Teacher Recruitment Scam Case

নিয়োগ দুর্নীতিতে হন্যে হয়ে খুঁজছে ইডি, সেই ‘আসল লোক’-এর খোঁজ পেয়ে গিয়েছেন, দাবি তাপসের

কুন্তল ঘোষ দাবি করেছিলেন, শিক্ষক নিয়োগ ‘দুর্নীতি’কাণ্ডের ‘আসল লোক’ এই গোপাল দলপতি। তাঁর বিরুদ্ধে টাকা নেওয়ারও অভিযোগ করেন কুন্তল। তার পর থেকেই তাঁকে হন্যে হয়ে খুঁজছে ইডি।

Advertisement
নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ৩০ জানুয়ারি ২০২৩ ১৮:০৯
Image of Tapas Mandal name written in ED chargesheet

তৃণমূল বিধায়ক মানিক ভট্টাচার্যের ‘ঘনিষ্ঠ’ তাপস মণ্ডলের দাবি, তিনি গোপাল দলপতিকে খুঁজে পেয়েছেন। — ফাইল ছবি।

শিক্ষক নিয়োগে ‘দুর্নীতি’কাণ্ডে নয়া মোড়। তৃণমূল বিধায়ক মানিক ভট্টাচার্যের ‘ঘনিষ্ঠ’ তাপস মণ্ডলের দাবি, তিনি গোপাল দলপতিকে খুঁজে পেয়েছেন। গ্রেফতার হওয়া তৃণমূল যুবনেতা কুন্তল ঘোষ দাবি করেছিলেন, শিক্ষক নিয়োগ ‘দুর্নীতি’কাণ্ডের ‘আসল লোক’ এই গোপাল। তাঁর বিরুদ্ধে টাকা নেওয়ারও অভিযোগ করেন কুন্তল। তার পর থেকেই তাঁকে হন্যে হয়ে খুঁজছে ইডি। যদিও তাপসের এই দাবি নিয়ে ইডি জানিয়েছে, তারা কিছু জানে না।

সোমবার তাপস জানিয়েছেন, পূর্ব মেদিনীপুরের বাসিন্দা গোপালের সঙ্গে যোগাযোগ করা গিয়েছে। তাঁকে সল্টলেক সিজিওতে ইডি দফতরে হাজিরা দেওয়ার জন্য রাজি করাচ্ছেন বলেও দাবি করেন তিনি। তাপসের কথায়, ‘‘উনি ভয় পাচ্ছেন। আমি ওঁকে বলেছি, ভয় না পেয়ে ইডি দফতরে যান, যা বক্তব্য রয়েছে, জানান।’’ যদিও ইডি সূত্রে খবর, তারা এখনও পর্যন্ত গোপালের কোনও হদিস পাননি। তাঁর খোঁজ চলছে।

Advertisement

এর আগে আর্থিক দুর্নীতিকাণ্ডে নাম জড়িয়েছিল গোপালের। তার পর থেকে তিনি কোথায় রয়েছেন, তা নিয়ে ধোঁয়াশা তৈরি হয়। শিক্ষক নিয়োগে ‘দুর্নীতি’কাণ্ডে নাম জড়ানোর পর থেকে ইডি তাঁর খোঁজ খবর শুরু করে। গোপাল জেলে রয়েছেন কি না, তা-ও জানার চেষ্টা করেন তদন্তকারীরা। জানা গিয়েছিল, বেআইনি অর্থলগ্নি মামলায় তিনি তিহাড় জেলে বন্দি। অতি সম্প্রতি সেই গোপালের খোঁজ করতে গিয়ে জানা গিয়েছে, তিনি সেখানে নেই। অনেক দিন আগেই নাকি জামিনে মুক্তি পেয়েছেন।

শুক্রবার বিধাননগর হাসপাতালে মেডিক্যাল পরীক্ষার জন্য নিয়ে যাওয়া হয়েছিল কুন্তলকে। সেখানে থেকে সিজিও কমপ্লেক্সে ইডির দফতরে ফেরার সময় কুন্তল বলেন, ‘‘অনেক কোটি টাকা নিয়েছে ওরা। আমার কাছ থেকে জোর করে নিয়েছে।’’ তাপসের ‘ঘনিষ্ঠ’ গোপাল সকলের হয়ে টাকা নিয়েছিলেন বলেও দাবি করেন কুন্তল। তাঁর কথায়, ‘‘গোপাল দলপতি সব থেকে ‘মেন’ (আসল)। সকলের হয়ে টাকা নিয়েছে।’’

শিক্ষক নিয়োগে ‘দুর্নীতি’কাণ্ডে উঠে এসেছে একের পর এক নাম। প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের প্রাক্তন চেয়ারম্যান মানিককে জেরা করে উঠে এসেছিল তাঁর ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত তাপসের নাম। মানিককে গ্রেফতার করা হলেও তাপসকে গ্রেফতার করা হয়নি। যদিও ইডির চার্জশিটে নাম রয়েছে তাঁর। এর পর তাপসকে জেরা করেই তৃণমূল যুবনেতা কুন্তল এবং শান্তনু বন্দ্যোপাধ্যায়ের নাম উঠে আসে। গত ২১ জানুয়ারি গ্রেফতার হন কুন্তল। রিমান্ড কপিতে ইডি দাবি করেছে, তাপস ১৯ কোটি টাকা দিয়েছেন এই কুন্তলকে।

গোপালের নাম উঠে এসেছে কুন্তলকে জেরা করেই। ইডির জেরায় তাপস দাবি করেন, তিনিই কুন্তলের সঙ্গে গোপালের পরিচয় করিয়ে দিয়েছিলেন। তিনি বলেছিলেন, ‘‘প্রার্থীরা অফিসে টাকা দিয়ে যেত। আমার নির্দেশ ছিল, ওই টাকা কুন্তলকে দিয়ে দেবে। আমার নির্দেশে, আমি কুন্তলকে রেফার করেছি এটা তো অস্বীকার করছি না। আমার কথাতেই তো টাকাটা দিয়েছে। চাকরির টাকা আমার কথায় সংগ্রহ করা হয়েছে। কিন্তু নিয়েছে কুন্তল।’’ তিনি আরও দাবি করেন, ‘‘আমার অফিসে কলেজের কালেকশন করত গৌতম নামের একটি ছেলে। বাকি তাপস মিশ্র এবং গোপাল দলপতি কালেকশন করত।’’ কুন্তলের সই করা প্রমাণ রয়েছে বলেও দাবি তাপসের। এখন তিনি দাবি করেছেন, গোপালকে খুঁজে পেয়েছেন।

আরও পড়ুন
Advertisement