে ‘অপমান’ করার যৌক্তিকতা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছিলেন তাঁরা।