কলকাতা হাই কোর্ট ফাইল চিত্র
১০০ দিনের কাজে মুর্শিদাবাদের পঞ্চায়েতে প্রায় কোটি টাকার দুর্নীতির অভিযোগ। ওই ঘটনার তদন্ত করতে আদালত বান্ধব নিয়োগ করল কলকাতা হাই কোর্ট। বৃহস্পতিবার হাই কোর্টের ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি রাজেশ বিন্দল ও রাজর্ষি ভরদ্বাজের ডিভিশন বেঞ্চে এক জনস্বার্থ মামলার শুনানি ছিল। সেখানেই মুর্শিদাবাদের পঞ্চায়েতে এক দুর্নীতির তদন্ত করতে আদালত-বান্ধব নিয়োগের কথা জানান বিচারপতিরা। এই কাজে নিয়োগ করা হয়েছে আইনজীবী কল্লোল বসুকে। আগামী ৩১ অগস্টের মধ্যে তদন্ত করে তাঁকে রিপোর্ট জমা দিতে হবে আদালতে।
মুর্শিদাবাদের সুতি ২ নম্বর ব্লকের কাশিমনগর গ্রাম পঞ্চায়েতে ১০০ দিনের কাজে গ্রামে পাকা রাস্তা নির্মাণের জন্য কয়েকটি টেন্ডার ডাকা হয়। অভিযোগ, তৃণমূলের গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধানের আত্মীয় মাসরুর রহমান নামে এক ব্যক্তি অনেকগুলি বরাত পান। তার জন্য সরকারি অর্থও বরাদ্দ হয়। কিন্তু পরে দেখা যায় ওই টেন্ডার মোতাবেক কোনওটিতেই কাজ সম্পূর্ণ হয়নি। অথচ খাতায়কলমে হিসেব রয়েছে তার ঠিক উল্টোটা। অর্থাৎ ২০১৯-২০ আর্থিক বছরে গ্রামীণ পাকা রাস্তা নির্মাণের জন্য অর্থ খরচের কথা বলা হলেও, বাস্তবে উপযুক্ত রাস্তা তৈরিই হয়নি। এরই প্রেক্ষিতে জনস্বার্থ মামলা দায়ের হয় উচ্চ আদালতে।
বৃহস্পতিবার ওই মামলার শুনানিতে আইনজীবী মহম্মদ সারওয়ার জাহান আদালতকে জানান, ১০০ দিনের কাজে গ্রামীণ রাস্তা তৈরির কথা বলা হলেও, তা হয়নি। এই কাজে প্রায় ৯৪ লক্ষ টাকার দুর্নীতি হয়েছে। এর পরই ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ আদালত-বান্ধব নিয়োগের কথা জানায়। সেই মতো আগামী ২১ অগস্ট আইনজীবী কল্লোল বসুর এই ঘটনার তদন্ত করতে ওই এলাকায় যাওয়ার কথা। তাঁর সঙ্গে থাকার কথা রাজ্যের পঞ্চায়েত দফতরের এক অফিসারেরও। তাঁদেরকে পর্যাপ্ত নিরাপত্তা দিতে জেলার পুলিশ সুপারকে নির্দেশ দিয়েছে আদালত। এ প্রসঙ্গে কল্লোল বলেন, "আদালত বান্ধব হিসেবে বিচারপতিরা আমাকে নিয়োগ করেছেন। তাঁদের সেই নির্দেশ মতো আমি কাজ করব। সত্যিই কোনও দুর্নীতির হয়েছে কি না তা খতিয়ে দেখে আদালতে রিপোর্ট জমা দেব।" এই মামলার পরবর্তী শুনানি ৩১ অগস্ট।
আইনি পরিভাষায় কোনও ঘটনার বিচারবিভাগীয় তদন্ত করতে আদালত নিজেই কোনও প্রতিনিধি নিয়োগ করে তখন তাঁকে বলা হয় আদালত-বান্ধব। এ ক্ষেত্রেও ওই প্রতিনিধি সংশ্লিষ্ট এলাকায় গিয়ে সরজমিনে খতিয়ে দেখে রিপোর্ট তৈরি করবেন। সেই রিপোর্টের উপর ভিত্তি করেই বিচার করবে আদালত।